• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৯:৩৪

বিশ্বকাপ ট্রফি জেতায় সবাইকে ছাড়িয়ে অস্ট্রেলিয়া

দেশকণ্ঠ প্রতিবেদন : ফুটবলে ব্রাজিলের মতোই ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান। দুটি দেশটি পাঁচটি করে বিশ্বকাপ জিতেছে। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আবার একটি শিরোপা জিতেছে অজিরা। সবকিছু মিলিয়ে এবার ছেলেদেরকেও টেক্কা দিয়েছে নারী ক্রিকেটাররা। পরিসংখ্যানের বিচারে একটি জাতি ২১টি ট্রফি জিতে ফেলেছে! এটাকে অনন্য সাধারন অর্জন বললে কোন অংশেই ভুল বলা হবেনা। দলটির জার্সির রংকে তাই অনেকেই ভালবাসা আর আক্ষেপের সুরে বলেন, আহা হলুদ। যেন চ্যাম্পিয়নের রং! একটি জাতি দিনের পর দিন ক্রিকেট বিশ্বকে শাসন করছে। রাজ করছে আইসিসির ইভেন্টগুলোতে। তবু ট্রফির ক্ষুধা এতটুকু কমছে না। দলটার নাম যে অস্ট্রেলিয়া! পেশাদারিত্ব যাদের রক্তে, হারার আগে যারা হার মানতে পারে না! রোববার মধ্যরাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৯ রানে হারিয়ে টানা তৃতীয়বার আর সবমিলিয়ে ষষ্ঠবার নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আট আসরে ছয়বারই চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। শুধু কি এটুকুই? নারী আর পুরুষ নেই। ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়া জাতিটার জন্মই যেন হয়েছে শিরোপা জেতার জন্য। একটি জাতি, তাদের নামের পাশে ২১টি আইসিসির ট্রফি। ভাবা যায়! অনেকের কাছেই বিষয়টাকে অবিশ্বাস্য মনে হবে।
 
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার ছয়টি ট্রফি হলো, ২০১০, ২০১২, ২০১৪, ২০১৮, ২০২০ আর ২০২৩ সালে। নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া শিরোপা জিতেছে একটি বেশি, ৭টি। আসরগুলো হলো, ১৯৭৮, ১৯৮২, ১৯৮৮, ১৯৯৭, ২০০৫, ২০১৩, ২০২২। অন্যদিকে পুরুষদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন পাঁচবার, ১৯৮৭, ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭ আর ২০১৫। পুরুষদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, ২০২১ সালে। আর আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে দুটি শিরোপা, ২০০৬ আর ২০০৯ সালে। অর্থাৎ নারীরা অস্ট্রেলিয়াকে আইসিসি শিরোপা এনে দিয়েছেন ১৩টি, পুরুষরা ৮টি! সবমিলিয়ে একটি জাতির ২১টি আইসিসি ট্রফি, যাদের ধারেকাছে নেই কেউ! এই পরিসংখ্যান দেখলে অনেকেরই চোঁখ কপালে উঠে যাবার জোগার হবে। অবিশ্বাস্য হলে এটাই সত্য। 
 
এদিকে অধিনায়ক হিসেবে ম্যাগ লেনিং নতুন এক ইতিহাস গড়েছেন। শুধু অস্ট্রেলিয়া নয়, পুরুষ কিংবা নারী ক্রিকেট, কোনো ইতিহাসেই ট্রফির বিচারে এখন লেনিংয়ের চেয়ে সফল অধিনায়ক নেই। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে টানা তৃতীয়বার আর সবমিলিয়ে ষষ্ঠবার নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এর আগে ৪টি আইসিসি ট্রফি জিতে যৌথভাবে স্বদেশি অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের সঙ্গে শীর্ষে ছিলেন লেনিং। পন্টিংয়ের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে-২০০৩ আর ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ এবং ২০০৬ আর ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। লেনিং এখন সবচেয়ে বেশি ৫টি আইসিসি ট্রফি জেতা অধিনায়ক। তার অধীনে অস্ট্রেলিয়া ২০১৪, ২০১৮, ২০২০ আর ২০২৩ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে। ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছে ২০২২ সালে। এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনি। তিনি অধিনায়ক হিসেবে আইসিসির ট্রফি জিতেছেন ৩টি। ধোনির নেতৃত্বে ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ আর ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতে ভারত। এ যেন একে অন্যকে ছাড়িয়ে যাওয়ার লড়াই। 
 
সেই লড়াইয়ে সবাইকে পেছনে ফেলে অস্ট্রেলিয়ার জয়জয়াকার চলছে। মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই আটবারে ছয়বারই চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসরই হয়েছে মোটে আটটি। তার মধ্যে ছয়বারই চ্যাম্পিয়ন হলো অস্ট্রেলিয়া। ভাবা যায়! এ নিয়ে টানা তৃতীয়বার আর সবমিলিয়ে ষষ্ঠবার চ্যাম্পিয়ন অসি মেয়েরা। ২০০৯ সালে প্রথমবার মাঠে গড়ায় নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। প্রথম আসরে স্বাগতিক ইংল্যান্ডই চ্যাম্পিয়ন হয়। এরপরই শুরু হয় অসি রাজত্ব। ২০১০, ২০১২, ২০১৪, টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া। ২০১০ সালে স্বাগতিক ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২০১২তে শ্রীলঙ্কা আর ২০১৪ সালে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার সিংহাসন ছিনিয়ে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারতে অনুষ্ঠিত আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। ওই পর্যন্তই। এরপর ফের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটি নিজেদের করে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে, ২০২০ সালে ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদের মাঠে হারিয়ে ষষ্ঠবারের মতো শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে ম্যাগ লেনিংয়ের দল।
 
যে ম্যাচে নিজেদের পুরনো সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে অষ্ট্রেলিয়া সেই ম্যাচটা জিততে অবশ্য বেশ বেড় পেতে হয়েছিল। প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠা দক্ষিণ আফ্রিকার স্বপ্ন ভেঙে ফের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এই ট্রফিটা যেন অস্ট্রেলিয়ার নিজস্ব সম্পত্তিই। এ নিয়ে অষ্টমবারের মতো নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর হলো। ছয়বারই চ্যাম্পিয়ন হলো অসিরা। দক্ষিণ আফ্রিকা ইতিহাস গড়ে ফাইনালে উঠেছিল। ঘরের মাঠে ইতিহাস গড়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চেয়ে বড় অর্জন নিশ্চয়ই আর কিছু হতে পারতো না। কিন্তু সামনে যদি অস্ট্রেলিয়া থাকে, সেই স্বপ্ন কিভাবে পূরণ হবে! টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা অস্ট্রেলিয়া ছাড়া কোথাও যেতেই চায় না! কেপটাউনে জিতে টানা তৃতীয়বারের মতো নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এর আগেও টানা তিনবার বিশ্বকাপ জিতেছিল তারা। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো করলো হ্যাটট্রিক। ফাইনাল ম্যাচে টসভাগ্য সহায় ছিল অসিদের। প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৫৬ রানের মাঝারি সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা। ওপেনার বেথ মুনিই একমাত্র হাফসেঞ্চুরি করেছেন। ৫৩ বলে ৯ চার আর ১ ছক্কায় তার ৭৪ রানের ইনিংসটিই অস্ট্রেলিয়ার মান বাঁচিয়েছে। ২১ বলে ২৯ করেন অ্যাশলি গার্ডনার। 
 
সাবনিম ইসমাইল আর মারিজান ক্যাপ নেন দুটি করে উইকেট। জবাবে ওপেনার লরা উলভার্ট এক প্রান্ত ধরে অনেকটা সময় দলকে এগিয়ে নিলেও বাকিদের বেশিরভাগই দিয়েছেন ব্যর্থতার পরিচয়। উলভার্ট ৪৮ বলে চার আর ৩ ছক্কায় করেন ৬১। ক্লো টাইরনের ব্যাট থেকে আসে ২৩ বলে ২৫। বাকিরা বিশের ঘরও ছুঁতে পারেননি। ফলে ৬ উইকেটে ১৩৭ রানে থামে স্বাগতিকরা। প্রথমবারের মতো শিরোপা ছোঁয়ার সুযোগ নষ্ট হয় ব্যাটিং ব্যর্থতায়। এই আফসোস হয়তো বহু বছর পোড়াবে প্রোটিয়া মেয়েদের।
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।