• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০১:০৭
কেনো ফাইনালে সর্বনিন্ম দলীয় রান ৫০

শ্রীলংকাকে গুড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন ভারত

পথরেখা অনলাইন : পেসার মোহাম্মদ সিরাজের আগুন ঝড়ানো বোলিংয়ে এশিয়া কাপে ওয়ানডে ফরম্যাটের ১৬তম আসরে শিরোপা জিতলো ভারত।  ১৭ সেপ্টেম্বর টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভারত ১০ উইকেটে বড় ব্যবধানে হারিয়েছে শ্রীলংকাকে। এই নিয়ে সর্বোচ্চ আটবার এশিয়া কাপের শিরোপা জিতলো ভারত। বৃষ্টির কারনে ৪০ মিনিট পর খেলা শুরু হবার পর আড়াই ঘন্টার মধ্যে শেষ হলো ফাইনাল। 
 
শিরোপা নির্ধারনী ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ১৫ দশমিক ২ ওভারে ৫০ রানে অলআউট হয় গতবারের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলংকা। ৭ ওভারে ২১ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন সিরাজ। শ্রীলংকার পক্ষে কুশল মেন্ডিস সর্বোচ্চ ১৭ ও দুশান হেমন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অপরাজিত ১৩ রান করেন। জবাবে ৬ দশমিক ১ ওভারে বিনা উইকেটে ৫১ রান তুলে ২০১৮ সালের পর আবারও এশিয়া কাপের শিরোপা জিতলো ভারত। মাঝে ২০২২ সালের শিরোপা জিতেছিলো শ্রীলংকা। এ ম্যাচে শ্রীলংকা মোট ৯২ ও ভারত ৩৭ বল খেলেছে। ওয়ানডে ইতিহাসে সবচেয়ে ছোট ম্যাচের দিক দিয়ে এটি তৃতীয়। ১০৪ বলে ম্যাচ শেষ করার বিশ^ রেকর্ড ২০২০ সালে করেছে নেপাল ও যুক্তরাষ্ট্র।  কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেন শ্রীলংকার অধিনায়ক দাসুন শানাকা।
 
প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই শ্রীলংকার ওপেনার কুশল পেরেরাকে শিকার করেন ভারতের পেসার জসপ্রিত বুমরাহ। ভারতের উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুলকে ক্যাচ দিয়ে ২ বল খেলে শূণ্য হাতে প্যাভিলিয়নে ফিরেন পেরেরা। ইনিংসের পরের ওভারে মেডেন নেন সিরাজ। তবে ইনিংসের চতুর্থ ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে বিধ্বংসী রূপ দেখান সিরাজ। ৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তিনি।  ওভারে সিরাজের প্রথম ডেলিভারিতে পয়েন্টে রবীন্দ্র জাদেজাকে ক্যাচ দিয়ে ২ রানে ফিরেন ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। তৃতীয় বলে লেগ বিফোর আউট হন সাদিরা সামারাবিক্রমা। রিভিউ নিয়েও উইকেট বাঁচাতে পারেননি রানের খাতা খুলতে না পারা সামারাবিক্রমা। পরের ডেলিভারিতে কভারে ইশান কিশানকে ক্যাচ দিয়ে খালি হাতে বিদায় নেন চারিথ আসালঙ্কা। পরপর দুই বলে উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেন সিরাজ। কিন্তু বাউন্ডারি মেরে বঞ্চিত করেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। তবে ওভারের শেষ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ২ বলে ৪ রান করা ধনাঞ্জয়া।  সিরাজের তোপে ৪ ওভার শেষে ১২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে মহাবিপদে পড়ে শ্রীলংকা। ওয়ানডে ইতিহাসে কোন টুর্নামেন্টের ফাইনালে দ্রুত পাঁচ উইকেট পতনের দ্বিতীয় ঘটনা এটি। ইনিংসের ষষ্ঠ  ও নিজের তৃতীয় ওভার বল করতে এসে উইকেট শিকার অব্যাহত রাখেন সিরাজ। ওভারের চতুর্থ বলে শ্রীলংকার অধিনায়ক শানাকাকে আউট সুইংয়ে বোল্ড করেন সিরাজ। শানাকাকে আউট করে  ২৯তম ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত ইনিংসে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন সিরাজ। এতে ষষ্ঠ ওভারে ১২ রানে ৬ উইকেট হারায় শ্রীলংকা। এর মাধ্যমে ওয়ানডে ক্রিকেটে  দ্রুত ৬ উইকেট হারানোর রেকর্ডে যৌথভাবে দ্বিতীয়স্থানে নাম লেখায় লংকানরা। ৩ ওভারে ৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে রেকর্ড বইয়ে নাম লেখান  সিরাজ। ২০০২ সালের পর ওয়ানডেতে ভারতের হয়ে প্রথম ১০ ওভারে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারে এখন শীর্ষে সিরাজ। ১২ রানে ষষ্ঠ উইকেট পতনের পর সপ্তম উইকেটে ৩৪ বলে ২১ রানের জুটি গড়েন শ্রীলংকার কুশল মেন্ডিস ও দুনিথ ওয়েলালাগে। ১২তম ওভারে ষষ্ঠ ওভার করতে এসে মেন্ডিস-ওয়েলালাগের জুটি ভাঙ্গেন সিরাজ। ৩টি চারে ১৭ বলে ৩৪ রান করা মেন্ডিসকে বোল্ড করে নিজের ষষ্ঠ উইকেট শিকার করেন  সিরাজ। মেন্ডিসের বিদায়ে ৩৩ রানে সপ্তম উইকেট হারায় শ্রীলংকা। এরপর লংকানদের শেষ ৩ উইকেট তুলে নেন পেসার হার্ডিক পান্ডিয়া। শেষ পর্যন্ত ১৫ দশমিক ২ ওভারে ওয়ানডে ফর্মেটে নিজেদের দ্বিতীয় সর্বনিন্ম  ৫০ রানে অলআউট হয় শ্রীলংকা। তবে ৫০ ওভার ফর্মেটে ভারতের বিপক্ষে এটিই সর্বনিন্ম দলীয় রান লংকানদের। আর ওয়ানডেতে কোন ফাইনালেও এটিই সর্বনিন্ম দলীয় রান। ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন নয় নম্বরে নামা দুশান হেমন্ত। দলের পক্ষে মেন্ডিস ও হেমন্তই  কেবলমাত্র  দুই অংকের কোটা স্পর্শ করতে সক্ষম হন। শ্রীলংকার পুরো ইনিংসে ৫টি বাউন্ডারি হয়। ভারতের সফল বোলার সিরাজ ৭ ওভারে ১ মেডেনে ২১ রানে ৬ উইকেট নেন। এটিই তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। এ ম্যাচেই আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে উইকেটের হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সিরাজ। এছাড়া পান্ডিয়া ৩ রানে ৩ ও বুমরাহ ২৩ রানে ১ উইকেট নেন।
 
জয়ের জন্য ৫১ রানের সহজ টার্গেটে ইশান কিশানকে নিয়ে ইনিংস শুরু করেন বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা শুভমান গিল। প্রথম দুই ওভারে ১৭ রান তুলেন গিল ও কিশান। পেসার প্রমোদ মদুশানের করা তৃতীয় ওভারে গিলের ৩টি চারে ১৫ রান পায় ভারত। পঞ্চম ওভারে ১টি করে চারে ১১ রান তুলেন গিল ও কিশান। এতে ৫ ওভার শেষে ৪৫ রান তুলে ফেলে ভারত। ষষ্ঠ ওভারে গিলের বাউন্ডারিতে  ৫ রান তুলে শ্রীলংকার স্কোর স্পর্শ করে ভারত। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে ১ রান নিয়ে ভারতের শিরোপা নিশ্চিত করেন কিশান। ৩টি চারে ১৮ বলে অপরাজিত ২৩ রান করেন কিশান। ৬টি বাউন্ডারিতে ১৯ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন গিল। ২৬৩ বল বাকী রেখেই ম্যাচ জিতে নেয় ভারত। সবচেয়ে বেশি বল হাতে রেখে এটিই বড় জয় ভারতের। সবচেয়ে বেশি বল হাতে রেখে ওয়ানডেতে কোন ফাইনাল জয়ের বিশ্ব রেকর্ড গড়লো ভারত। ওয়ানডেতে কোন ফাইনাল ১০ উইকেটে জয়ের তৃতীয় নজির এটি। এরমধ্যে ভারতই দু’বার ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতে। 
 
শ্রীলংকা : ৫০/১০, ১৫.২ ওভার (মেন্ডিস ১৭, হেমান্থা ১৩*, সিরাজ ৬/২১, পান্ডিয়া ৩/৩)
ভারত : ৫১/০, ৬.১ ওভার (গিল ২৭*, কিশান ২৩*)
ফল : ভারত ১০ উইকেটে জয়ী
পথরেখা/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।