দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে চন্ডিকা হাথুরুসিংহে নিয়োগ পাওয়ার পর সহকারী কোচের চেয়ারটা খালিই পড়ে ছিল। এবার সেখানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নিক পোথাসকে। বাংলাদেশে এসেই বড় স্বপ্নের কথা শুনিয়েছেন। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জিততেই নাকি ভারতে যাবে তামিম ইকবালের দল। এমন কথা শোনার পর ক্রিকেটারদের পাশাপাশি খেলাপ্রিয় মানুষের মনটা অন্যরকম আনন্দে ভরে ওঠবে। কয়েকদিন ক্রিকেটারদের দেখেই এমন সার্টিফিকেট দিয়েছেন।
ভারতের মাটিতে অক্টোবরের ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য দল গোছাতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। তার আগে টাইগাররা অবশ্য বেশ কয়েকটি সিরিজ খেলবে। সেসব সিরিজ হতে পারে বিশ্বকাপে তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসানদের প্রস্তুতির দারুণ সুযোগ। তার ওপর ভারতের কন্ডিশনের সঙ্গে মিল থাকায় অনেকটা ঘরোয়া অনুভূতি থাকবে ক্রিকেটারদের মাঝে। আসন্ন মেগা এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের ভালো করার কথা জানিয়েছেন নতুন সহকারী কোচ নিক পোথাস। ইংল্যান্ডের মাটিতে সবশেষ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ থেকেই বাংলাদেশ দলে যোগ দিয়েছেন পোথাস। তবে টাইগারদের সহকারী কোচের দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি এই প্রথম দেশে এসেছেন। এরপর মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তামিম ইকবালদের বিশ্বকাপ যাত্রা নিয়ে কথা বলেছেন।
এর আগে দুই বছরের জন্য চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সহকারী হিসেবে আসা পোথাস বলছেন, ‘বিশ্বকাপ তো অনেক বড় একটি প্লাটফর্ম। বাকি দলগুলো কীসের জন্য বিশ্বকাপে যায়? আমাদেরও কোনো ভিন্নতা নেই। ছেলেরা লক্ষ্যের প্রতি অবিচল। আমরা একটা বিশ্বকাপ জিততে চাই, নিজেদের গর্বিত করতে চাই। আমরা তা নিয়ে ভাবতে চাই না, যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আমরা সম্ভাব্য সেরা প্রস্তুতি নিব এবং নিজেদের সেরাটা দিব।’ আসন্ন আফগানিস্তান সিরিজকে সামনে রেখে বাংলাদেশ প্রি-সিরিজ ক্যাম্প শুরু করেছে। দু’দলের মধ্যকার একমাত্র টেস্ট মাঠে গড়াবে ১৪ জুন থেকে। তার আগে আফগান স্পিনারদের ব্যাপারে শিষ্যদের সতর্ক করে দিলেন নিক পোথাস। তার মতে, রশিদ খানদের মোকাবিলা করা যেকোনো দলের জন্যই চ্যালেঞ্জ। এমনকি টেস্ট ম্যাচকে দাবা খেলার সঙ্গে তুলনা করেছেন টাইগারদের এই সহকারী কোচ। পোথাস বলছিলেন, ‘আফগানিস্তানের স্পিন যেকোনো দলের জন্যই চ্যালেঞ্জ। তাদের শীর্ষ মানের স্পিন অ্যাটাক আছে। এই চ্যালেঞ্জটা একইসঙ্গে রোমাঞ্চকর। একটা সমস্যা সমাধানের মতো পরিস্থিতি অবশ্যই রোমাঞ্চকর। তবে স্পিনের সঙ্গে পেস বোলিংও সামলাতে হবে। তাই স্পিন নিয়ে খুব বেশি ভেবে, পেসের কথা ভুলে গেলে হবে না’।
তার কাছে টেস্ট ম্যাচ হল দাবা খেলার মতো। তারা যা নিয়েই আসুক, সমাধান বের করতে হবে। বাট ইটস এক্সাইটিং!’ ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিটি ভক্ত ও সমর্থকের চিন্তায় এখন থেকেই বাসা বেঁধেছে, ভারতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ ২০২৩। কেউ কেউ মনে করছেন সাকিব, তামিম ও মুশফিকের সাথে এক ঝাঁক মেধাবী ও বেশ কার্যকর তরুণ পারফরমারে গড়া বাংলাদেশ দল এবারের বিশ্বকাপে দারুণ কিছু করবে। হয়তো সম্ভাব্য ফেবারিটের তালিকায় থাকবে না, তবে ‘ডার্ক হর্স ’ বলা যেতেই পারে। সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাসহ কারো কারো মত, বাংলাদেশের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার এটাই মোক্ষম সুযোগ। খেলা ভারতের মাটিতে। পরিবেশ, পরিস্থিতি আর উইকেট ও পারিপার্শ্বিকতা সবই অনুকূল। দলে অভিজ্ঞ ও পরিণত এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশ সফল কজন পারফরমার আছেন। তাদের সাথে এক ঝাঁক প্রতিভাবান তরুণ উঠে এসেছেন। যাদের নিয়ে অনেকদূর যাওয়া সম্ভব। বাংলাদেশের প্রধান সহকারী কোচ নিক পোথাস কি মনে করেন?
পোথাসের সাফ কথা, অন্য ভালো দলগুলো যেমন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা ভাবে, বাংলাদেশই তাই ভাববে। বাংলাদেশ বিশ্বকাপে কী লক্ষ্য নিয়ে যাবে? এমন প্রশ্নে পোথাসের পাল্টা প্রশ্ন, ‘অন্য দলগুলো কিসের জন্য ওয়ার্ল্ড কাপে যায়? আমাদেরও কোনো ভিন্নতা নেই। ছেলেরা লক্ষ্যের প্রতি অবিচল। আমরা একটা বিশ্বকাপ জিততে চাই, নিজেদের গর্বিত করতে চাই। আমরা সম্ভাব্য সেরা প্রস্তুতি নিব এবং নিজেদের সেরাটা দিব।’ এদিকে বাংলাদেশে কাজ করা রোমাঞ্চকর বলছেন পোথাস। ইংল্যান্ডের মাটিতে সবশেষ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ থেকেই বাংলাদেশ দলে যোগ দিয়েছেন নিক পোথাস। টাইগারদের সহকারী কোচের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো এসেছেন বাংলাদেশের মাটিতে। এ সময় বাংলাদেশ দলের কোচ হওয়ার কারণ কি, সেটাও খোলাসা করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই ক্রিকেটার। পোথাস বলছিলেন, ’বাংলাদেশের কোচ হবার সিদ্বান্ত নিতে আমাকে মোটেও কঠিন কোন কিছু ছিল না। গত ১৮ মাস ধরে বাংলাদেশ দৃষ্টিনন্দন পারফরম্যান্স করছে। ছেলেদের সামর্থ্য আছে। গত ৬-৮ মাস ধরে দারুণ খেলছে। এদের সঙ্গে কাজ করা রোমাঞ্চকর’। বাংলাদেশ দল টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে খুব একটা ভালো নয়। পোথাসের ভাষ্যে, ’জাদু লাগবে যাতে খুব দ্রুত ব্যাটিং বদলে ফেলা যায়! মজা করছিলাম। দেখুন, সবকিছুরই সময় প্রয়োজন। একটা নতুন সংস্কৃতিতে এসেই আমি সবকিছু বদলে ফেলার কথা ভাবতে পারি না। আমার আগে তাদেরকে দেখতে হবে। আমি তাদের যে সামর্থ্য দেখেছি, ভালো না করার কোনো কারণ নেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক দল শীর্ষে থাকা মানে অন্য দলের অবনমন। এই উত্থান-পতনের সাথেই চলতে হবে। খেলোয়াড়দের যাচাই করার জন্য আমি সময় নিতে চাই।’
দেশকণ্ঠ/আসো