• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৯:৪১

বিশ্বকাপ নিয়ে আত্ববিশ্বাসী বাংলাদেশ

পথরেখা অনলাইন : পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে হারের পর এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল অনেকটা আনুষ্ঠানিকতা। সে কারণে রোহিত শর্মার দল বিরাট কোহলি, মোহাম্মদ সিরাজ, কুলদ্বীপ যাদবদের যেমন বিশ্রামে রাখেন তেমনি বাংলাদেশও তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদদের বাইরে রেখে একাদশ সাজায়। পরিবারকে সময় দিতে ছিলেন না মুশফিকুর রহিমও। এই দল নিয়ে জয়ের আশা করাটা অনেকের কাছেই বিলাসিতা মনে হয়েছিল। কিন্তু সাকিব আল হাসান জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শেষ করে দেশে ফিরতে চায় বলে পরিস্কারভাবে সংবাদ মাধ্যমকে বলেছিলেন। ঢাকায় তিনদিন কাটিয়ে কোন অনুশীলন না করেই ভারতের বিপক্ষে ৬ রানের জয়ে ম্যাচ সেরাও হয়েছেন টাইগার দলপতি। নয় মাস আগেও ঘরের মাঠে ভারতকে ওয়ানডে সিরিজ হারিয়েছে বাংলাদেশ। তবে এশিয়া কাপে এর আগে জয় ছিল মাত্র একটি। ২০১২ সালে মিরপুরে ভারতকে হারিয়েছিল টাইগাররা। এরপর আর পারেনি। দীর্ঘ ১১ বছর পর অবশেষে এই টুর্নামেন্টে ভারতকে হারাতে পারলো বাংলাদেশ। শুক্রবার রাতে এশিয়া কাপে সুপারফোর পর্বের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষ ওভারে ভারতকে ৬ রানে হারিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। জয়ের নায়ক সাকিব নিজেই।
 
দুর্দান্ত নেতৃত্বের সঙ্গে ব্যাটে-বলে ঝলক দেখিয়ে দলকে জয় এনে দেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। প্রথমে চাপের মুখে খেলেন ৮০ রানের ইনিংস। ৫৯ রানে ৪ উইকেট হারানো দলকে টেনে তুলতে তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে শতরানের জুটি গড়েন সাকিব। তাদের ওই জুটিতে ভর করেই ২৬৫ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। পরে বল হাতেও ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ২ মেইডেনসহ ৪৩ রানে একটি উইকেট নেন সাকিব। ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে কিংবা নেতৃত্ব; সাকিব ছিলেন এককথায় দুর্দান্ত। এশিয়া কাপে এক দশকেরও বেশি সময় পর ভারতকে হারানো। ব্যর্থতার এক টুর্নামেন্টের শেষটা রঙিন হলো জয়ে। তাও এমন এক প্রতিপক্ষ যারা কিনা পুরো টুর্নামেন্টে ছিল অপরাজিত। এমন এক রাতকে স্বাভাবিকভাবেই আলাদা করে মনে রাখতে চাইবে বাংলাদেশ। তবে এই জয়কেও ছাপিয়ে গিয়েছে অন্য এক স্বস্তি। ম্যাচ শেষ হওয়ার পরেই বাংলাদেশ দল পেল অন্যরকম এক সুখবর। পাকিস্তানের সঙ্গে নাটকীয় এক জয়ের পর আইসিসি ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশকে টপকে যায় শ্রীলঙ্কা। ৯৩ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে উঠে আসে এবারের আসরের ফাইনালিস্টরা।
 
বাংলাদেশ নেমে যায় আটে। তবে সেটা স্থায়ী হয়নি। ভারতকে ৬ রানে হারিয়ে বাংলাদেশ আবার দখলে নিল ওয়ানডে র‍্যাঙ্কের সপ্তম অবস্থান। অবশ্য রবিবারের ফাইনালে যদি ভারত শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে যায় তবে আবারও বাংলাদেশ চলে যাবে ৮ম স্থানে। বর্তমানে টাইগারদের রেটিং ৯৪। আর শ্রীলঙ্কার রেটিং পয়েন্ট ৯৩। রবিবারের ম্যাচ শেষ ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে আরও রদবদলের সম্ভাবনা আছে। ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে তিন আছে ভারত। তাদের রেটিং ১১৪। শীর্ষে থাকা অস্ট্রেলিয়া এবং দুইয়ে থাকা পাকিস্তানের রেটিং ১১৫। যদিও পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় ১ম স্থানে থাকছে অজিরাই। এমন অবস্থায় এশিয়া কাপের ফাইনালে জয় পেলে সেখানেও পরিবর্তন আসতে পারে। উল্লেখ্য, এশিয়া কাপের ফাইনালে রোববার রেকর্ড ৭ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৩টায়। বলাবাহুল্য এশিয়া কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নও স্বাগতিকরা। ভারত ম্যাচ নিয়ে নির্বিকার উত্তর ছিল সাকিবের, ’শুধু জিততে চাই’। ভারতের বিপক্ষে শুধু জিততেই যে কামব্যাক, দৃঢ়তা, শেষ পর্যন্ত লড়াই এমন অনেক কিছুর মধ্যে দিয়ে যেতে হবে সাকিবের তা অজানা নয়। হলোও তাই।
 
ব্যাটিং বিপর্যয়, তা সামলে নেওয়া এবং বল হাতে শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াই করে রোহিতদের ৬ রানে হারিয়েছে টাইগাররা। রাঙিয়েছে এশিয়া কাপের শেষটা। প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। একাদশে পাঁচ পরিবর্তন এনেও টপ অর্ডারের ধস থামানো যায়নি। দলের ৫৯ রানের মধ্যে লিটন দাস (০), মিরাজসহ (১৩) একাদশে ফেরা তানজিদ তামিম (১৩) ও এনামুল হক (৪) ফিরে যান। ওই বিপর্যয় সামাল দেন সাকিব ও তাওহীদ হৃদয়। তারা ১০১ রানের জুটি গড়েন। দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা সাকিব আল হাসান ৮৫ বলে ৮০ রান করে আউট হন। ছয়টি চার ও তিনটি ছক্কার শট তোলেন এই ব্যাটার। তাওহীদ হৃদয় খেলেন ৮১ বলে ৫৪ রানের দরকারি ইনিংস। তার ব্যাট থেকে পাঁচটি চার ও দুটি ছক্কা আসে। শেষটায় নাসুম ৪৫ বলে ছয় চার ও এক ছক্কায় ৪৪ এবং শেখ মাহেদী ২৯ ও তানজিম সাকিব ১৪ রান করেন। বাংলাদেশ ৮ উইকেটে তোলে ২৬৫ রান। আগেই আসরের ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলা ভারত জবাব দিতে নেমে এক প্রান্ত দিয়ে নিয়মিত উইকেট হারালেও অন্য প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন শুভমন গিল। তিনি খেলেন ১৩৩ বলে ১২১ রানের অসাধারণ ইনিংস। আটটি চার ও পাঁচটি ছক্কা তোলেন এই ওপেনার। তার ইনিংসেই জয় দেখছিল ভারত।
 
কিন্তু তাকে শেখ মাহেদী তুলে নিয়ে দলকে ম্যাচে ফেরান। এর আগে ওপেনার রোহিত প্রথম ওভারেই শূন্য করে ফেরেন। তিনে নামা তিলক ভার্মাকেও তুলে নেন অভিষেক হওয়া তরুণ পেসার তানজিম সাকিব। এমনকি মিডল অর্ডারের কেএল রাহুল (১৯), ইশান কিষাণ (৫), সূর্যকুমার (২৬) ও রবিন্দ্র জাদেজা (৭) ব্যর্থ হন। লোয়ার অর্ডারে অক্ষর প্যাটেল ৩৪ বলে ৪২ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলে ম্যাচ বের করে নিচ্ছেলেন। ৪৯তম ওভারে শার্দুল ঠাকুর ও অক্ষরকে ফিরিয়ে দলকে জয়ের পথে তুলে নেন মুস্তাফিজুর রহমান। শেষ ওভারে মোহাম্মদ শামিকে রান আউট করে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। দলের হয়ে মুন্তাফিজ-তানজিম ছাড়াও কার্যকরী দুই উইকেট নিয়েছেন শেখ মাহেদী। আসর থেকে আগেই বিদায় নিলেও দল হয়ে দৃঢ়তার এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
পথরেখা/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।