• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ২১:০৬

ভারতকে হারিয়ে নারী ক্রিকেটে ইতিহাস

পথরেখা অনলাইন : নারী ক্রিকেটে বারবরই বাংলাদেশের চেয়ে শক্তিশালী দল ভারত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মেয়েরা ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে এনেছে। ভারতের বিপক্ষে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতেছে দিনকয়েক আগে। এবার জিতল ওয়ানডেতে। সেটাও প্রথমবারের মতো। তাইতো ১৬ জুলাই দিনটা টাইগ্রেসদের জন্য ইতিহাস গড়া। এশিয়ার জায়ান্ট ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে চোখে চোখ রেখে লড়াই করেও সিরিজ হারের আক্ষেপে পুড়তে হয়েছিল বাংলাদেশকে। তবে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে শুরুতেই দাপুটে জয়ে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে প্রথমবারের মত ওয়ানডে ফরম্যাটে ভারতের বিপক্ষে জয় পেল টাইগ্রেসরা। মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের কাছে রীতিমতো অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন স্মৃতি-হারমানপ্রীতরা কাউররা। রোববার বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির ৩৯ রানের পাশাপাশি ফারজানা হক পিংকির ২৭ রানের সুবাদে কোনোরকমে দেড়শ পার হয় বাংলাদেশের ইনিংস। বৃষ্টি বাধায় ৪৪ ওভারে নেমে আসা ম্যাচটিতে ১৫২ রানের বেশি সংগ্রহ করতে পারেনি স্বাগতিক ব্যাটাররা।
 
জবাবে হয়তো ভারত ম্যাচটা সহজেই জিতে যাবে বলে ধারনা করা হয়েছিল। কিন্তু মারুফা আক্তারের ৪ উইকেট এবং রাবেয়া খানের ৩ উইকেটের সুবাদে ভারতের ইনিংস থামল ১১৩ রানে। ৪০ রানের জয়ে মিরপুরে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। ছোট টার্গেট তাড়ায় শুরুতেই হোঁচট খায় ভারত। মারুফা আক্তারের করা দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে নিগার সুলতানার কাছে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন ভারতীয় তারকা ওপেনার স্মৃতি মান্ধানা। দলীয় ১৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। পাওয়ার প্লে শেষের আগেই আরও দুই উইকেট হারায় ভারত। অষ্টম ওভারে মারুফার দ্বিতীয় শিকার হন আরেক ওপেনার প্রিয়া পুনিয়া। মুর্শিদার হাতে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তার ২৭ বলে ১০ রানের ইনিংস। আর পাওয়ার প্লের শেষ বলে নাহিদার বলে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে পড়েন অধিনায়ক হারমানপ্রিত কৌর। ৫ রানেই থামে তার ইনিংস। যা সফরকারী দলকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়।
 
এরপর উইকেটে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি স্বস্তিকা ভাটিয়া এবং জেমিমা রড্রিগেজও। রাবেয়া খানের জোড়া শিকারে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন দুজনেই। ব্যক্তিগত ১৫ রানে বোল্ড হয়েছেন স্বস্তিকা। আর মুর্শিদার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন জেমিমা। স্কোরবোর্ডে ভারতের সংগ্রহ তখন ৫ উইকেটে ৬১ রান। এরপরেই ভারতের হয়ে হাল ধরেন দীপ্তি শর্মা এবং আমানজোত কৌর। দুজনের জুটি ছিল ত্রিশ রানের। তবে দলীয় ৯১ রানের মাথায় পরপর তিন উইকেট হারিয়ে বসে ভারত। মারুফা আক্তারের জোড়া আঘাতের পর বিধ্বংসী হয়ে উঠা দীপ্তি শর্মাকে আউট করেন নাহিদা। দীপ্তির বিদায়ে নিশ্চিত জয়ের পথেই এগোতে থাকে স্বাগতিকরা। সফরকারীদের হয়ে পুজা কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা চালান। সুলতানা খাতুনের বলে অধিনায়ক জ্যোতির কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনিও। সাজঘরে ফেরার আগে ১১ বলে ৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে। সফরকারীদের হয়ে শেষ ব্যাটার হিসেবে রানআউটের শিকার হন বারেদি আনুশা। আর তাতেই নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের জয়। স্বাগতিকদের হয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন মারুফা আক্তার ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন।
 
অন্যদিকে দলে নতুন মুখ রাবেয়া ৩ উইকেট পেয়ে নিজের সেরাটা নিংড়ে দিয়েছেন। এছাড়া একটি করে উইকেট গেছে নাহিদা আক্তার এবং সুলতানা খাতুনের ঝুলিতে। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়ে বাংলাদেশের মেয়েরা। দলীয় ১৪ রানেই ফিরে যান দুই ওপেনার মুর্শিদা খাতুন ও শারমিন আক্তার। শাররমিন তো ১৮ বল খেলে ফিরে গেছেন শুন্য রানে। এরপরই দলের হাল ধরেন অধিনায়ক জ্যোতি এবং ফারজানা। দুজনের ৪৯ রানের জুটি ভাঙেন আমানজোত কৌর। ব্যক্তিগত ২৭ রানে ফেরেন ফারজানা। উইকেটে এসে সুবিধা করতে পারেননি রিতু মনি। আর দলীয় ১০৩ রানের মাথায় আমানজোতের বলেই এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে পড়েন অধিনায়ক জ্যোতি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৯ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। জ্যোতির বিদায়ের পর বড় ইনিংস খেলতে পারেননি বাকিদের কেউই।
 
যদিও শেষ দিকে ফাহিমার ২৯ বলে ১২ এবং সুলতানার ২০ বলে ১৬ রানের সুবাদে দেড়শ পার করে বাংলাদেশের মেয়েরা। ভারতের পক্ষে আমানজত কৌর নিয়েছেন ৪ উইকেট। ২ উইকেট পেয়েছেন দেবীকা বিদ্যা। এক উইকেট পেয়েছেন দীপ্তি শর্মা। আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ দলের কথা ম্যাচের আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন অধিনায়ক জ্যোতি। কিন্তু ওয়ানডেতে ভারতের মতো কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সেই আত্মবিশ্বাসের বাস্তব প্রয়োগ দেখানোই ছিল চ্যালেঞ্জ। কিন্তু জ্যোতিরা কথা রেখেছেন। জ্যোতির দায়িত্বশীল ইনিংস আর মারুফা আক্তারের তেজদীপ্ত বোলিংয়ে পুড়েছে ভারত। ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের প্রথম জয় এবং এই সংস্করণে নিজেদের মাঠেও তাদের বিপক্ষে প্রথম জয়। ভারতকে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসের প্রেরণা পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেটির বাস্তবায়ন ঘটেছে ৫০ ওভারের ম্যাচে।
পথরেখা/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।