পথরেখা অনলাইন : ঘুর্নিঝড়ের প্রভাবটা ঢাকা টেস্টের প্রথমদিনই ছিল। দিনের শেষভাগে আলোর স্বল্পতায় আগেভাগেই খেলা শেষ করতে হয়। এরপর দ্বিতীয়দিনের খেলার পুরোটাই কেড়ে নিয়েছে বেরসিক বৃষ্টি। ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনে মাথায় মেঘ নিয়ে খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড। তবে সেদিন খেলা হয়েছে প্রায় পুরো দিনই। শেষ বিকেলে এসে আলোক স্বল্পতায় কয়েক ওভার কম খেলা হলেও বৃষ্টি হানা দেয়নি। তবে দ্বিতীয় দিনে এসে মিরপুরে খেলেছে শুধুই বৃষ্টি, নীরব দর্শক ছিলেন ক্রিকেটাররা! বৃহস্পতিবার কোনো বল মাঠে গড়ানোর আগেই দিনের খেলা পরিত্যাক্ত ঘোষণা করেছেন আম্পায়াররা। আগের দিন আলোকস্বল্পতার কারণে বাদ পড়া ওভার পুষিয়ে নিতে এদিন কিছুটা আগেভাগেই খেলা শুরুর কথা ছিল। কিন্তু বৃধবার রাত থেকেই শুরু হয়েছে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। এই ধারা অব্যাহত আছে সকাল থেকেই। একবারের জন্যও মিরপুরের উইকেট থেকে কাভার সরানো যায়নি।
সকাল থেকে বেশ কয়েকবার মাঠ পরিদর্শন করেছেন আম্পায়াররা। তবে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে খেলা চালিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি। ঘণ্টা কয়েকের অপেক্ষা শেষে দুপুর দুইটার দিকে দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন ম্যাচ অফিশিয়ালসরা। এদিকে শুক্রবারও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ দেশের ১৭টি অঞ্চলের ওপর দিয়ে পূর্ব/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কি.মি. বেগে অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবেই এমন বৃষ্টি বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই বৃষ্টি শুক্রবারও থাকতে পারে। দুপুর নাগাদ মিরপুরে বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তাই তৃতীয়দেনও মাঠে খেলা গড়ানো নিয়েও শঙ্কা থাকছে।
এর আগে প্রথম দিনে নিজেদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৭২ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। তবে শেষবিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপাকে পড়ে কিউইরাও। ৫৫ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় তারা। এদিকে দ্বিতীয়দিন দুপুর হতেই বৃষ্টির পরিমাণ আরও বেড়ে গেছে। আপাতত বৃষ্টি থামার সম্ভাবনা নেই দেখে দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা বন্ধ ঘোষণা করেছে ম্যাচ অফিশিয়ালরা। ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’ শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে। এর প্রভাবে টেস্টের প্রথম দিনও পড়েছিল। মেঘলা আকাশ, মাঝে মাঝে গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টিও ছিল। যদিও বিরূপ আবহাওয়া খেলায় বাধা হতে পারেনি, যথাসময়ে ফ্লাডলাইটের আলোয় শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের ঘূর্ণি যুদ্ধ।
তবে দ্বিতীয় দিন আর মাঠেই নামতে পারেননি ক্রিকেটাররা। মাঝে আম্পায়াররা ছাতা নিয়ে শুধুই মাঠে প্রবেশ করেছিলেন। তবে সম্ভাবনার কিছুই দেখতে পাননি। নিম্নচাপের প্রভাবে রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। মিরপুরে সকাল থেকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হলেও দুপুর হতে তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। ফলে ভেজা আউটফিল্ড, উইকেট থেকে কাভারে সরানোর কোনো উপায় ছিল না। প্রথমদিন খেলা হয়েছিল ৭৯ ওভার। ১১ ওভার খেলা কম হয়েছিল। সেটি পুষিয়ে নিতে দ্বিতীয়দিনের খেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল আরও ১৫ মিনিট আগে। সাড়ে ৯টা থেকে প্রতিদিন খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ৯টা ১৫ মিনিটে শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অফিশিয়ালরা। আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সারা দিন বৃষ্টি ও বিরূপ আবহাওয়া থাকার আভাস ছিল। মাঠে বল গড়ানোর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
তবে শুক্রবার থেকে টেস্টের বাকি ৩ দিন আবহাওয়া পরিষ্কার থাকবে, খেলায় সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কমই বলা চলে। নিজেদের পাতা স্পিনে ফাঁদে হাঁসফাঁস করে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়েছে দুইশ রানের আগে। তবে এরপরও বেশ ভালো অবস্থানে বাংলাদেশ। ঘূর্ণি থেকে রেহাই পাচ্ছে না নিউজিল্যান্ডও। তৃতীয়দিনের খেলা শুরু হলে দ্রুতই কিউইদের বাকি ৫ উইকেট নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশের। সিলেটের মতো ঢাকা টেস্ট জিতে সিরিজ জয়ে মনযোগী নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
পথরেখা/আসো