• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১০:৪৪
মেজর অব. চাকলাদার

স্মৃতির আয়নায় দেখা ১

আব্বার পোস্টিং হল সাহেবগঞ্জে। এলাকাটির বাকেরগঞ্জের অন্তর্ভুক্ত। আমাদের স্কুল বাকেরগন্জ জীবন সিংহ বিদ্যালয়, বাবা আবার স্কুল সেক্রেটারিও। যেতে ৩০/৩৫ মিনিট লাগে। পথ প্রায় শুনসান। আধা মাইল দুরে স্টিমার অফিস। ওটা বাকেরগঞ্জের নদীর পারে সরিয়ে নেয়াতে এখন এলাকাটা একদমই নীরব। সুন্দরবনের কাছাকাছি হওয়াতে নদী পার হয়ে ছোট ছোট বাঘ দেখা যেত। যাকে এলাকার লোক ঘেত্রা বলে। সে গুলি গ্রামের বসত বাড়ির গরু-ছাগল মারতে নদী পার হয়ে চলে আসত।
 
বাবা বনেদী। পালতেন হরিণ। তাই হরিণ বাঁচাতে খুব সতর্ক থাকতেন। বাবার বন্দুক উইম্বলি এন্ড স্কট ওজনে হাল্কা তবে খুবই কার্যকর। সন্ধ্যা বেলা বাসাতে এলাকা অনান্য অফিস কর্তারা আসত চলত জমপেশ আড্ডা। আমার ভাইদের মধ্যে মেজ ভাই সফির টিপ ছিল দুর্দান্ত। একদিন বাসার সন্ধ্যার আড্ডাতে আলোচনা উঠল এলাকা থেকে ৮/৯ মাইল দূরে বাঘ এসে গরু, খাসি মেরে আখ ক্ষেতে ঢুকে যায়। এলাকার লোক ভয়ং আছে। ওসি কাকা মাকে বললেন- যেন বাবাকে বন্দুক নিয়ে বাঘ শিকারে যায়। মা দুম করে না বলে দিলেন। বললেন আপনারা যান। অথচ বাবা রাজি। কিছুতেই মা রাজি না, তখন ছেলেদের চাইলেন। মা তো রাগে উনাদের বলেই ফেললেন অনেক রাত হল আজ তাইলে আসুন। মার অগ্নিমূর্তি দেখে বলেল, তাইলে বন্দুকটাই দেন। থানার রাইফেল ত আছেই। ওতে সিংগল বুলেট, মিস হবার সম্ভাবনা বেশী। বাবা তখন মেজ ভাইকে বললেন, ইলি কার্টিজ এর চার আর ডাবল বি গোটা ছয়েক গুলি দিয়ে দিতে। বন্দুক আর গুলি নিয়ে চলে গেলেন।
 
পরদিন খুব ভোরে বাঘ হত্যা হবে। এখানে প্রায় প্রতি ২/৩ মাইল এলাকাতে বাঘ ধরার খাচা পেতে রাখে। খাচাটার পিছনে একটা ছাগল থাকে, ছাগল টা খুব শক্ত বেড়ার ভিতর থাকে। সামনে থাকে দরজা, সেটা উচুতে উঠানো, ফাঁকা দরদাতার মধ্যে থাকে একটা দড়ি, বাঘ ছাগল খেতে ঢুকলে ঐ দড়িটাতে ধাক্কা লাগলেই উচিত্ উঠানো ট্রাপ্ ডোরটা ঝপাস করে পরে যায়। লোকজন আঁশে পাশেই থাকে তারা আলগা মোটা মোটা মাটির ঢেলা দিয়ে খাঁচার চারপাশে বসিয়ে দেয়, নইলে আটকা পরা বাঘ যেভাবে দাপাদাপি করে তাতে খাচা উলট পালট খাবেই।
 
বহুবার খাঁচায় পরা বাঘ দেখেছি, একবার স্কুল থেকে ফেরার পর শুনলাম মুচিবাড়িতে বাঘ ধরা পরেছে। গেলাম খাঁচার পাশে। লোক জন নাইই বলা চলে। খাঁচার কাছে গিয়ে দেখি চারিদিকে মাটির ঢেলা থাকাতে খাঁচার ভিতর আধো অন্ধ কারে বাঘ একদম পিছনে, চোখ দুটি জ্বল জ্বল করছে। কিছুটা দুরে থাকাতে ভাল করে দেখতেই পারছিলাম না, স্কুলের ব্যাগ থেকে স্কেল বেড় করে খাঁচার ভিতর ঢুকিয়ে নাড়াতেই বাঘটা এত দ্রুত ঝাপাবে তা বুঝিই নাই। ফ্যাচ ফ্যাচ আওয়াজ করে একদম খাঁচার লোহার শিকে আছরে পরল। আমি চিৎপটাং। গায়ে আচর লাগে নি। পিঠাপিঠি ভাই আমরা, বললাম বাসাতে না জানাতে। এসে বলে দিল। মা শুনল, বাবা এসে বাঘেরেত আর মারতে পারে না, আমাকেই ধুমাধূম। ছোট বাঘ হলেও বাঘ। ঠিক হয়নি শাষিয়ে দিলেন। বাঘ মারতে সব্বাই চলল ৮/৯ মাইল দূরের শিবপুরে।(চলবে)
পথরেখা/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।