পথরেখা অনলাইন : নিজেদের প্রিয় ফরম্যাট ওয়ানডে সিরিজে হারলেও টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে ঠিকই জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। কাকতালীয়ভাবে দুই ফরম্যাটেরই অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। অন্যদিকে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে তামিম ইকবাল অধিনায়ক থাকলেও শেষ দুটি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন লিটন দাস। ২-১ ব্যবধানে ৫০ ওভারের সিরিজটা হারলেও টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ ঠিকই প্রভাব বিস্তার করেছে। সামনেই এশিয়া কাপ এরপরই বিশ্বকাপের আসর বসতে যাচ্ছে। সে হিসেবে এশিয়া সেরার আসরের আগে আত্ববিশ্বাসের বড় জ্বালানী পেয়েছে লাল সবুজ প্রতিনিধিরা। আর কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে সিরিজ সেরার পুরস্কার জিতে দারুণ চনমনে সুপারস্টার সাকিব আল হাসান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ দল। রোববার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আফগানদের ৬ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়েছে সাকিবের নেতৃত্বাধীন দল। দারুনভাবে জয়ের পর আত্ববিশ্বাস বেড়েছে চন্ডিকা হাথুরু সিংহের শীষ্যদের।
এমন সিরিজ জয় সামনের দিকে ভালো করতে আরও আত্মবিশ্বাস জোগাবে বলে টাইগার অধিনায়ক সাকিব বলেন, ‘প্রথমবারের মতো সিরিজ জিতে অবশ্য ভালো লাগছে। কারণ ওদের সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে খুব ভালো রেজাল্ট ছিল না এর আগ পর্যন্ত। যেহেতু এ রকম কন্ডিশনে ওদের সঙ্গে একটি সিরিজ জিততে পারলাম, আমার কাছে মনে হয় এটা আমাদেরকে সামনের দিকে আত্মবিশ্বাস দেবে ভালো ফলের জন্য।’ চলতি বছরে আর কোনো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নেই বাংলাদেশের। যে কারণে অধিনায়ক সাকিব বলছিলেন, ‘টি-টোয়েন্টি মোমেন্টাম খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখন পর্যন্ত মোমেন্টাম ভালো আছে। এরপর কবে টি-টোয়েন্টি জানিও না। আশা করি জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির দিকে হবে বিপিএলের পরপর।’ ‘বিপিএলের পরপর আমাদের দেশীয় ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স ভালো থাকে। আমি হোপফুল যে বিপিএলটা হবে ওখানে যারা পারফর্ম করে ওদেরকে নিয়ে আমরা সামনের দিকে আগাবো। আমরা ভালো রেজাল্টগুলো করতে থাকবো’- যোগ করেন সাকিব।
এদিকে সিলেট মাঠের সর্বশেষ ম্যাচের উইকেটের আচরণ নিয়ে সাকিব বলেন, ‘এশিয়া কাপের আগে দলের এমন পারফরম্যান্স আমাদের জন্য আত্ববিশ্বাসের জ্বালানী হিসেবে কাজ করবে। আমরা মাঝে বেশ কয়েকটি উইকেট হারিয়েছে। এমন উইকেটে স্পিনারদের বল করা কঠিন ছিল। আমাদের বিশ্বাস ছিল এই রান তাড়া করতে পারবে। দিনের বেলায় এখানে ভালো সিম হচ্ছিল এবং বাউন্স পাচ্ছিল পেসাররা।’ আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল টি-টোয়েন্টিতে পিছিয়ে রয়েছে। সে কারণেই সিরিজ শুরুর আগে ভক্ত-সমর্থকদের মনে একটা ধারণা ছিল ক্রিকেটের ছোট এই ফরম্যাটে আফগানদের বিপক্ষে কেমন করবে বাংলাদেশ। তবে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান সিরিজ শুরুর আগে বলেছিলেন, যাকে ইচ্ছা ফেভারিট বলতে পারেন, তবে আমি সিরিজ জিততে চাই। এদিকে সিরিজ সেরায় সাকিবের আগে কেবল শচীন টেন্ডুলকার ও বিরাট কোহলি। বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামলে নিজের সেরাটা দিতে ভুল করেননা সাকিব আল হাসান।
কখনো নিজের ব্যাটিং, কখনোবা বোলিং, আবার ব্যাটে-বলে সমানতালেও লড়তে দেখা গিয়েছে এই ক্রিকেটারকে। মাঠের বাইরের শত বিতর্ককে পাশ কাটিয়ে সাকিব বারবার ফিরেছেন নায়কের বেশে। মাঠে খেলতে নামবেন টাইগার এই অধিনায়ক, আর রেকর্ড হবে না এমন দিন অবশ্য খুব কমই এসেছে সা¤প্রতিক সময়ে। যার সবশেষ উদাহরণ দেখা গেলো সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাই করেছে টাইগাররা। এদিন ম্যাচ সেরার পাশাপাশি সিরিজ সোরার খেতাবও জিতেছেন সাকিব আল হাসান। সিরিজ সেরা পুরস্কার হাতে নিয়েই নতুন রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সিরিজ সেরা হিসেবে তার আগে কেবল রয়েছে শচীন টেন্ডুলকার এবং ভিরাট কোহলি। সবমিলিয়ে সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৭ তম সিরিজ সেরার পুরস্কার এটি। ২০ টি সিরিজ সেরার পুরস্কার শচীনের এবং কোহলিরও রয়েছে ২০ টি। এদিকে আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে ১১তম ম্যাচ সেরা এটি সাকিবের, এরচেয়ে বেশি কেবল তিন ক্রিকেটারের রয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পাঁচ নাম্বার সিরিজ সেরার পুরস্কার এটি সাকিবের। এরচেয়ে কেবল একটা বেশি ভিরাট কোহলির। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের ৪২ তম ম্যাচ সেরার পুরস্কার ছিল এদিনের ম্যাচটি। এরচেয়ে বেশিবার ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন কেবল ৭ ক্রিকেটার। সে হিসেবে আরও পুরস্কার জেতার সম্ভাবনা রয়েছে তার।
পথরেখা/আসো