পথরেখা প্রতিনিধি, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) : কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার আগেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উক্ত হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম মনজুর-ই-এলাহীর বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে জানা যায়, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একাধিক কর্মচারী ও কর্মকর্তা জানান, হাসপাতালের ভিতরে মসজিদ নির্মাণ হবে সরকারী খরচে। কিন্তু আমাদের টিএস স্যার আমাদের নিকট হতে নির্দিষ্ট হারে মসজিদের জন্য অর্থ ধার্য করেছে। তাছাড়া ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধি (এমআর) দের নিকট হতেও প্রত্যেক কোম্পানী পঞ্চাশ হাজার হতে এক লক্ষ টাকা ধার্য করা হয়েছে। চলতি বছরের ১০ এপ্রিল স্থানীয় সাংসদ মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
চাকুরী হারানোর ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একাধিক কর্মকর্তা, কর্মচারী মসজিদের জন্য অর্থ দাবী এখন ওপেন-সিক্রেট ব্যাপার। কর্মচারীরা মনে করেন স্যার পদন্নোতি পেয়ে চলে যাবেন এর আগে মসজিদের নাম করে কিছু টাকা হাতিয়ে নিবেন। টিএস স্যারের কাছে কোন কাজের জন্য যে যায় তাদের কাছেই নির্ধারিত অর্থ দাবী করে বসেন।
অর্থ দাবী করার ব্যাপারে একাধিক ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি জানান, মসজিদের উন্নয়নের জন্য আমাদের ডেকে টাকা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। আমাদেরকে লিখিতভাবে চিঠি দিয়েছে মজসিদ নির্মানের জন্য পঞ্চাশ হাজার হতে এক লক্ষ করে টাকা দিতে। নির্ধারিত পরিমান অর্থ না দেয়ার কারনে গত দুই মাস যাবৎ আমাদের হসপিটাল কমপ্লেক্সের ভিতরে যেতে দিচ্ছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি অভিযোগ করে বলেন, এত পরিমান অর্থ দেয়া কিভাবে সম্ভব। আমরা আমাদের অফিসের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। কোন প্রতিষ্ঠানই এত পরিমাণ অর্থ দিতে রাজি না।
কালীগঞ্জ উপজেলা শাথার ফার্মাসিস্ট রিপ্রেজেনটিভ এসোসিয়েশন (ফারিয়া)’র সভাপতি মো. আমির হোসেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠো ফোনে বলেন, কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত ৭০ টি ঔষধ কোম্পানিকে মসজিদ নির্মাণের জন্য অর্থ চেয়ে চিঠি দিয়েছে। ইতোমধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠান টাকা পরিশোধ করায় তারা হাসপাতাল ভিজিট করতে পারছে। টাকা না দেয়ায় অন্যদের হাসপাতালের গেইটের কাছে অবস্থান করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম মনজুর-এ-এলাহী এ বিষয়ে প্রতিবেদককে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের মসজিদ নির্মাণে আর্থিকভাবে সহায়তা করার জন্য চিঠি দিয়েছি। তিনি আরোও জানান, ঔষধ কোম্পানী ডাক্তারদের পেছনে প্রতি বছর হাজার হাজার টাকা খরচ করতে পারলে মসজিদে কেন দিতে পারবে না? মসজিদ আল্লাহর ঘর। তাতে দান করলে ক্ষতি কি? তবে ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের (এমআর) হাসপালালের ভিতরে আসতে দেইনি সত্য।
এ বিষয়ে গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. খায়রুজ্জামান মুঠো ফোনে প্রতিনিধিকে জানান, যেহেতু অভিযোগ পেয়েছি,বিষয়টি আমি গুরুত্বের সাথে দেখব। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে একাধিকবার মুঠো ফোনে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
পথরেখা/আসো