পথরেখা অনলাইন : মেয়েদের ক্রিকেটে নতুন এক ইসিহাস সৃষ্টি করেছেন নাহিদা আক্তার। বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের এই খেলোয়াড় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল-আইসিসির মাসসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন। যদিও মনোনয়ন পেয়েছিলেন অক্টোবর মাসেও। কিন্তু সেবার সেরার মুকুট জিততে পারেননি। তবে এবার ঠিকই জিতে নিলেন পুরস্কার। নভেম্বর মাসে আইসিসি সেরা নারী ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের নাহিদা আক্তার। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দারুণ পারফরম্যান্স করার সুবাদে পুরস্কারটি নিজের করে নিলেন বাঁহাতি এই স্পিনার। শুধু তা-ই নয়, এই পুরস্কার জেতা বাংলাদেশের প্রথম নারী ক্রিকেটারও তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে নাহিদা ৩০ রানে নেন ৩ উইকেট। শেষটিতে ২৬ রান দিয়ে নেন সমান উইকেট। মাঝখানে দ্বিতীয় ম্যাচ যখন সুপার ওভারে গড়ায়, তখন সেই ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট।
দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। পুরস্কার জেতার পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় নাহিদা আক্তার বলেন, ’যে কোন অর্জনের পুরস্কার জিততে পারাটা আমার কাছে দারুণ ব্যপার। সে কারণেই এ মুহূর্তটা মনে রাখার মতো। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ বিশিষ্ট প্যানেলের কাছ থেকে এমন স্বীকৃতি পাওয়াটা বেশ বড় ব্যাপার এবং আইসিসি মাসসেরা নারী ক্রিকেটার পুরস্কার জেতাটা আমার প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছি এবং দল হিসেবে যে সাফল্যের স্বাদ আমরা পেয়েছি তাতে অবদান রাখতে পেরে আমি খুবই খুশি। আমার ওপর সবসময় আস্থা রাখার জন্য অবশ্যই কোচ, অধিনায়ক ও সতীর্থদের ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। এটাই আমাকে মানসম্পন্ন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে নিজের সহজাত খেলাটা খেলতে ও চাপের মুহূর্তে পারফর্ম করার সুযোগ করে দিয়েছে।’ এই পুরস্কার অন্যদিরে জন্য অনপ্রেরণা হবে বলে মনে করছেন তিনি।
মাসসেরার এই পুরস্কার জেতার লড়াইয়ে নাহিদার প্রতিদ্বন্ধী ছিলেন আরেক বাংলাদেশি ফারজানা হক পিংকি। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে সর্বমোট ১১০ রান করেন তিনি। শেষ ম্যাচে ৬২ রানের দারুণ ইনিংস খেলে জেতান দলকে। দ্বিতীয় ম্যাচে করেন ৪০ রান। পাকিস্তান সিরিজ না জিতলেও বোলিংয়ে দুর্দান্ত ছিলেন দলটির সাদিয়া ইকবাল। প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে নেন ২ উইকেট। তিন ম্যাচে ১২.৫০ গড় ও ওভারপ্রতি ২.৫৮ রান খরচায় নিয়েছেন ৬ উইকেট। ফারজানার মতো তিনিও প্রথমবার মাসসেরার মনোনয়ন পেলেও হেরে যান নাহিদার কাছে। এদিকে, মাসের সেরা পুরুষ ক্রিকেটার হয়েছেন ট্র্যাভিস হেড। বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে অসাধারণ এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে চ্যাম্পিয়ন করেন বাঁহাতি এই ওপেনার। এমনকি সেমিফাইনালেও অলরাউন্ডার পারফরম্যান্সে হয়েছেন ম্যাচ-সেরা। তাই সেই তুলনায় পিছিয়ে ছিলেন তার দুই প্রতিদ্বন্ধী গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও মোহাম্মদ শামি। সেখানে ফাইনাল ম্যাচটা ব্যবধান গড়ে দেয়।
১১ ডিসেম্বর সোমবার আইসিসি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নারী ও পুরুষ ক্রিকেটে নভেম্বর মাসের সেরা খেলোয়াড়ের নাম প্রকাশ করে। বলা যায় দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কারই পেয়েছেন নাহিদা। ২০২৩ এর নভেম্বরের মাসসেরা নারী ক্রিকেটার হয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে মাসসেরার পুরস্কার জিতেছেন নাহিদা। নভেম্বরে বাংলাদেশ ঘরের মাঠে পাকিস্তান নারী দলের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলেছিল। সেই ওয়ানডে সিরিজে সর্বোচ্চ ৭ উইকেট নিয়ে নাহিদা হয়েছিলেন সিরিজসেরা। সেই সিরিজে ৩.৪৩ ইকোনমিতে বোলিং করেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি স্পিনার। শেষ ওয়ানডেতে ১০ ওভারে ৩ মেইডেন দিয়ে ২৬ রানে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তাতে নভেম্বরে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বোলারও হয়ে যান তিনি।
পথরেখা/আসো