• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১১:৪১

নতুন বিতর্কে কাজী মো. সালাউদ্দিন?

দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে আশার চেয়ে হতাশার খবরই বেশি শুনতে হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি পরিতাপের বিষয়, আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সব ধরনের ফুটবলীয় কার্যক্রম থেকে দুই বছরের নিষিদ্ধ হয়েছেন বাফুফের সাবেক সাধারন সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ। নিষিদ্ধের প্রায় একমাস পর জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলন করেছেন সোগাগ। সেখানে নিজেকে নির্দোষ দাবী করেছেন, পাশে ছিলেন সিনিয়র আইনিজীবি আজমালুল হোসেন কিউসি। এবার বিতর্কিত ব্যক্তির আইনিজীবিকে সাথে নিয়েছেন বাফুফে সভাপতি কাজী মো, সালাউদ্দিন। আহামরি উন্নতি দেখাতে না পারলেও বিতর্কমুক্ত ছিলেন এই সংগঠক। কিন্তু সাংবাদিকদের নিয়ে তার বেফাঁস মন্তব্যের পর পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। এককালের সেরা ফুটবলার এখন সংগঠক হিসেবে সবার চোখের বিষ। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) সভাপতির পদ ধরে রাখা তার জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। চাপে থাকা সালাউদ্দিন এবার আইনের দরজায়। সমালোচকদের আইনি নোটিস দিয়েছেন তার আইনজীবীর মাধ্যমে। সোহাগ ও সালাউদ্দিনের আইনজীবি এখন একজনই, কিউসি।
 
তাতেই নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। ঢাকার ফুটবল পাড়ায় কান পাতলেই শোনা যায়, তাহলে কি সালাউদ্দিন-সোহাগের সবকিছু এক জায়গা থেকে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে? সংবাদকর্মী, ব্যারিস্টার সুমন এবং নিজ ফেডারেশনের সাবেক কর্মকর্তাসহ মোট ১৭ ব্যক্তি ও সংস্থাকে আইনি নোটিস দিয়েছেন বাফুফে সভাপতি। প্রকাশ্যে তুনোধুনো করা হচ্ছে দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ অভিভাবককে। সবচেয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন এবং করে আসছেন ব্যারিস্টার সুমন। সদ্য পদত্যাগ করা বাফুফের নির্বাহী সদস্য আরিফ হোসেন মুন, ক্রীড়া সংগঠক শাকিল মাহমুদ চৌধুরীও একহাত নিয়েছেন সালাউদ্দিনকে। সবকিছুই ফলাও করে প্রচার করছে সংবাদমাধ্যম। প্রতিবাদস্বরূপ আইনজীবীর মাধ্যমে আইনি নোটিস দিয়েছেন সালাউদ্দিন। আইনি নোটিস গ্রহীতাদের বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এটাকে কেউ যেন অন্যভাবে না দেখেন। এদিকে সালাউদ্দিনকে সরাতে সরকারের শীর্ষ মহল থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে। বহু বিতর্কের জন্ম দেওয়া বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সরাতে চায় কর্তৃপক্ষ। সরকারের শীর্ষ মহল তার সাম্প্রতিক বিতর্কিত কর্মকান্ডে চরম নাখোশ, এটা সবারই জানা।
 
তবে হলেও ফিফার নিয়মের কারণে এখনই তাকে সরানো যাচ্ছে না। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সূত্রটি জানিয়েছে, ‘ইচ্ছে করলেও কাজী সালাউদ্দিনকে সরানো যাচ্ছে না। ফিফার কিছু জটিলতা আছে। নির্বাচিত সর্বোচ্চ বডি সরিয়ে দিলে দেশের ফুটবলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। আমরা চাই তাকে ফেডারেশন থেকে স্বাভাবিকভাবে শিফট করতে। নতুন করে তাকে নিয়ে বিতর্ক করতে চাই না। তাকে মৌখিকভাবে সাবধান করা হয়েছে।’ টানা চতুর্থবারের মতো দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাফুফের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন সালাউদ্দিন। দায়িত্বের পর গেল পাঁচ-ছয় বছর ধরে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না তার। সম্প্রতি কাজী সালাউদ্দিন আর বিতর্ক যেন সমার্থক শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের বড় বড় কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন দল, বিরোধী দল, সাধারণ মানুষ সবাই তার সমালোচনায় সরব।
 
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে প্রায়ই তুলোধুনো করা হচ্ছে। সবশেষে সংবাদকর্মীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করে বড় বিতর্কের জন্ম দেন কাজী সালাউদ্দিন। বৈশি^ক ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা আর্থিক অনিয়ম আর জালিয়াতির কারণে গত ১৪ এপ্রিল ফুটবলের সব কর্মকান্ড থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে। এরপর বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের ব্যক্তিগত সহকারী ইমরান হোসেন তুষারকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এরপর ২ মে সোহাগের ঘটনায় বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিং ডাকা হয়। আদতে কোনো কার্যকর সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বিতর্ক হয়েছে। সেই বিতর্কের জন্ম দেন স্বয়ং বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। সংবাদকর্মীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। তার মন্তব্যটি ছিল, ‘জার্নালিস্টরা এখানে ঢুকতে গেলে, আমার এখানে তাদের বাপ-মায়ের ছবি দিতে হবে। আরেকটা কন্ডিশন হলো তার বাপের ফটো পাঠাবে জুতা পরা, ঠিক আছে (হাসি)। এটা হতে হবে ম্যান্ডেটরি। বাপের জুতা পরা ছবি থাকতে হবে।’ অবশ্য ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি। ঘটনা চাউর হওয়ায় তড়িঘড়ি করে ভিডিও বার্তা দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন কাজী সালাউদ্দিন। এ ঘটনায় গোটা দেশে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। সামাজিক মাধ্যমে তাকে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে আঁকা হয় কার্টুন।
 
সবকিছু বিবেচনায় সালাউদ্দিনকে সরিয়ে দিতে সোচ্চার হয় সব মহল। তখন প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে এক সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে এক যুবক বলে ওঠেন, ‘আপা সালাউদ্দিনকে সরান।’ সে ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এসব বিতর্কিত মন্তব্য, কর্মকান্ডের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন সাবেক কিংবদন্তি এই ফুটবলার। একের পর এক নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হচ্ছেন তিনি। বাফুফে সভাপতির  এসব নেতিবাচক কর্মকান্ড নিয়ে সজাগ বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলও। ঘটনার পরপরই তিনি বলেন, সাংবাদিকদের নিয়ে এমন মন্তব্য খুবই নিন্দনীয়। এই কথা অফ বা অন দ্য রেকর্ড নয়। ঘুমিয়েও মানুষ বলতে পারে না। প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কী কথা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা ওয়ান টু ওয়ান বৈঠক। খুবই কনফিডেনশিয়াল। এখনই সব বলা ঠিক হবে না। তবে সবকিছু মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।