• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৯:৩৮

হতাশা আর আক্ষেপের নাম এশিয়া কাপ ক্রিকেট

বিশেষ প্রতিবেদন : এশিয়া কাপ ক্রিকেট যেন বাংলাদেশের কাছে হতাশার আরেক নাম হয়ে আেছ। শিরোপার আক্ষেপ ঘুচবে কবে সেই উত্তরও পাওয়া যাচ্ছেনা। এশিয়া কাপ শুরু হয় ১৯৮৩ সালে যখন এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করা হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহতে এশিয়া কাপ প্রথম অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৪ সালে। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপে অংশ নেয় ১৯৮৬ সালে, যা আয়োজন করা হয় শ্রীলংকায়। ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে টাইগাররা যৌথভাবে এশিয়া কাপের ১৪টি আসরে অংশ নিয়েছে, যা টুর্নামেন্টের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অংশগ্রহণের নজির। ওয়ানডে ফরম্যাটে আয়োজিত এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত ৪৩ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে সাতটি জয়ের বিপরীতে বাকি ৩৬টি ম্যাচেই হারের তেতো স্বাদ পেয়েছে টাইগাররা। আর টি-টোয়েন্টি সংস্করণে সাত ম্যাচে তিন জয়ের বিপরীতে টাইগারদের হার চারটিতে। গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর নেতৃত্বে প্রথমবার তিন জাতির এশিয়া কাপে অংশ নেয় বাংলাদেশ। সেই সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিক শ্রীলংকা, আসরে দুই ম্যাচ খেলে একটিও জয় না পেয়ে বাদ পড়ে বাংলাদেশ। আয়োজক দেশ হিসেবে ১৯৮৮ এশিয়া কাপে অভিষেক হয় বাংলাদেশের। প্রথম আসর থেকেই সঙ্গী ছিল হতাশা।
 
এরপর ভারতের যুক্ত হওয়া সেই আসরেও তিনটি ম্যাচ খেলে একটিতেও জয়ের দেখা পায়নি লিপুর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। সেবারের শিরোপাজয়ী দল ছিল ভারত। এরপরের এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালে। তবে সেটা নিয়েও আছে নানান বিতর্ক। কেননা এশিয়ার চারটি দেশ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকা ছাড়াও সেবার এই আসরে অংশ নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। আসরের নামও ছিল অস্ট্রাল-এশিয়া কাপ। আরব আমিরাতে বসা সেই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় পাকিস্তান। সেবারও দুই ম্যাচ খেলে জয়ের দেখা পায়নি লিপু বাহিনী। আবারও শূন্য হাতে ফিরতে হয় টাইগারদের। তবে সেই বছরের ২৫ ডিসেম্বর আবারও অনুষ্ঠিত হয় এশিয়া কাপ। রাজনৈতিক কারণে ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত হওয়া সেই এশিয়া কাপে অংশ নেয়নি চিরপ্রতিদ্বন্ধী পাকিস্তান। বাংলাদেশ ও শ্রীলংকাকে সঙ্গে নিয়ে সেই আসর খেলে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। সেই আসরেও জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। সেই দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মিনহাজুল আবেদিন নান্নু।
 
১৯৯৫ সালের এশিয়া কাপেও একই চিত্র বাংলাদেশের। শারজাহতেও তিন ম্যাচ খেলে একটিতেও জয় পায়নি বাংলাদেশ। ভারত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সেই আসরে বাংলাদেশের নেতৃত্বে ছিলেন আকরাম খান। ৯৭ সালের এশিয়া কাপের আয়োজনের দায়িত্ব নেয় শ্রীলংকা। আসরে চ্যাম্পিয়নও হয় তারা। আকরাম খানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ তিন ম্যাচেই হেরে যায় সেবারও। ২০০০ সালে দ্বিতীয়বারের মতো এশিয়া কাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ। আমিনুল ইসলাম বুলবুলের অধীনে খেলে কাঙ্খিত জয় অধরাই থেকে যায় বাংলাদেশের। সে আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় পাকিস্তান। এর চার বছর পর ২০০৪ সালে নিয়মিত চার দলের বাইরে হংকং ও আরব আমিরাতকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীলংকার মাটিতে অনুষ্ঠিত হয় এশিয়া কাপ। ওই আসরেই ইতিহাসের সূচনা করে বাংলাদেশ। এই আসরে দেখা পায় অনেক কাঙ্খিত এশিয়া কাপের প্রথম জয়। আসরের প্রথম ম্যাচেই হংকংয়ের বিপক্ষে ১১৬ রানের বড় জয় তুলে নেয় হাবিবুল বাশার সুমনের বাংলাদেশ। যদিও আসরের বাকি দুই ম্যাচে ভারত ও শ্রীলংকার বিপক্ষে হেরে যায় তারা। প্রেমাদাসায় ফাইনাল ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিক শ্রীলংকা।
 
এই ছয়টি দলকে নিয়েই ২০০৮ সালে পাকিস্তানের মাটিতে অনুষ্ঠিত হয় এই টুর্নামেন্ট। এবার অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলের সেঞ্চুরিতে আরব আমিরাতের বিপক্ষে জয় পায় বাংলাদেশ। যদিও পাঁচ ম্যাচের বাকি চারটিতেই হেরেছিল টাইগাররা। এ আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় শ্রীলংকা। এর দুই বছর পর ২০১০ সালে আবার শ্রীলংকার মাটিতে এশিয়া কাপের আসর বসে। হংকং ও আরব আমিরাতকে বাদ দিয়ে আয়োজন করা সেই আসরে তিন ম্যাচে কোনো জয় পায়নি সাকিব আল হাসানের অধীনে খেলা বাংলাদেশ। সে আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। বাংলাদেশের জন্য মনে রাখার মতো এশিয়া কাপের আসর ছিল ২০১২ সালে। নিজ দেশের মাটিতে মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে খেলতে নামা বাংলাদেশের চেহারাই ছিল ভিন্ন। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হারলেও ভারত ও শ্রীলংকাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। যদিও ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে মাত্র দুই রানের ব্যবধানে হেরে যায় তারা। বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের সেই দিনটিকে এখনো সম্মানের সঙ্গে মনে করা হয়, ব্যর্থতার কালচিত্র অঙ্কন করেও ‘সফল’ হয়েছিল বাংলাদেশ। ২০১৪ সালেও নিজেদের মাঠে এশিয়া কাপ খেলে বাংলাদেশ।
 
সেই আসরে চারটি ম্যাচ খেলে একটিও জয়ের দেখা পায়নি তারা। শুরু থেকেই ৫০ ওভারের ওয়ানডে ম্যাচ খেলা হতো এশিয়া কাপে। পরে নিয়ম করা হয়, বিশ্বকাপ যে ফরম্যাটে হবে, সেই ফরম্যাটেই খেলা হবে এশিয়া কাপ। সেই সুবাদে ২০১৬ সালের এশিয়া কাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো হয় টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত সেই আসরে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকার পাশাপাশি যোগ দেয় আরব আমিরাত। মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার অধীনে খেলা বাংলাদেশ তাক লাগিয়ে দিয়েছিল সে আসরে। আরব আমিরাত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকাকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। তবে বৃষ্টিবিঘ্নিত ফাইনালে শিরোপা হাতে নিতে পারেনি বাংলাদেশ। ফাইনালে ভারতের কাছে আট উইকেটে হেরে আসর শেষ করতে হয় বাংলাদেশকে। দারুণ খেলে ২০১৮ সালে এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। লিটন দাসের সেঞ্চুরিতে জেতার সম্ভাবনাও হয়ে উঠেছিল উজ্জ্বল। তবে একদম কাছে গিয়ে তৃতীয়বারের মতো পুড়তে হয় আক্ষেপে। সেটা এখনো রয়েছে।
পথরেখা/আসো
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।