- |
- |
- জাতীয় |
- আন্তর্জাতিক |
- বিনোদন |
- ক্রীড়া |
- মত-দ্বিমত |
- শিক্ষা-স্বাস্থ্য |
- বিজ্ঞান-প্রযুক্তি |
- কৃষি বার্তা |
- অর্থ-বাণিজ্য-উন্নয়ন |
- সাহিত্য-সংস্কৃতি-সংগঠন |
- সারাদেশ |
দেশকন্ঠ ডেস্ক : সুস্থ শরীর, প্রশান্ত মন ভালো থাকার প্রধান শর্ত। আর সুস্থ থাকার গুরুত্ব কেবল অসুস্থ হলেই বোঝা যায়। আর তাই নিজেকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে খাবার খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো থেকে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা- নিয়ম করে স্বাস্থ্যকর খাবার খেলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু আমরা সবাই তা মানি না! ফলাফল, শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছে না।
সাধারণত প্রোটিনজাতীয় বিভিন্ন খাবারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পুষ্টি পায় শরীর। তবে শরীর যখন তার চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন পায় না তখনই এর ঘাটতি দেখা দেয়। প্রয়োজনের তুলনায় আপনি কম খাবার খাচ্ছেন সেটা শরীর নানাভাবে জানান দিতে থাকে। যদিও অনেকেই তা টের পান না।
ইদানীং কাজের ব্যস্ততায়, খাওয়ার কথা মনে থাকে না অনেকেরই। তাছাড়া অনেকেই না বুঝেই ডায়েট করেন। পুষ্টিবিদ থেকে চিকিৎসকরা এক বাক্যে বলে দেন শরীর সুস্থ রাখতে নিয়ম করে খাওয়াদাওয়ার কোনও বিকল্প নেই। তবে কয়েকটি লক্ষণ আছে, যেগুলো প্রকাশ পেলে বুঝে নিতে হবে আপনার শরীরে পুষ্টির অভাব আছে।
ত্বক লালচে, ভঙ্গুর নখ
প্রোটিনের ঘাটতি হলে ত্বক ও নখের উপর তার চিহ্ন ফুটে ওঠে। এগুলো সবই মূলত প্রোটিন দিয়ে তৈরি। এক্ষেত্রে ত্বকে লালচে ভাব, ভঙ্গুর নখ হতে দেখা যায়।
চুল পড়া
নানা শারীরিক সমস্যার ক্ষেত্রে চুল ঝরা একটি সাধারণ উপসর্গ। ঠিক করে খাওয়াদাওয়া না করলে এবং শরীরে যদি পর্যাপ্ত প্রোটিন না যায়, তা হলেও চুল পড়তে থাকে, চুলের রং বিবর্ণ হয়ে যায়। যদি দেখেন, সেরকম কোনও অসুস্থতার লক্ষণ নেই, শুধুই চুল পড়ছে, তাহলে বুঝতে হবে অপুষ্টির জন্যই এমন হচ্ছে।
হাড় ভাঙার ঝুঁকি
প্রোটিনের ঘাটতি হলে হাড় ভাঙারও ঝুঁকি বাড়ে। প্রোটিন হাড়ের শক্তি ও ঘনত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত প্রোটিন না খাওয়ার ফলে আপনার হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে ও ফ্র্যাকচারের ঝুঁকিও বাড়ে।
ক্ষুধার পরিমাণ বেড়বে
পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ করলে আপনার পেট দীর্ঘসময়ের জন্য ভরা থাকবে। ফলে বারবার খাওয়া বা ক্ষুধার পরিমাণও কমবে। আর প্রোটিনের ঘাটতি হলে আপনি বেশি ক্ষুধার্ত বোধ করবেন ও ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে যায়। যা মুটিয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
সারাক্ষণ মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা
সারাদিন অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকায় হয়তো দীর্ঘক্ষণ খাওয়া হয়নি। বাড়ি ফিরেই কি পাউরুটি, পিৎজা, অনেকটা ভাত রুটি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা বেড়ে যায়? কম খাবার গেলে শরীরে ঠিক মতো স্ফূর্তি থাকে না। তাই কার্বহাইড্রেট বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খোঁজে শরীর। কারণ এগুলো খেলে চট করে এনার্জি পায় শরীর। তাই যদি খুব বেশি এমন প্রবণতা দেখেন, তা হলে বুঝতে হবে পেট ভরে খাচ্ছেন না।
রক্তচাপের মাত্রা কমে যাওয়া
রক্তচাপ যদি হঠাৎ করে কমে যায়, অনেকে সেটাকে ডায়াবেটিস বলে ভুল করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলেও এমন হতে পারে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যারা না খেয়ে থাকেন, তাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে আর এটাই স্বাভাবিক। এতে শরীরে হরমোনের তারতম্যও হতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য
অনেক সময় নানা রকম ডায়েট করতে গিয়ে কার্বোহাইড্রেট এড়িয়ে চলি। কিংবা অজান্তেই হয়তো খাবারে ফাইবারের পরিমাণ কম হয়। তাতে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যায়। তাই শরীরে ঠিক মতো খাবার যাচ্ছে না, তা টের পাবেন যদি মলত্যাগ করতে কষ্ট হয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে
বিভিন্ন সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হলে। এক্ষেত্রে ইমিউনিটি সিস্টেমে প্রভাব পড়ে। আর দুর্বল ইমিউন সিস্টেম শরীরে প্রবেশ করা বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে না। যদি দেখেন ঘনঘন সর্দি বা কাশিতে আপনি ভুগছেন তাহলে সতর্ক থাকুন।
শক্তির জোগান, শরীরকে পুনরুদ্ধার ও দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে কাজ করে প্রোটিন। প্রোটিন মূলত দীর্ঘ-চেইন অ্যামিনো অ্যাসিড দ্বারা গঠিত। যাকে পেশির বিল্ডিং ব্লক বলা হয়।
কোন কোন খাবারে প্রোটিন থাকে?
প্রোটিন বিভিন্ন খাবারে পাওয়া যায়। যেমন- সামুদ্রিক খাবার, সয়া, ডিম, মটরশুটি, দুধ, পনির, দই, বাদাম, ওটস, মুরগির মাংস, পনির, ব্রকলি, টুনা, কুইনো, মসুর ডাল, কুমড়ার বীজ, তিসি বীজ, সূর্যমুখী বীজ, মাছ, চিংড়ি, চিনাবাদাম, ব্রাসেল স্প্রাউটসহ বিভিন্ন খাবারে পাওয়া যায় প্রোটিন।
দীর্ঘদিন প্রোটিনের অভাবে ভুগলে শারীরিক বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই দিনে পর্যাপ্ত প্রোটিনজাতীয় খাবার গ্রহণ করছেন কিনা তা নিশ্চিত করুন। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের উচিত দৈনিক ৫০-১৭৫ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা। এরপরও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দিলে ফ্যাটি লিভার বা লিভারের কোষে চর্বি জমতে শুরু করে। বর্তমানে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। জীবনযাত্রা পরিবর্তনের মাধ্যমে এই রোগ থেকে মুক্তি মেলে। তার আগে শরীর পর্যাপ্ত প্রোটিন পাচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।
দেশকন্ঠ/এআর
পথরেখা : আমাদের কথা