পথরেখা অনলাইন : কয়েকটি ভুলভ্রান্তিতেই কিডনির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে। তাই সময় থাকতে থাকতে এইসব ভুল শুধরে নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।মানব শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হল কিডনি। এই অঙ্গটি মূত্র তৈরি থেকে শুরু করে, ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ, হরমোন তৈরি সহ একাধিক জরুরি কাজ একা হাতে সামলায়। তাই সব বয়সিদেরই বৃক্কের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। নইলে যে অচিরেই বড়সড় বিপদের মুখে পড়তে হবে,
তাই বিপদ ঘটার আগেই কিডনির অসুখের খপ্পরে পড়ার ৫ সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে জেনে নিন। আর যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। তবেই কিন্তু আপনার সুস্থ থাকার পথ প্রশস্থ হবে।
১. অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবিটিসই
ডায়াবিটিস একটি প্রাণঘাতী রোগ। এই অসুখের হাত ধরেই শরীরে প্রবেশ করে একাধিক জটিল সমস্যা। এমনকী হাই সুগার কিডনির ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র রক্তনালীরও ক্ষতি করে দেয়। এই কারণেই ধীরে ধীরে নিজের কার্যক্ষমতা হারায় বৃক্ক। আর এই সমস্যারই বিজ্ঞানসম্মত নাম হল ডায়াবিটিক নেফ্রোপ্যাথি। তাই বৃক্কের হাল ফেরাতে চাইলে অবশ্যই ব্লাড সুগারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আর এই কাজটি করতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো নিয়মিত ওষুধ খান। সেই সঙ্গে ডায়েট ও জীবনযাত্রায় বদল আনুন। তাহলেই সুস্থ-সবল জীবনযাপন করতে পারবেন।
২. হাই ব্লাড প্রেশার
শেষ কয়েক দশকে হাই ব্লাড প্রেশারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর সবথেকে চিন্তার বিষয় হল, এই অসুখটিকে ঠিক সময়ে বাগে না আনতে পারলে কিডনির উপর মারাত্মক চাপ পড়ে। এমনকী কিডনির রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। তাই তো সুস্থ-সবল জীবনযাপন করার ইচ্ছে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো প্রেশারের ওষুধ খান। আর অবশ্যই তেল, ঝাল, মশলা এবং নুন খাওয়া কমান। এর পরিবর্তে সবুজ শাক ও সবজির রকমারি পদ পাতে রাখুন। এতেই আপনার প্রেশার চলে আসবে নিয়ন্ত্রণে।
৩. পেইনকিলার
ব্যথার সমস্যায় ভুক্তভোগীদের মধ্যে অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া একাধিক পেইনকিলার খেয়ে নেন। এতে ব্যথা কমে যায় ঠিকই, তবে কিডনির বাজে বারোটা। এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি ড্রাগস জাতীয় কিছু ওষুধ বেশি মাত্রায় খেলে কিডনির গুরুতর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথার ওষুধ ভুলেও খাবেন না।
৪. ডিহাইড্রেশন
কিডনির সবথেকে ভালো বন্ধু হল জল। তাই কিডনিকে সুস্থ রাখতে চাইলে আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে জলপান করতেই হবে। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণ জলপান করেন না। আর এই কারণেই কিডনির উপর বিরাট চাপ পড়ে এমনকী এই কারণে কিডনির কার্যক্ষমতাও উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায় তাই কিডনিকে সুস্থ রাখতে দিনে ২ থেকে ৩ লিটার জলপান মাস্ট।
৫. মদ্যপান ও ধূমপান
এমন বদভ্যাসের দরুন একাধিক জটিল অসুখের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এমনকী এই দুই মারণ নেশার কারণে কিডনির ছোট ছোট রক্তনালীও শক্ত হয়ে যেতে পারে। ফলে বৃক্কের পক্ষে নিজের কাজ ঠিকমতো করা এক প্রকার অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। তাই সুস্থ থাকার ইচ্ছে থাকলে মদ্যপান এবং ধূমপানের মতো মারণ নেশা ত্যাগ করুন।
পথরেখা/অআ