পথরেখা অনলাইন : বাঙালির সান্ধ্যকালীন মুড়িমাখায় কয়েক ফোঁটা সরষের তেলের ঝাঁঝ না হলে চলে কি? আবার ইলিশ ভাপা তৈরির সময় প্রাণ ভরে সরষের তেল ঢাললে স্বাদও যেমন খোলতাই হয়, তেমনই মনও ভাল হয়ে যায়। কিন্তু এ তো সবই খাওয়া-দাওয়ায় সরষের তেলের কথা। অথচ এই তেল সৌন্দর্য বাড়ানো থেকে শুরু করে রোগ নিরাময়েও সাহায্য করে। হৃৎপিণ্ড, ত্বক, পেশি, গাঁ হাজারো সমস্যার মোকাবিলায় সরষের তেলের বিকল্প নেই। দেখে নেওয়া যাক এই তেলের গুণগুলো।
কিছু পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সরষের তেলের ভিতর থাকে ক্যানসার প্রতিরোধের গুণ। এই তেলে থাকা লিনোলেনিক অ্যাসিড ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিণত হলে তা স্টম্যাক ও কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
সরষের তেলে ভাল পরিমাণে মোনোস্যাচিউরেটেড ও পলিআনস্যাচিউরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, ওমেগা থ্রি ও সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। ফলে ইসকেমিক হার্ট ডিসিজ হওয়ার প্রবণতা কমে যায় প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ। সরষের তেল শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল লেভেল কমিয়ে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে কার্ডিয়ো ভাস্কুলার ডিসিজের প্রবণতাও কমে।
প্রাকৃতিক উদ্দীপক হওয়ার জন্য সরষের তেল খিদে বাড়ানো ও দ্রুত হজমে সাহায্য করে।কখনও হঠাৎ পাওয়া চোটে পেশি অবশ হয়ে গিয়েছে? সরষের তেল দিয়ে মাসাজ করুন। দ্রুত ফিরে পাবেন সংবেদনশীলতা।সরষের তেল আমাদের ঠান্ডার সমস্যাতেও কাজে লাগে। সামান্য রসুন বাটা দিয়ে সরষের তেল মিশিয়ে বুকে ও পিঠে মালিশ করলে আরাম লাগবে। এ ছাড়া স্টিমিং পদ্ধতিতে গরম জলের সঙ্গে সরষের তেলের ঝাঁঝ নিলেও সর্দি-কাশি থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া যায়।
রোজ সরষের তেল দিয়ে মাসাজ করলে গাঁটের ব্যথা ও আর্থ্রাইটিসের সমস্যা কমে। পেশি সচল হয়। আবার শ্বাসজনিত নানা সমস্যা, হাঁপানিতে সরষের তেল বুকে মাসাজ করলে আরাম পাওয়া যায়। দাঁতের যন্ত্রণা, হলদে ভাব কাটিয়ে সাদা রং ফিরিয়ে আনতে আধ চামচ সরষের তেল, এক চামচ হলুদ ও আধ চামচ নুন মিশিয়ে দাঁতে ঘষুন। রেহাই পাবেন দাঁতের সমস্যা থেকে।সরষের তেল মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী। ডিপ্রেশন কাটাতে, স্মৃতিশক্তি ও মনঃসংযোগ বাড়াতে সরষের তেলের ভূমিকা অদ্বিতীয়।তাই শরীর সুস্থ রাখতে সরষের তেল কাজে লাগাতে পারেন।
পথরেখা/অআ