পথরেখা অনলাইন : ক্রিকেট বিশ্বকাপে এরই মধ্যে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ, তবে অস্ট্রেলিয়ার এখনো টিকে আছে। ১৬ নভেম্বর সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার মোকাবেলা করবে। একইদিন বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাইপর্বে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ দল। সময়ের হিসেবে ৮ বছর পর মাঠে নামতে যাচ্ছে দুই দল। খেলাটি অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে হওয়ায় শক্তি ও সামর্থের বিচারে নিশ্চিতভাবেই এগিয়ে থাকবে স্বাগতিকরা। সেখানে বাংলাদেশের লক্ষ্য লড়াই করা। এটি বিশ্বকাপ বাছাইয়ে গ্রুপ পর্বের প্রথম খেলা। তিন দিন হয়ে গেল বাংলাদেশ ফুটবল দল এখন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে। সেখানকার কন্ডিশনে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন ফুটবল দলের খেলোয়াড়েরা। একদিকে কন্ডিশন, অন্যদিকে পাহাড়সম শক্তিশালী প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। তিন দিক থেকেই বেকায়দায় বাংলার ফুটবলাররা। দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা ওপরে ওপরে যা-ই বলুন না কেন, ভেতরে তার টেনশন এক রত্তি কম নয়। আর যাই হোক, দলটার নাম অস্ট্রেলিয়ার। টানা চারটা বিশ্বকাপে খেলছে।
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতাটা একেবারেই তরতাজা। কী পরিকল্পনায় খেলবে বাংলাদেশ, সেই চিন্তায় ছক আঁকছেন কাবরেরা। কোচের পরিকল্পনা হচ্ছে, যতটুকু পারা যায় কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া। শক্ত মানসিকতা রাখা এবং আত্মবিশ্বাস যেন পূর্ণ থাকে। অস্ট্রেলিয়া বড় দল, তাদের বিপক্ষে জয়ের চেয়েও কোচের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিজেদের খেলাটা যেন খেলতে পারে বাংলাদেশ। আক্রমণ নিয়ে এখনই ভাবছে না। গোলপোস্টে কোনো ত্রুটি যেন না থাকে। গোলমুখে তালা দিতে চাইছেন কোচ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা নেই গোলরক্ষক মিতুলের। জানা আছে অজিরা কতটা শক্তিশালী। মিতুল বৃহস্পতিবারের ম্যাচে খেলবেন, তাকে নিয়ে সহকারী কোচ কাজ করছেন। মিতুল এর আগে দুই ম্যাচ খেলেছেন। ভালো পারফরম্যান্স করেছেন। আস্থা তৈরি করা গোলরক্ষক মিতুল চাইছেন নিজের সেরাটা দেবেন।
সে কারণেই মিতুল বলছেন, ‘যতগুলো খেলা আছে, সবগুলোই ফাইটিং ম্যাচ। অস্ট্রেলিয়া অনেক শক্তিশালী। ওদের সঙ্গে খেলতে গেলে আমাদের অনেক কিছু করতে হবে। আমরা ডিফেন্স নিয়ে কাজ করছি। অন্য সব গোলরক্ষক চায় যেন গোল না খায়। আমারও চেষ্টা। আমাদের মূল টার্গেট হচ্ছে ডিফেন্সটা শক্তিশালী করা। কাউন্টার আক্রমণে খেলতে পারি, সেটা নিয়ে কাজ করছি।’ জাতীয় দলের সাম্প্রতিক সময়ে যারা খুব বেশি ভালো খেলেছেন, তাদের এক জন বিশ্বনাথ ঘোষ। মাঠ দাপিয়ে খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রক্ষণভাগ সামাল দিতে হবে। তবে বিশ্বনাথ মনে করেন, শুধু রক্ষণভাগই নয়, পুরো দলটাই এক সুতায় গাঁথা। আমরা সবকিছু নিয়েই কাজ করছি। ব্লক করতে হবে কীভাবে, সেটা নিয়েই বেশি হচ্ছে। লো ব্লক, মিড ব্লক নিয়ে বেশি কাজ হচ্ছে।’ বিশ্বনাথের কথায় পরিষ্কার, বাংলাদেশের টার্গেট হচ্ছে মাঝমাঠ পর্যন্ত খেলা। অস্ট্রেলিয়া যেন বাংলাদেশের ঘরে আক্রমণ করতে না পারে। করলেও যেন খুব সহজেই ঘর না ভাঙতে পারে।
কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা চাইছেন অস্ট্রেলিয়ার দুর্বলতার সুযোগ নিতে। তার আগে অস্ট্রেলিয়ার ঝড়ে নিজের ঘর যেন না ভেঙে যায়। অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা জামাল ভুঁইয়াদের অনুশীলন দেখতে যাচ্ছেন। তারা অনেক খুশি। যদিও বাস্তবতা জানেন অস্ট্রেলিয়া আর বাংলাদেশের ফুটবল পার্থক্য। তার পরও আশায় বুক বাঁধছেন, যেন ভালো খেলতে পারেন। ঠান্ডার মধ্যে গরম কাপড় গায়ে দিয়ে এলেও তারা বাংলাদেশের লাল-সবুজ জার্সি গায়ে চড়িয়ে এসেছিলেন। আগের দিন এসেছিলেন দেশের পতাকা হাতে। কাল এলেন আরো বড় পরিসরে। জানিয়ে গেলেন সিডনি, অ্যাডিলেড থেকেও খেলার দিন দর্শক আসবে। ম্যাচের রেজাল্ট নিয়ে তারা ভাবছেন না। দেশের ফুটবলারদের প্রতি, দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে আসছেন বলে বাফুফের কাছে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেছেন। ফুটবল ১১ জনের খেলা। এখানে সবাইকে ভালো বা সেরাটা দিতে হবে। তবে অনেক সময় ম্যাচে প্রতিপক্ষ বুঝে বিশেষ পজিশনে গুরুত্ব দিতে হবে।
পথরেখা/আসো