• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৭ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০১:২৩

নানান পুষ্টিগুণে ভরপুর মৌসুমি ফল

দেশকন্ঠ ডেস্ক : নানা ফলের রয়েছে নানান পুষ্টিগুণ। বয়স, শারীরিক অবস্থা, রোগ ভেদে নিয়মিত ও সঠিক মাত্রায় ফল খেলে তা শারীরিক অনেক রোগব্যাধির ক্ষেত্রেও উপকারী। আবার যাদের কিডনির রোগ রয়েছে, তাদের ফলমূল খাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হয়। ফলের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এটি রান্না করতে হয় না। আর সব ফলের মধ্যেই পানির পরিমাণ বেশি থাকে। সেই কারণে গরমের সময় শরীরের পানিশূন্যতা পূরণে এটি সহায়তা করে। পুষ্টিমানের দিক থেকেও সব ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, খনিজ পদার্থ থাকে। বিশেষ করে রঙিন ফলে লাইকোপেট আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, তা শরীরের ভেতরের বিষাক্ত জিনিস দূর করে দেয় এবং ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করে। আমাদের দেশে গ্রীষ্মকাল থেকে পাওয়া যায়, এমন কয়েকটি মৌসুমি ফলের গুণাগুণ এখানে তুলে ধরা হলো-

আম : স্বাদ, পুষ্টি ও গন্ধে অতুলনীয় জনপ্রিয় একটি ফল আম। বাংলাদেশে এপ্রিল মাস থেকেই কাঁচা আম পাওয়া যায়। তবে পাকা আম আসতে শুরু করে মে মাস থেকে। জুলাই বা অগাস্ট পর্যন্ত দেশীয় আম পাওয়া যায়। কৃষি তথ্য সার্ভিসের বর্ণনা অনুযায়ী, আয়রন ও সোডিয়ামের ঘাটতি পূরণে বেশ কার্যকরী আম। আম রক্তে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ডায়াবেটিসের সঙ্গে লড়াই করে। ক্যান্সার কোষকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে। আমে রয়েছে উচ্চ পরিমাণ প্রোটিন যা জীবাণু থেকে দেহকে সুরক্ষা দেয়। আমে রয়েছে ভিটামিন এ, যা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। চোখের চারপাশের শুষ্কভাবও দূর করে। পাকা আমে কাঁচা আমের তুলনায় শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে। কাঁচা আম দেহের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। লিভারের সমস্যায় কাঁচা আম খাওয়া উপকারী। এটি বাইল এসিড নিঃসরণ বাড়ায়। অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াকে পরিষ্কার করে। দেহে নতুন রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে।

খনিজ পদার্থ আয়রনের ভালো উৎস আম। প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও সোডিয়াম বিদ্যমান। এ ছাড়া খনিজ লবণ, ভিটামিন বি, ই, সেলেনিয়াম, এনজাইম, ম্যালিক এসিড, সাইট্রিক এসিড, টারটারিক অ্যাসিড বিদ্যমান। এজন্যই আমকে বলা হয় ফলের রাজা। এর মধ্যে রয়েছে এমন অনেক পুষ্টিগুণ যা শরীরকে ভালো রাখে। খসখসে চামড়া, চুলপড়া, চোখের নানা রোগ, হজমের সমস্যা দূর করতে আম কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এছাড়া এই ফলটি বলকারক, মুখরোচক ও যকৃতের জন্য উপকারী।

কাঁঠাল : বাংলাদেশের জাতীয় এই ফলের প্রতিটি অংশই খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশের কৃষি তথ্য সার্ভিসের বর্ণনা অনুযায়ী, কাঁঠালে প্রচুর এনার্জি। কাঁঠালে শর্করার পরিমাণ বেশি। কাঁঠাল গ্রীষ্মকালের ফল। পাকা কাঁঠালের ক্যালরি প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৯০ কিলোক্যালরি এবং খনিজ লবণের পরিমাণ প্রায় ০.৯ গ্রাম। কাঁচা কাঁঠালের ফাইবারের পরিমাণ পাকা কাঁঠালের বেশ কয়েক গুণ বেশি। তাই ডায়াবেটিক মানুষের জন্য কাঁচা কাঁঠাল উপকারী। রক্তের চিনির মাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য কাঁচা কাঁঠালের জুড়ি নেই।

এতে আছে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, সোডিয়াম, জিঙ্ক এবং নায়াসিনসহ বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদান। কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন থাকায় তা মানবদেহের জন্য বিশেষ উপকারী। কাঁঠালের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ আছে যা রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপের উপশম হয়। কাঁঠাল সর্বত্র পাওয়া যায় তবে আশুলিয়ায় বেশি উৎপন্ন হয়।

লিচু : এটি গ্রীষ্মকালীন একটি স্বল্পমেয়াদি ফল। এই ফলটি টিউমার রোধে বেশ ভূমিকা রাখে। রসাল এই ফলটিতে রয়েছে খাদ্য শক্তি, শর্করা, আমিষ, ক্যালসিয়াম, লৌহ ও ভিটামিন-সি।

জাম : অরুচি ভাব ও বমিভাব নিরাময়ে জামের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। অনেকে মনে করেন, জাম দেহে রক্ত তৈরি করে। যদিও সেইরকম কোনো বৈজ্ঞানিক তথ্য নেই, তবে জামের ভেতর খাদ্য শক্তি, শর্করা, আমিষ, চর্বি, আঁশ, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ভিটামিন-সি ও ক্যারোটিন থাকে।

এটি শরীরের হাড়কে মজবুত করে, ডায়রিয়া ও আলসার নিরাময়ে ভূমিকা রাখে। জাম ত্বক টানটান করতে, স্মৃতিশক্তি বাড়াতে আর ডিটক্সিফায়ার হিসাবেও কাজ করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, জামের নির্যাস ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ফ্রি র্যাডিকেলের কাজে এবং বিকিরণে বাধা দেয়।

পেয়ারা : বাংলাদেশে এখন সারা বছর ধরেই পেয়ারা পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারায় ৫১ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ১১.২০ গ্রাম শর্করা, ০.৯০ গ্রাম আমিষ, ১০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ২১০ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি আর ১০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন থাকে। কারও কারও জন্য পেয়ারা অম্বলের তৈরি করলেও বেশির ভাগ মানুষের জন্য এই ফলটি উপকারী।

সফেদা : সফেদায় প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ থাকে, যা দেহে শক্তি যোগায়। এ ছাড়া এই ফলে ক্যালসিয়াম ও লৌহ রয়েছে, যা হাড় ও দাঁত সুস্থ রাখে। সফেদা মানসিক চাপ কমাতে, অনিদ্রা, উদ্বেগ ও বিষণ্ণতা দূর করতে ভূমিকা রাখে বলে মনে করা হয়। বিভিন্ন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান, ভিটামিন এ, সি ও ই এবং ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, কপার ও আয়রনসহ অপরিহার্য বহু পুষ্টি উপাদান রয়েছে ফলটিতে।

তরমুজ : তরমুজে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা স্ট্রেস কমিয়ে দেয়। এছাড়া প্রোস্টেট ক্যান্সার, কোলন ক্যানসার, ফুসফুসের ক্যানসার ও স্তন ক্যান্সারে ঝুঁকি কমায়। তরমুজে প্রচুর পানি থাকে, তাই গরমের সময় শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে তরমুজ ভূমিকা রাখে। শরীরকে সুস্থ ও সতেজ করে তোলে। এতে থাকা ক্যারোটিনয়েড চোখ ভালো রাখতে সহায়তা করে।

আমড়া : প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্য উপযোগী আমড়াতে ৬৬ কিলো ক্যালরি খাদ্যশক্তি, ১৫ গ্রাম শর্করা, ১.১০ গ্রাম আমিষ, ৫৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৯২ মিলিগ্রাম ভিটামিন- সি, ৩.৯০ মিলিগ্রাম লৌহ ও ৮০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন ও ৮৩.২০ গ্রাম জলীয় অংশ রয়েছে। এ ছাড়া পিত্ত ও কফ নিবারক, রুচিবর্ধক হিসাবে আমড়া যথেষ্ট উপকারী। আমড়া কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।

জামরুল : এই ফলে রয়েছে ক্যারোটিন ও ভিটামিন-বি। যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের জন্য জামরুল একটি উপকারী ফল।

লটকন : লটকন পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ অম্ল মধুর ফল। ফল খেলে বমিভাব দূর হয় ও তৃষ্ণা নিবারণ হয়।

বেল : পেটের নানা অসুখ, আমাশয়, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বেল একটি উপকারী ফল। খাবার হজমে এটি সাহায্য করে। এর মধ্যে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম রয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
দেশকন্ঠ/এআর

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।