• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১১:৪৫

বিশ্ব ক্রিকেটের সফল অধিনায়ক মহেন্দ সিং ধোনি

বিশেষ প্রতিবেদন : একদিন বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ার পরদিন রিজার্ভ ডে তে শাসরুদ্ধকর ম্যাচে গুজরাট টাইটান্সকে ৫ উইকেটে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। হলুদ জার্সিতে দলটির অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি শিরোপা নিয়ে উল্লাসে মাতে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে কয়েক বছর আগে বিদায় জানানো এমএস যেন শিরোপা জয় করা অভ্যাসে পরিণত করেছেন। সে কারণে অনেকেই বলছেন ধোনি এখন বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক। 
 
উইকেটকিপার ব্যাটারকে ‘ট্রফি কালেক্টর’ বললেও হয়তো বাড়াবাড়ি হবে না। অধিনায়ক ধোনির ক্যাবিনেটে যোগ হচ্ছে একের পর এক শিরোপা। সবচেয়ে সফল ক্রিকেট অধিনায়ক ধোনিই কি না, তা নিয়ে এখন চলছে নিয়মিত আলোচনা। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী মৌসুমের শিরোপা ভারত জিতেছে তাঁর অধিনায়কত্বেই। জোহানেসবার্গে চিরপ্রতিদ্বন্ধী পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ রানের রুদ্ধশ্বাস জয়ে ধোনির ক্রিকেট মস্তিষ্কের প্রশংসা শোনা যায় আজও। ঠিক তিন বছর পর ভারতের ক্যাবিনেটে আরও একটি শিরোপা আসে ধোনির নেতৃত্বেই। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ২০১০ এশিয়া কাপ জিতেছে ভারত। এক বছর পর আরও এক ফাইনালে মুখোমুখি হয় ভারত-শ্রীলঙ্কা। এবারের ভেন্যু ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম, উপলক্ষ্য ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ।
 
পেসার নুয়ান কুলাসেকারাকে ধোনির ছক্কা মারার পরই ধারাভাষ্যকক্ষে রবি শাস্ত্রী বলে উঠলেন, ‘ধোনি ফিনিশেস অব ইন স্টাইল। ইন্ডিয়া লিফট দ্য ওয়ার্ল্ড কাপ আফটার টোয়েন্টি এইট ইয়ার্স।’ ২৮ বছর পর ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতার আনন্দে সেদিন ভারতে অনেকেরই চোখের জল যেন থামছিলই না। ওয়াংখেড়ে থেকে এজবাস্টন, মাঝে কেটে গেছে দুই বছর। ধোনির নেতৃত্বাধীন ভারত এবার ২০১৩-এর চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি। স্বাগতিকদের হারিয়ে এই টুর্নামেন্টও জিততে যায় ভারত। আইসিসি ইভেন্ট, এশিয়া কাপ, আইসিসি ইভেন্ট, এশিয়া কাপ, এই চক্র আবার পূরণ হয় ২০১৬ সালে। এবার এশিয়া কাপ হয় টি-টোয়েন্টি সংস্করণে। মিরপুরে বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ধোনির ভারত। এ ছাড়া ভারত-অস্ট্রেলিয়া বিখ্যাত বোর্ডার গাভাস্কার ট্রফি ভারতীয় এই অধিনায়ক জিতেছেন তিনবার। ভারতীয় ক্রিকেট দলের পর চেন্নাই সুপার কিংসকে তো ধোনির ‘সেকেন্ড হোম’ বলাই যায়। চেন্নাই পাঁচবার আইপিএল জিতেছে তাঁর অধীনেই, যার সর্বশেষটা এসেছে সোমবার রাতে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে।
 
২০১১, ২০১৪ দুটি চ্যাম্পিয়নস লিগও চেন্নাই জিতেছে ভারতীয় এই ক্রিকেটারের অধিনায়কত্বে। এদিকে ২০২৪ আইপিএলেও খেলতে চান ভক্তদের ভালোবাসায় সিক্ত হওয়া ধোনি। প্রতিবার আইপিএল শেষ হলে অনেকেই হয়তো ধরে নেন, এবার টুর্নামেন্ট থেকে অবসর নেবেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। বয়স তো ৪০ পেরিয়েছে কবেই। কিন্তু ধোনি যে অন্য ধাতুতে গড়া। দিব্যি খেলে যান ভারতের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট। ভক্তদের ভালোবাসা, শ্রদ্ধায় প্রতিনিয়ত সিক্ত হচ্ছেন। ভারতীয় এই ব্যাটার খেলতে চান আরও এক মৌসুম। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে রিজার্ভ ডেতে হয়েছে গুজরাট টাইটান্স-চেন্নাই সুপার কিংসের ফাইনাল। গুজরাট স্বাগতিক হিসেবে খেলেছে ঠিকই, তবে ১ লাখেরও বেশি ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়ামে হলুদ জার্সি পরা ভক্তের সংখ্যাও কম ছিল না। চেন্নাই ভক্তরা ধোনির নামে স্লোগান, ফেস্টুনে মাতিয়ে দিয়েছিলেন আহমেদাবাদের গ্যালারি। ব্যাট হাতে কিছু করতে না পারলেও ফাইনালে ধোনির দ্রুতগতির স্টাম্পিং বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে। ০.১ সেকেন্ডে শুভমান গিলকে স্টাম্পিং করেছেন ধোনি। শেষ পর্যন্ত শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনাল জিতেছে চেন্নাই সুপার কিংস।
 
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ভক্তদের উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক মাধ্যমে ধোনিকে নিয়ে হতে থাকে একের পর এক পোস্ট। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ভক্তদের প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ধোনি। ভক্তদের ভালোবাসায় মুগ্ধ ধোনি খেলে যেতে চান আইপিএলের আরও এক মৌসুম, ‘পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনা করলে অবসর ঘোষণার জন্য এটাই সেরা সময়। ধন্যবাদ বলে অবসর নেওয়া আমার জন্য বেশ সহজ। কিন্তু কঠিন ব্যাপার হচ্ছে, আরও ৯ মাস কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং আইপিএলে আরও এক মৌসুম খেলার চেষ্টা করা। তবে সিএসকে ভক্তদের থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি, তাতে আরও এক মৌসুম আইপিএল খেলাই হবে তাদরকে দেওয়া উপহার। তারা যেভাবে আবেগ, ভালোবাসা দেখিয়েছে, তাদের জন্য আমার কিছু করতে হবে।’ ২৬ গড় ও ১৮২.৪৬ স্ট্রাইক রেটে এবারের আইপিএলে ১০৪ রান করেছেন ধোনি। তবু ভক্তদের কাছে তো এই পরিসংখ্যান সামান্য কিছুই। চিদম্বরম স্টেডিয়াম তো বটেই, ইডেন গার্ডেন্স, ওয়াংখেড়ে, জয়পুর, যেখানেই ধোনি খেলতে গেছেন, সব স্টেডিয়ামের গ্যালারিই হলুদে ছেয়ে গিয়েছিল।
 
‘ধোনি ধোনি’ স্লোগান, ফেস্টুন তো ছিল নিয়মিত দৃশ্য। আইপিএলের ফাইনালের প্রথম ইনিংস শেষেই গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। তারপরও গুজরাটের দেওয়া ২১৫-এর লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামে চেন্নাই। বৃষ্টিতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর রাত ১২টা ৪০ মিনিটে খেলা শুরু হয়। বৃষ্টি আইনে চেন্নাইয়ের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৫ ওভারে ১৭১ রানের লক্ষ্য। চেন্নাইয়ের ১৫ ওভারের ইনিংসে পাওয়ার প্লে হয় ৪ ওভার। শেষ ২০ বলে যখন ৫০ রান দরকার, তখন রশিদ খানকে টানা দুটি ছক্কা মারেন দুবে। এরপর ১৩তম ওভারের প্রথম তিন বলে মোহিতকে ৬, ৪, ৪ মেরে সমীকরণ অনেকটা সহজ করে আনেন আম্বাতি রাইদু। পরক্ষণেই আবার ঘুরে দাঁড়ান মোহিত। চতুর্থ ও পঞ্চম  বলে তুলে নেন রাইদু, ধোনির উইকেট। শেষ ওভারে জয়ের জন্য যখন ১৩ রান দরকার, তখন বোলিংয়ে আসেন মোহিত। প্রথম ৪ বলে দিয়েছেন মাত্র তিন রান। শেষ দুই বলে ১০ রানের সমীকরণ মিলিয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা। পঞ্চম ও ষষ্ঠ বলে ছক্কা ও চার মেরে চেন্নাইকে এনে দেন পঞ্চম আইপিএল শিরোপা।
 
ধোনির অধিনায়কত্বে ভারতের জেতা মেজর শিরোপাসমূহ
ওয়ানডে বিশ্বকাপ  ২০১১
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০০৭
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০১৩
এশিয়া কাপ ২০১০ ও ২০১৬
বোর্ডার গাভাস্কার ট্রফি ২০০৮, ২০১০ ও ২০১৩
 
চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে শিরোপা
আইপিএল ২০১০, ২০১১, ২০১৮, ২০২১ ও ২০২৩
চ্যাম্পিয়নস লিগ ২০১১ ও ২০১৪
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।