• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০১:২৬

বিপিএলে এবার ফিক্সিংয়ের থাবা?

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল : নানা কারণেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ক্রিকেটের এবারের আসরটি আলোচিত। বিশেষ করে এক সাকিব আল হাসানই যেন সব আলো কেড়ে নিয়েছেন। মাঠের পাফরম্যান্স যেমন তেমন, খেলার বাইরের ঘটনাই বেশি আলোচনায় নিয়ে এসেছে এই বাহাতি অলরাউন্ডারকে। ঢাকা পর্ব শেষ হতেই এলো এক হতাশাজনক খবর। ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব এসেছে সিলেট অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার কাছে। তিনি বিলম্ব না করে বিষয়টি আকসু, বিসিবি ও বিপিএল গর্ভনিং কাউন্সিলকে জানিয়েছেন। চলতি বিপিএলে দারুণ ছন্দে আছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। মাশরাফি মর্তুজার নেতৃত্বে চার ম্যাচের সবকটিতে জিতে পয়েন্ট টবিলের শীর্ষে রয়েছে। সেই সিলেটকে প্রস্তব দেওয়া হয়েছে ফিক্সিংয়ের। সিলেট ছাড়াও একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজিকে দেওয়া হয়েছে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব। তবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কারণ ফিক্সিং ঠেকাতে মাঠে কাজ করছে দুর্নীতিবিরোধী ইউনিট (এসিইউ)। সিলেটকে দেওয়া ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে উল্লেখ করেছে বিসিবি। 
 
বিসিবির পরিচালক ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ডা. ইসমাইল হায়দার মল্লিক জানিয়েছেন, ‘যতদুর জেনেছি, আসলে এটা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু হয়নি। সিলেট স্ট্রাইকার্স মৌখিকভাবে আমাদের অ্যান্টি করাপশন ইউনিটকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে। এটা রিপোর্টেড কিছু নয়। প্রতি দুই-তিন খেলা পরপর দুই-একটা করে আমরা রিপোর্ট পাই। ওগুলো সিরিয়াস কিছু নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এমন রিপোর্ট পেলে অ্যান্টি করাপশন তখন নজরদারি বাড়ায়। সত্যিকার অর্থেই প্রস্তাব এলে তখন অ্যান্টি করাপশন ইউনিট নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি এটা নিয়ে তদন্ত করে। তো এখানে এমন কিছু হয়নি। আর এটা যদি ক্লাসিফাইড ইনফরমেশন হয়, পুরো তদন্ত শেষ না করে অ্যান্টি করাপশন আমাদের কিছু বলবে না।’ এদিকে দলের সবাই জানে কী করণীয়, ফিক্সিং ইস্যুতে জানিয়েছেন মাশরাফি। দল হিসেবে সিলেটকে থামানোর যেন কোনো দলই নেই এবারের বিপিএলে।
 
মাঠের খেলায় ছুটতে থাকা সিলেটে হঠাৎ করেই ফিক্সিংয়ের কালো ছায়া। সিলেটের এক পরিচালক নাকি ইতোমধ্যেই প্রস্তাব পেয়েছেন ম্যাচ পাতানোর জন্য। এমন গুঞ্জনে এখন সরগরম মিরপুরের ক্রিকেটপাড়া। এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই সিলেটের পক্ষ থেকে বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিটের (আকসু) প্রতিনিধিকে জানানো হয়েছে বলেও জান গেছে। মঙ্গলবার ঢাকা ডমিনেটরসকে হারিয়ে টানা চতুর্থ জয় তুলে নেওয়ার পর এই বিষয়ে কথা বলেছেন সিলেটের অধিনায়ক মাশরাফি। আকসুর পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেন, ‘এখানে যারা খেলছে, এমন একজন প্লেয়ার বলতে পারবে না যে এ সম্বন্ধে জানে না। এখানে সাবধানতার কিছু নাই। যে জানে না বলবে, সেই মিথ্যা কথা (বলছে)। তাই না? তো এখানে সাবধানতার কিছু নাই।’ দেশসেরা এই অধিনায়ক আরও বলেন, ‘পরিচালককে বলেছে কি না, সে পরিষ্কারভাবে বলতে পারবো। আকসুকে যদি বলে না থাকে, তাহলে অন্য বিষয়। আর বললে খুব ভালো। তো স্বাভাবিক বিষয়, যদি তাদের কাছে কিছু এসে থাকে, আকসুকে বলবে। তবে আমার মনে হয় দলের সবাই জানে করণীয় কী।’
 
মূলত অচেনা ফোন থেকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার গুঞ্জন কয়েকদিন ধরেই শোনা গিয়েছিল। তবে অভিযোগ পায়নি বিসিবি। বিপিএল এলেই মাথাচাড়া দেয় ফিক্সিং ইস্যু। কখনও ক্রিকেটাররা বিসিবি অ্যান্টিকরাপশন ইউনিটের (এসিইউ) কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন সতর্কতার অংশ হিসেবে, কখনও ফ্র্যাঞ্চাইজি ম্যানেজমেন্টের সদস্যরাও এসিইউ কর্মকর্তাদের নিজেদের সন্দেহের কথা জানিয়ে রাখেন। সরাসরি বা পরোক্ষ অভিযোগ প্রতি টুর্নামেন্টেই ১০ থেকে ১২ জন সতর্কতার অংশ হিসেবে এসিইউকে সন্দেহভাজনদের নাম বলেন। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিকেরই মিডিয়াকে দেওয়া ভাষ্য এটি। যে কারণে বিপিএল ’গলার কাঁটা’ মনে করেন তাঁরা। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসিইউর কাছে লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে। এবারের বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফট শুরুর আগে থেকেই ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার অভিযোগ করেন একাধিক ক্রিকেটার। সেটাও আবার দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজির বিপক্ষে। বিপিএল মাঠে গড়ানোর পর মিরপুরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, সিলেট স্ট্রাইকার্সের একজন পরিচালকের কাছে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব এসেছে অচেনা ফোন নম্বর থেকে। 
 
বিসিবি কর্মকর্তারা এটাকে গুঞ্জন হিসেবেই দেখছেন। সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী জানান, তাঁরাও নানা মুখে সিলেটের দিক থেকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার অভিযোগের কথা শুনতে পাচ্ছেন। বিষয়টি বিসিবি এসিইউকে মৌখিকভাবে জানালেও লিখিত দেয়নি সিলেট। মৌখিত অভিযোগের ভিত্তিতেই বিসিবি এসিইউ ঘটনার সত্যতা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানায় বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ থেকে শুরু করে ঘরোয়া সব ধরনের ক্রিকেটেই বিসিবি এসিইউ কর্মকর্তারা দুর্নীতি এবং ফিক্সিং নিয়ে ক্রিকেটারদের সতর্ক করেন। অচেনা কারও কাছ থেকে ফোন পাওয়া বা সন্দেহজনক কিছু মনে হলে সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তাদের সতর্কতার অংশ হিসেবে জানাতে বলা হয়। ক্রিকেটার এবং কর্মকর্তারাও সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করছেন বলে জানান সিইও। সিলেটের অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, ‘অফিসিয়ালি এ ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। আপনাদের মতো আমরাও এদিক-ওদিক থেকে কথাটি শুনছি। এ ধরনের গুঞ্জন থাকতেই পারে। প্রথমত, অফিসিয়ালি রিপোর্ট না হলে কনসিডার করার সুযোগ নেই। দ্বিতীয়ত, রিপোর্ট হলে সেটা প্রকাশ করা যাবে না। তদন্ত হবে, নজরদারি হবে এবং বিভিন্ন চ্যানেলে উভয় পার্টিকে পর্যবেক্ষণ করবে এসিইউ। 
 
কারণ, যখন এ ধরনের অভিযোগ আসে, তখন দুটি পক্ষ হয়। একজন অভিযোগ করে অন্যজনের বিরুদ্ধে। তখন আমাদের নাম প্রকাশ করতে হবে। কিন্তু ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কারও নাম প্রকাশ করা যাবে না। আর সিলেটের ব্যাপারে যেটা জানতে চাচ্ছেন, সেটার কোনো লিখিত বা মৌখিক রিপোর্ট হয়নি। সবার মতো আমরাও এদিক-ওদিক থেকে বিষয়টি শুনতে পাচ্ছি।’
দেশকণ্ঠ/আসো
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।