• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০০:০১

জয়ের লক্ষ ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশের

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল : চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটের সুবিধা ভারত নিতে পারলেও বাংলাদেশ পারেনি। তাইতো পরাজয় দিয়ে সিরিজ শুরু করে। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫০ রানে অলআউট হওয়ার পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ২২ ডিসেম্বর সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হচ্ছে ঢাকা মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ জয়ে চোঁখ রেখেই খেলতে নামছে। 
 
চট্টগ্রাম টেস্টে একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ। ভারতকে চাপে রাখার দারুণ সুযোগ পেয়েও একাধিক ক্যাচ মিসে পথ হারায় স্বাগতিকরা। ভালো হয়নি দলের প্রথম ইনিংসের ব্যাটিংও। ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ প্রথম ইনিংসেই খুঁইয়ে ফেলে বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম পর্ব শেষে ঢাকায় টেস্ট শুরুর অপেক্ষা। আজ আবার পাঁচদিনের লড়াইয়ে মাঠে নামছে দুই দল। এবার ভুল করতে চায় না বাংলাদেশ। সুযোগগুলো লুফে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ক্রিকেটারদের। ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা সিরিজে জয় তুলে সমতা ফেরাতে চায় বাংলাদেশ। 
 
দলের প্রতিনিধি হয়ে ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড। তার কণ্ঠে ছিল আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি, ‘দ্বিতীয় ম্যাচে আমরা জিততে চাই। আমরা ভারতের বিপক্ষে খেলছি না অন্য কারও সঙ্গে, সেটা আসলে আমাদের সাফল্যের পরিকল্পনা স্থির করবে না। আমরা জানি ১৫০ রান করে ম্যাচ জেতা সম্ভব নয়। আমরা দলের ভেতরে জুটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কথা বলেছি। আমাদেরকে আরও স্থির হতে হবে যেটা আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে দেখিয়েছি। আমরা জিততে মুখিয়ে আছি। আমি সহ দলের অনেকেই জয় নিয়ে বাড়ি ফিরে বিলম্বিত ক্রিসমাস পালন করতে চাই।’ চট্টগ্রামে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ভালো করতে না পারলেও দ্বিতীয় ইনিংসে লড়াই করেছে। জাকিরের সেঞ্চুরি ও সাকিবের ৮৪ রানে চতুর্থ ইনিংসে ৩২৪ রান করে বাংলাদেশ। ইনফর্ম লিটন ও অভিজ্ঞ মুশফিক জ্বলে উঠতে না পারলেও ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। 
 
বোলিং কোচ ডোনাল্ডের মতে, দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ যেভাবে লড়াই করেছে, জাকিরের ব্যাটে জবাব দিয়েছে সেটাই হতে পারে ঢাকায় সাফল্যের নীলনকশা। তার ভাষ্য, ‘দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা যেভাবে খেলেছি সেটাই হতে পারে সাফল্যের নীলনকশা।’ জাকিরের ব্যাটিংয়ের উদাহরণ দিয়ে তিনি যোগ করেন, ‘আমাদের তরুণ ক্রিকেটার দলের অনেককেই চমকে দিয়েছে। আমি প্রথমবার জাকিরকে দেখেছি। তার মনোভাব, সাহস ও আক্রমণাত্মক মানসিকতা আমার মনে ধরেছে। সে এখানে খেলতে এসেছে এবং সে দেখিয়েছে ভালোমানের বোলারদের বিপক্ষেও সে আগ্রাসী খেলতে পারে।’ প্রথম ইনিংসেই ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে জোর দিলেন ডোনাল্ড, ‘আপনাকে সুযোগগুলো অবশ্যই লুফে নিতে হবে। আপনি টস জিতলেন, যদি ব্যাটিংয়ের সুযোগ পান, ৩৫০-৩৮০ রান করতে হবে। প্রথম ইনিংসের মূল্য কতটা, তা নিশ্চয়ই আমরা বুঝতে পারছি। উইকেট শুষ্ক’। 
 
সাবেক এই প্রোটিয়া পেসার আরও বলেন, ‘এজন্য আপনাকে অবশ্যই প্রথম ইনিংসে ভালো অবস্থানে থাকতে হবে। প্রথম ইনিংসই আপনাকে টেস্ট ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে নেওয়ার সুযোগ। আমরা যদি আগে বোলিং করি, আমরা দেখিয়েছি ভারতের বিপক্ষে ৪৮ রানে ৩ উইকেট নেওয়ার পর্যায়ে ছিলাম। আমরা বেশ কিছু কঠিন সুযোগ হাতছাড়া করেছি। কিন্তু এ পর্যায়ে আমরা এগুলো হাতছাড়া করতে পারি না।’ তবে ঢাকা টেস্ট শুরুর আগে ব্যাটিং নিয়ে হতাশ প্রকাশ করেছেন রাসেল ডোমিঙ্গো। চট্টগ্রামে প্রথম তিন দিনেই ম্যাচ নিজেদের করে নিয়েছিল ভারত। শেষের  দুদিন ছিল আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। চতুর্থ দিন খানিকক্ষণ লড়লেও পঞ্চম দিনের শুরুতে ৩২৪ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। ১৮৮ রানে হারে টাইগাররা। ভারতের প্রথম ইনিংসে করা ৪০৪ রানের জবাব দিতে নেমে টাইগাররা ১৫০ রানে। ফলোঅনে পাঠানোর সুযোগ থাকলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে ৫১৩ রানের বিশাল লক্ষ্য দেয় সফরকারিরা। 
 
তৃতীয় দিন বিকালে এবং চতুর্থ দিনে লড়াই করে টাইগাররা। জাকির হাসানের অভিষেক সেঞ্চুরিতে দারুণ একটি আশা দেখিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। দলের আর কোনো ব্যাটারই তাকে সমর্থন দিতে পারেনি। চট্টগ্রাম টেস্টের শেষ দিনের মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই টাইগারদের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন। তার চোখেমুখে রাজ্যের অন্ধকার। শেষ দিনের খেলা শেষ ৪৯ মিনিটেই। তার চোখেমুখে স্পষ্ট হতাশা।  কণ্ঠেও ঝড়লো তা। বিশেষ করে এমন হতশ্রী ব্যাটিং মানতেই পারছেন প্রধান কোচ। তিনি বলেন, ‘আমি খুবই হতাশ। ছেলেদের তা বলেছিও। প্রথম ইনিংসে সত্যি বলতে, আমার হৃদয় ভেঙে গেছে কিছুটা। আমি জানি, ওরা চেষ্টা করে যাচ্ছে। অনেক কষ্ট করছে। যেমন, ইবাদত ফিল্ডিং নিয়ে কঠিন পরিশ্রম করছে। কিন্তু মাঠে গিয়ে ক্যাচ ছেড়ে দিচ্ছে। তারা সবাই অনুশীলনে চেষ্টার কমতি রাখছে না, কিন্তু মাঠে গিয়ে চাপের মধ্যে পারছে না, কোচ হিসেবে এটা আমার জন্য হতাশাজনক। ছেলেদের জন্যই হতাশার এটি।’ আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া ঢাকা টেস্টের আগেও ব্যাটিং থাকছে বড় চিন্তার নাম। চট্টগ্রামের সাগরিকার উইকেট বরারবরই ব্যাটিং স্বর্গ। আর এই ভেন্যু টাইগারদের জন্য পয়মন্তই। এবার চট্টগ্রাম বলেই হয়তো ব্যাটিংয়ের এই ধস মানা কঠিন হচ্ছে সবার। তবে উইকেট নয়, এই ব্যর্থতার দায় ব্যাটসম্যানদেরই দিয়েছেন রাসেল ডোমিঙ্গো। 
চট্টগ্রাম টেস্টে বোলিয় না করে শুধু ব্যাটিং করেছিলেন সাকিব আল হাসান। দ্বিতীয় টেষ্টে বোলিং করলে বাদ যাবে কে সেই আলোচনা হচ্ছে। ঢাকা টেস্টের আগে গত পরশু প্রথম দিনের অনুশীলনে বোলিং করতে দেখা যায়নি সাকিবকে। কিপিংয়ে মনোযোগী দেখা গেছে লিটন দাসকে। সবার সঙ্গে ফুটবল খেললেও গ্লাভস হাতে মাঠে নামার তাড়া দেখাননি সোহান। গা গরম করা শেষে তিন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও নাসুম আহমেদকে নিয়ে সেন্টার উইকেটে কিপিং অনুশীলনে নেমে পড়েন লিটন। মিরপুর টেস্টে হয়তো লিটনই থাকবেন উইকেটের পেছনে। চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম দিনের পর বোলিং করেননি সাকিব। ম্যাচ শেষে রাসেল ডমিঙ্গো বার্তা দিয়ে রাখেন, মিরপুর টেস্টে প্রয়োজনে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলানো হবে সাকিবকে। বোলিং বিভাগে শক্তি বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়ে রাখেন বাংলাদেশ কোচ। 
 
এদিকে চট্টগ্রাম টেষ্টের মতো ঢাকা টেস্টেও নেই রোহিত শর্মা। বাংলাদেশে আর আসতে হচ্ছে না ভারতের নিয়মিত অধিনায়ককে। ভারতের অধিনায়ক ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ফিল্ডিংয়ের সময় ব্যথা পেয়েছিলেন বুড়ো আঙুলে। হাড় সরে গিয়েছিল আঙুলের, এই অবস্থাতেও ইনজেকশন নিয়ে, সেলাই নিয়ে অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলে ভারতকে প্রায় জিতিয়েই দিয়েছিলেন রোহিত। পারেননি মাত্র ৫ রানের জন্য, এরপর আর খেলাও হয়নি রোহিতের। লোকেশ রাহুলের হাতে দায়িত্বভার দিয়ে রোহিত চিকিৎসা নিতে ফিরে যান দেশে। খেলতে পারেননি তৃতীয় ওয়ানডে আর প্রথম টেস্টে। এরপর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) জানিয়েছে, দ্বিতীয় টেস্টের জন্য রোহিতকে আর বাংলাদেশে পাঠাবে না তারা। লোকেশ রাহুলই নেতৃত্ব দেবেন দ্বিতীয় টেস্টে, রোহিত থাকবেন পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায়। এটা বাংলাদেশের জন্য স্বস্থির খবর।
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।