দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : দুই চ্যাম্পিয়ন দল মুখোমুখি আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে। দুই সেরার লড়াইটাও চললো সমানে সমান। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে বড় সংগ্রহ গড়ে চার বারের চ্যাম্পিয়ন ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। রান তাড়ায় নেমে খানিকটা ছন্দপতন ঘটলেও শেষ হাসি হাসল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হার্দিক পান্ডিয়ার গুজরাট টাইটান্স। শুক্রবার (৩১ মার্চ) জমকালো আয়োজনে পর্দা ওঠে আইপিএলের ষোলতম আসরের। অভিজিৎ সিংয়ের গানের মূর্ছনা আর রাশ্মিকাদের মোহনীয় নাচের পর ধুন্ধুমার লড়াইয়ের শুরু বাইশগজে। আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে ঋতুরাজের ৫০ বলে ৯২ রানের মারকাটারি ইনিংসে ভর করে ১৭৮ রানের পুঁজি গড়ে চেন্নাই। রান তাড়ায় শুভমান গিলের ৬৩ রানের ইনিংসে জয়ের পথেই ছিল গুজরাট। যদিও পরপর উইকেট হারিয়ে কিছুটা বিপদে পড়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। তবে শেষদিকে রশিদ খানের ৩ বলে ১০ রানের ক্যামিও ইনিংসের কল্যাণে ৪ বল বাকি থাকতেই পাঁচ উইকেটের জয় পায় হার্দিকের গুজরাট টাইটান্স।
১৭৯ রানের লক্ষ্যে শুরুটা মন্দ হয়নি গুজরাটের। তবে ইনিংসের চতুর্থ ওভারে রাজবর্ধন হাঙ্গার্গেকরের বলে বাউন্ডারি লাইনে শিবাম দুবের হাতে ধরা পড়েন ঋদ্ধিমান সাহা। দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেন শিবাম। ২টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ১৬ বলে ২৫ রান করে মাঠ ছাড়েন ঋদ্ধি। গুজরাট ৩৭ রানে ১ উইকেট হারায়। এরপর ইনজুরিতে পড়া কেন উইলিয়ামসনের বদলে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে মাঠে নামেন সাই সুদর্শন। তবে ভালো শুরুর পর থিতু হতে পারেননি সুদর্শনও। রাজবর্ধন হাঙ্গার্গেকরের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ধোনির দস্তানায় ধরা পড়েন। ১৭ বলে ২২ রান করেন তিনি। মারেন ৩টি চার। অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার ব্যাট হাতে দিনটা ভালো যায়নি। রবীন্দ্র জাদেজার বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন পান্ডিয়া। ১১ বলে ৮ রান করেন তিনি। ১১১ রানে ৩ উইকেট হারায় গুজরাট। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় গুজরাট। তবে একপ্রান্ত আগলে রাখছিলেন শুভমান গিল। দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে গিয়ে ধরা পড়েন তিনিও। আম্বাতি রায়ডুর বদলে আইপিএক ইতিহাসে প্রথম ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে নামা তুষার দেশপান্ডের বলে রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের হাতে ধরা পড়েন শুভমান গিল। ৩৬ বলে ৬৩ রান করেন গিল। মারেন ৬টি চার ও ৩টি ছক্কা। গিলের বিদায়ে বিপদে পড়ে গুজরাট। আশাহত করেন বিজয় শঙ্কররাও। তবে শেষ দিকে সব সমীকরণ মিলিয়ে দেন রশিদ খান। বল হাতে দুই উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। ব্যাট হাতেও কার্যকর মুহূর্তে ৩ বলে ১০ রান করে দলের জয়ের পথ সুগম করেন। এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি চেন্নাই সুপার কিংসের। আসরের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে সুপার ফ্লপ দলটার ব্যাটিংয়ের বড় তারকা ডেভন কনওয়ে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে এই কিউই ওপেনারকে স্বপ্নের মতো এক ডেলিভারিতে সাজঘরে ফিরিয়েছেন মোহাম্মদ শামি। ৬ রান করা কনওয়েকে ইনসুইংয়িং এক ইয়র্কারে বোল্ড করে একটা মাইলফলকও ছুঁয়েছেন এই পেসার। আইপিএল ক্যারিয়ারে উইকেটের সেঞ্চুরি পেয়েছেন স্পর্শ করেছেন শামি।
এরপর তিনে নেমে মঈন আলী এদিন দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। উইকেটে এসে শুরু থেকেই সাবলীল ছিলেন এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। কিন্তু উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারের পঞ্চম বলে রশিদ খানকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাই কিশোরের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে ১৭ বল খেলে নামের পাশে যোগ করেছেন ২৩ রান। এদিন সুবিধা করতে পারেননি বেন স্টোকস। আসরের অন্যতম দামী এই অলরাউন্ডার ৬ বল খেলে এক বাউন্ডারিতে ৭ রানের বেশি করেত পারেননি। একই পথেই হেঁটেছেন আমবাতি রাইডুও। এই অভিজ্ঞ ব্যাটার বড় ছক্কা হাঁকিয়ে ভালো শুরুর আভাস থেমেছেন ১২ রানে। দল নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও এক প্রান্ত আগলে রেখে এদিন ব্যাটিং করেছেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়। এই ওপেনার এক পাশে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন। ২৩ বলে স্পর্শ করেছেন হাঁফ সেঞ্চুরি। এরপর একই গতিতে ব্যাটিং করেছেন। কিন্তু আটকা পড়েছেন নার্ভাস নাইনটিতে। ১৮তম ওভারের প্রথম বলে আলজারি জোসেফের ইয়র্কার বলকে লং অনের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শুভমান গিলের হাতে ধরা পড়েন। দুর্দান্ত ব্যাটিং করা এই ওপেনার সাজঘরে ফিরেছেন সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে। ৫০ বলে ৯২ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। এরপর রবীন্দ্র জাদেজা এবং শিবম দুবেও দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন। এরফলে রানের গতিও কিছুটা কমে যায়। শেষদিকে ধোনির ১৪ রানের ইনিংসের সুবাদে ১৭৮ রান তোলে চেন্নাই।
দেশকন্ঠ/অআ