• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১১:৪৫

বিপিএলে হতাশ করছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল : প্রত্যাশা পুরণ করতে পারছেন না জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। এক সাকিব আল হাসানের বাইরে যারা বিপিএল খেলছেন তারা চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ। জাতীয় দলের বাইরে থাকা মাশরাফি বিন মর্তুজা ও নাসির হোসেনের মতো ক্রিকেটার দারুণ খেলছেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নবম সংস্করণে এই তিনজনসহ কয়েকজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা ভালো খেললেও জাতীয় দলে নিয়মিত খেলোয়াড়েরা এখনো পারছেন না।
 
সাকিব ছাড়া তাঁদের কেউ-ই নেই সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ও উইকেটশিকারির সেরা পাঁচের তালিকায়। সে হিসেবে তবে এবারের বিপিএলে অভিজ্ঞদেরই দাপট দেখা যাচ্ছে। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক, উইকেটশিকার কিংবা ডিসমিসালে শীর্ষস্থান সব ৩০ বছরের ওপরের খেলোয়াড়দের দখলে। বিপিএলে আগের আট সংস্করণে চারবারই টুর্নামেন্টসেরা নির্বাচিত হয়েছেন সাকিব। এবারও দুর্দান্ত  তিনি। ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক ঢাকা পর্বের খেলা শুরুর আগে ৫ ইনিংসে করেছেন ২৭৫ রান, যেটি এই বিপিএলে এখনো সর্বোচ্চ। অসাধারণ ব্যাটিং গড়ের (৯১.৬৬) সঙ্গে ২০০ ছুঁই ছুঁই স্ট্রাইক রেট। ৬.০৪ ইকোনমিতে উইকেট ৩টি। 
 
নানা বিতর্কে নিজেকে জড়িয়ে গেল চার বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে রয়েছেন নাসির হোসেন। এই বিপিএলে দেখা মিলেছে ভিন্ন এক নাসিরকে। ঢাকা ডমিনেটরস ভালো না করলেও ব্যাটিং-বোলিংয়ে দুর্দান্ত এই অলরাউন্ডার। ৬ ইনিংসে ৮৯.৬৬ গড়ে টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬৯ রান নাসিরের। ৭.৩৫ ইকোনমিতে ৭ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় চারে ৩১ বছর বয়সী নাসির। ৩৭ পার করা ওয়াহাব রিয়াজ খুলনা টাইগার্সের হয়ে নিয়েছেন ১১ উইকেট। এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ উইকেট এই পাকিস্তানির। এছাড়া ৩৯ বছর বয়সী সিলেট অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ৬.৭৫ ইকোনমিতে ৯ উইকেট নিয়ে উইকেটশিকারে দুইয়ে। 
 
স্পিনার হিসেবে জাতীয় দলের হয়ে কখনো খেলা হয়নি তানভীর ইসলামের। ৪ ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বাঁহাতি স্পিনার। জাতীয় দলে ক্রিকেটাররা নিয়মিত আলো না ছড়াতে পারলেও তরুণ ক্রিকেটাররা বিপিএলে বেশ নজর কাড়ছেন। এর মধ্যে আছেন সিলেটের তৌহিদ হৃদয়। ৩ ইনিংসে ৬৫ গড়ে তাঁর রান ১৯৫। চোটে পড়ে বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্ব খেলতে পারেননি তিনি। রংপুরের হয়ে তরুণ পেসার রবিউল হক নিয়েছেন ৭ উইকেট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অসাধারণ ছন্দে থাকা লিটন দাস চট্টগ্রাম পর্বের মাঝামাঝি সময়ে জ্বলে উঠেছেন। ঢাকায় প্রথম পর্বে ভালো করলেও নাজমুল হোসেন শান্ত ভালো করতে পারেননি চট্টগ্রামে। শুরুতে রান না পেলেও ছন্দে ফেরার আভাস দিয়েছেন আফিফ হোসেন। 
 
এর বাইরে জাতীয় দলে নিয়মিত থাকা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, এনামুল হক বিজয়, সৌম্য সরকার, মুনিম শাহরিয়ার, ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বি ও সাব্বির রহমান রুম্মানরা এখনো নিজেদের ছায়া হয়ে আছেন। এখনো ইবাদত হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমানদের সেরাটা দেখার অপেক্ষায় বিপিএল। এখনো অনেক তারকাকে তাই ম্লানই বলতে হবে। টি-টোয়েন্টিতে বাদ পড়া ক্রিকেটারদের জাতীয় দলে ফেরার বড় মঞ্চ বিপিএল। এখানে পারফর্ম করলে পুরস্কার হিসেবে জাতীয় দলে সুযোগ মেলে তাদের। নতুন মুখের ভিড়ে বড় চ্যালেঞ্জ থাকে বাদ পড়াদের। অথচ এবারের বিপিএলের ঢাকা-চট্টগ্রাম পর্বের খেলা শেষ হলেও তেমন কাউকে চোখে পড়েনি। নতুন তো আসেনইনি, জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ারাও নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। ব্যাটিং-বোলিংয়ে পাঁচে নেই মোহাম্মদ নাঈম, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান কিংবা সাইফউদ্দিন, এবাদত হোসেন ও মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধরা। সেরা দশের তালিকায় তাদের খুঁজে পাওয়া কঠিন। 
 
উইকেট শিকার কিংবা ইকোনমি রেটেও বেশ পিছিয়ে তারা। কিছুদিন আগে বোলারদের উন্নতি না দেখে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায় টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিবকেও। পর্যন্ত ৬ ম্যাচে ৬.৭৫ ইকোনমিতে ৯ উইকেট নিয়ে বোলারদের তালিকার দুইয়ে মাশরাফী। বাকি ১০ তরুণের মধ্যে আছেন একমাত্র হাসান মাহমুদ। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে দুর্দান্ত মাশরাফী। তবে তার এমন পারফরম্যান্স যতটা ইতিবাচক, ততটা শঙ্কাও বলে মনে করেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। মিরপুরে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে আশরাফুল বলেন, ‘অঅমার কাছে মনে হয় মাশরাফির পারফরম্যান্স একদিক থেকে ইতিবাচক, আরেকদিক থেকে মনে হয় আমরা উন্নতি করছি কিনা? কারণ, সে পাওয়ার প্লেতে ৩ ওভার বল করছে ১১০ পেসে, চমৎকার লাইন লেংথে বল করছে। কিন্তু আমাদের যারা টপ প্লেয়ার যেমন সৌম্য সরকার ওর বলে আউট হচ্ছে, পাওয়ার হিট করতে পারছে না। ওই জায়গায় চিন্তা হচ্ছে, আসলে আামাদের খেলায় উন্নতি হচ্ছে কিনা। 
 
সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেট হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের প্রাপ্তি এমনিতেই নেই। ওয়ানডে দল যতটা তৈরি, টি-টোয়েন্টি দল ততটাই এলোমেলো। এখনো একটা নির্দিষ্ট দল দাঁড় করাতে পারেননি বিসিবির নির্বাচকরা। সৌম্য, নাঈম, সাব্বির, তিনজনই জাতীয় দলের নিয়মিত পারফরমার। কিন্তু সর্বশেষ কয়েক বছর ধরে নিজেদের হারিয়ে খুঁজছেন তারা। তিন বছর পর এশিয়া কাপে জাতীয় দলে ফিরে সাব্বির করেছিলেন ৫, ০, ১২ ও ১৪ রান। এক বছর পর ফেরা সৌম্য করেন ২৩, ৪, ১৪, ১৫, ০ ও ২০ রান। দুজনই খেলেছিলেন টপঅর্ডারে। কিন্তু তাদের পারফরম্যান্স সন্তোষজনক ছিল না। এতে ফিরেই বাদ পড়েন সাব্বির। সৌম্যও আছেন সে তালিকায়। জাতীয় দলের পারফরম্যান্স না হয় বাদ থাকল। বিপিএলেও যেন একই হাইলাইটস দেখাচ্ছেন তারা। খুলনা টাইগার্সের হয়ে তিন ম্যাচে ব্যাটিং করে সাব্বির করেন মোটে ২২ রান। ঢাকার ওপেনার সৌম্য ৬ ম্যাচে করেছেন মাত্র ৪২ রান। আর রংপুরের হয়ে নাঈম ৫ ম্যাচে করেছেন ৮৪ রান। 
 
এ যখন সিনিয়রদের অবস্থা, তখন আশপাশেও নেই পাইপলাইনে থাকারা। এবারের বিপিএলে তুলনামূলক ভালো উইকেট পাচ্ছে দলগুলো। ঢাকা-চট্টগ্রামে বেশ কয়েকটি ম্যাচে দুইশর বেশি পুঁজিও বলে সে কথা। সাকিব, নাসিররা ভালো করলেও সৌম্য-সাব্বিরদের লড়াই করা নিয়ে আশরাফুল বলেন, যে ধরনের উইকেটে আমরা খেলছিলাম, আমি আশা করছিলাম আমাদের খেলোয়াড়রা আরও ভয়ডরহীন খেলবে। বড় বড় ইনিংস ও ভালো স্ট্রাইকরেট ব্যাটিং করবে, সে জিনিসটা একটু মিসিং। সবকিছুর বাইরে তৌহিদ হৃদয়, রেজাউর রহমান রাজা, রবিউল ইসলাম কিংবা আল আমিনদের পারফরম্যান্স হয়তো কিছুটা স্বস্তি বয়ে দিতে পারে। তবে পাইপলাইনের ক্রিকেটারদের ব্যাটিং-বোলিং দুশ্চিন্তাই বয়ে দিচ্ছে। সেটা ঢাকা পর্বে বাড়বে না কমবে সেটাই দেখার বিষয়।
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।