• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১১:২৪

দেশিদের আলোয় উজ্জল এবারের বিপিএল

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল : বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স দিয়ে শেষ হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নবম আসর। ফাইনালে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৭ উইকেটে হারিয়ে চতুর্থ শিরোপা জিতেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। মাঠের ক্রিকেটে জাতীয় তারকাদের ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা হলেও অনেকেই নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন। সেখানেই সবার উপরের নামটি নাজমুল হোসেন শান্ত। ফাইনালে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৭ উইকেটে হারিয়ে চতুর্থবার শিরোপা জিতেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। তবে সিলেট হেরে গেলেও দলটির ওপেনার শান্ত জিতেছেন টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় আর সর্বোচ্চ রানের পুরস্কার। বাঁহাতি এই ওপেনার বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে বিপিএলের এক আসরে ৫০০ রানের মাইলফলকে ছুঁলেন। তার নাম লেখা হয়ে গেল বিপিএলের রেকর্ড বইয়ের এমন এক পাতায়, যেখানে আগে ছিলেন না লাল সবুজ দলের কেউ। ফাইনালে ইমরুল কায়েসের দলের বিপক্ষে অর্ধশত রান করার পথে এই কীর্তি গড়েন শান্ত। টুর্নামেন্টে ১৫ ম্যাটে মোট ৫১৬ রান করেছেন শান্ত। ৪ ফিফটিতে তার গড় ছিল ৩৯.৬৯। স্ট্রাইক রেট ১১৬.৭৪। সেরার তালিকায় ছিল সাকিব আল হাসান, তৌহিদ হৃদয়, রনি তালুকদার ও নাসির হোসেনের নামও। তবে সবাইকে হটিয়ে শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার জিতলেন শান্ত। মুশফিকুর রহিম টুর্নামেন্টে সেরা ফিল্ডারের পুরস্কার জিতেছেন। কুমিল্লার তানভীর ইসলাম ও রংপুর রাইডার্সের পেসার হাসান মাহমুদ যৌথভাবে শিকার করেন ১৭ উইকেট।
 
সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের ৫ লাখ ও ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের ১০ লাখ সহ সব মিলিয়ে ১৫ লাখ টাকার পুরষ্কার জিতেছেন শান্ত। নবম আসরের চ্যাম্পিয়ন হয়ে কুমিল্লা পেয়েছে ২ কোটি টাকা। অন্যদিকে রানার্সআপ দল সিলেট ১ কোটি টাকা আয় করেছে। ম্যান অব দ্যা ফাইনালের পুরষ্কার উঠেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ব্যাটার জনসন চার্লসের হাতে। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে তার শেষের ঝড়েই শিরোপা জেতার কাজটা সহজ হয় কুমিল্লার। তার হাতে উঠেছে ৫ লাখ টাকার ম্যান অব দ্য ফাইনালের পুরষ্কার। ৩ লাখ টাকার সেরা ফিল্ডারের পুরষ্কার জিতেছেন রানার্সআপ সিলেট স্টাইকার্সের উইকেট রক্ষক মুশফিকুর রহিম। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ১১ ডিসমিসাল মুশফিকের নামের পাশে। সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকের পুরষ্কার যৌথভাবে জিতেছেন কুমিল্লার বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম ও রংপুরের পেসার হাসান মাহমুদ ৫ লাখ টাকার পুরষ্কার। এবার একের পর এক প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ ম্যাচ উপহার দেওয়ায় এবারের বিপিএলকে বাকি আসরের তুলনায় এগিয়ে রাখছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হোসেন পাপন। বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের পাপন বলেন, বিপিএল নিয়ে আমরা কখনো লাভের কথা চিন্তা করিনি। যেহেতু আমাদের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগ হয় না। তাই চেষ্টা থাকে এটাই ভালোভাবে করার। বিপিএল আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। এবার একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। টুর্নামেন্টের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা যে চ্যালেঞ্জ হিসেবে এটা সুন্দরভাবে শেষ করল তাতে আমি খুবই খুশি। আমি ব্যক্তিগতভাবে যতগুলো খেলা দেখেছি, তাতে এবারের বিপিএল আরও বেশি ভালো লেগেছে’। 
 
অধিনায়ক হিসেবে এতদিন শতভাগ সফল ছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। পুরো ম্যাচে তাকে বল হাতে দেখা যায়নি। তাতে সমস্যাও ছিল না। ম্যাচটা একটা সময় পর্যন্ত তার দলের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। তবে রুবেল হোসেনের একটা ওভারেই সব লন্ডভন্ড হয়ে যায়। পরের ওভারে লুক উড এসেও কিছু করতে পারলেন না। ম্যাচটা ফসকে যায় হাত থেকে। শেষ ওভারে যখন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের প্রয়োজন মাত্র ৩ রান। তখন বল হাতে অধিনায়ক মাশরাফী বিন মর্তুজা এলেন। যেন হারিয়ে যেতে বসা সাম্রাজ্যটা বাঁচিয়ে রাখার শেষ চেষ্টা তার। বোলিংয়ে এলেও চিরচেনা লম্বা কিংবা মিডিয়াম পেসের রান-আপ নিতে দেখা গেল না। ছোট রান-আপে বল করলেন। মাশরাফি তার শেষ চেষ্টাটায় ব্যর্থ হয়ে হারিয়ে ফেললেন তার সাম্রাজ্য! হ্যা! সাম্রাজ্যই তো। বিপিএলের সম্রাট তো ম্যাশ নিজেই। বিপিএলের আগের আট আসরে তিনি চারটিতেই খেলেছেন ফাইনাল। সবগুলোতেই শিরোপা জিতেছেন অধিনায়ক হিসেবে। এটা ছিল তার পঞ্চম ফাইনাল। কিন্তু এবার হারতেই হতো।
 
বিপিএলে একজন অপয়া খেলোয়াড় রয়েছেন, তার নাম মুশফিকুর রহিম। যেন অপয়া, বিপিএলে তার দল কখনোই শিরোপা জেতেনি, জিততে পারেনি এবারও। মিষ্টার ডিপেন্ডেবলের অপেক্ষাটা ফুরালো না। টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন। এই সংস্করণের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট বিপিএলের শিরোপা ছুঁয়ে দেখার তার সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু সেটা আর তার ভাগ্যে জুটেনি। আরও একবার শিরোপা খুব কাছে গিয়েও তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তিনি। বিপিএলের ফাইনাল খেলতে মুশফিকের সাত আসর লেগে গিয়েছিল। নবম আসরে দ্বিতীয়বার খেলতে নেমেছিলেন, কিন্তু শিরোপা জেতা হয়নি তার। তিনি যেন হয়ে উঠেছেন অপয়া! যে দলে নাম লেখান, সেই দলই শিরোপা জেতে না। দুরন্ত রাজশাহী দিয়ে বিপিএলে নাম লিখিয়েছিলেন মুশফিক। সেই আসরে তার নেতৃত্বে দলটি খেলেছিল সেমিফাইনালে। পরের আসরে দল বদলালেন মুশফিক। টুর্নামেন্টে শেষ চারের নাম বদলে হয়েছে প্লে অফ। সিলেট রয়্যালসের হয়ে খেলে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান শিকারি হয়েছিলেন। 
 
তবে ফাইনাল খেলতে পারেননি, বিদায় নেন প্লে অফ থেকে। বিপিএলের ২০১৯ সালের আসরে খুলনা টাইগার্সের হয়ে তিনি প্রথমবার ফাইনালে উঠেন। কিন্তু তার ভাগ্যে শিরোপা জুটেনি। এবার টুর্নামেন্টে দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলতে নেমেছিলেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে। ব্যাট হাতে ৪৮ বলে ৫ চার আর ৩ ছক্কায় করেছেন ৭৪ রান। তাতে বড় লক্ষ্য পায় সিলেট। কিন্তু ৭ উইকেটের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তার দলকে। তাতে আবারও শিরোপা হারের স্বাদ পেতে হয়েছে মুশফিককে। দেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারের নাম মুশফিক। তার জন্য আক্ষেপের আরেক নাম বিপিএল। এই টুর্নামেন্টে তার শিরোপাটা এবারও যে জেতা হলো না। অপেক্ষাটা বেড়েছে আরও এক বছরের জন্য।
দেশকণ্ঠ/আসো
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।