নির্বাচন চলে আসছে। আজ না হয়, আমার গল্পে নির্বাচন নিয়ে অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। ১৯৮৬ সালে আমার পোস্টিং ঘাটাইলে। তখন জেনারেল এরশাদ নির্বাচন দিলেন। করটিয়ার দায়িত্ব অমার উপর। করটিয়ার সাদত কলেজে আমাদের ক্যাম্প করলাম। পন্নি সাহেব স্বতন্ত্র দাঁড়িয়েছন। আমরা ৯ ডিভিশনের আন্ডারে। জেনারেল নুরুদ্দিন আমাকে ডেকে জানাল যে এরশাদ স্যারের লোককে যাতে জয়ী করার চেষ্টা করি। ওই ব্যক্তির নাম মনে নাই। জেনারেল এরশাদের দল থেকে দাঁড়িয়েছে আর আমাকে তার সাপোর্ট করতে হবে এ মেসেজ তার কাছে পৌঁছে যাওয়াতে সে যখন তখন এসে ক্যাপ্টেন সাহেব চা কোথায়। চা দিতে বলেন- হলে ৪/৫ বন্ধু নিয়ে হাজির হন। এরশাদ স্যারের লোক তাই আমরাও বিগলিত করুনায় দেদারস চা পরোটা খাওয়াইয়া। তার আধিপত্য, বেসুর আওয়াজে উচ্চকণ্ঠে কথা অসহ্য তবু মানতে হয়।
তবে স্থানীয় রিপোর্ট হল পন্নি সাহেব বিরুল ভোটেই জিতবেন। ডিজিএফআই, এন এস আই তাদের রিপোর্টে এ সব তথ্য পাঠাচ্ছিল। এক দিন সন্ধ্যা বেলা ৯ ডিভিশন থেকে এক ডি আর (ডেস্প্যাচ রাইডার) মোটর সাইকেলে করে আসল। আমাকে বলল- স্যার, জিওসি স্যার ডেকেছেন। জিপ নিয়ে রাতেই চলে গেলাম। স্যার বললেন সব খবর পাচ্ছি পন্নি সাহেবই জিতবে। তুমি এখনই গিয়ে বল, তিনি স্বতন্ত্র তবে জিতে গেলে যাতে স্যারর পার্টিতে যোগ দেয়। তার ডিমান্ড কি, তা কাল সকালে আমার কাছে এসে যাতে বলে। ফিরলাম। রাত দশটা বাজলে পর রওনা হলাম পন্নি সাহেবের বাসায়। সাথে আমার রানার। অত রাত তখনও পন্নি সাহেবের বাসাতে ভালই ভীড়। ইলেকশন বলে কথা।
আমি এসেছি সে খবর ভিতরে পৌছে দেয়া হল, পন্নি সাহেব আসে না। পন্নি সাহেবের হয়ে এক জন এসে বলল- কোন খারাপ কিছু। আমি বললাম অ্যারেস্ট করতে হলে ত শুধু রানার নিয়ে আসতাম না। পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট ও লগে আনতাম, কথা বলব। আসতে বলেন। বেশ কিছুক্ষণ পর আমাকে তার বসার ঘরে নিয়ে গেল, ছিমছাম সাজানো ঘর, আসলেন, উদ্বিগ্ন, বললাম একাই কথা বলব। তারপর জানালাম, জেনারেল নুরুদ্দিন স্যার আপনাকে দেখা করার কথা বলেছেন। আপনিত মোটর সাইকেলে পুরো এলাকাতে প্রচারণা করছেন। ভোর রাতে সাভারে স্যারের সাথে দেখা করেন- আপনার ডিমান্ড বিবেচনা করবেন।
ক্যাম্পে আসলাম- এরশাদ স্যারের ভোটের প্রতিনিধি এসব জানেন না। সকালে এসেই চিৎকার ক্যাপ্টেন সাহেব কোথায়? নীচে আসেন। দোতালার রুম থেকে নামলাম। বললাম- এত সকালে কি কাজ। আকাশ থেকে পরলেন। বললেন- মশকরা করেন। বলা শেষ করার আগেই বললাম আসুন আর এ ক্যাম্পে আর ঢুকবেন না। সুবেদার সোলেমানকে বললাম উনাকে গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিতে। ভাংগা গলায় জিজ্ঞেস করল কি হইছে স্যার। কি বলব, বললাম- আকেল মদ্দ কে লিয়ে ইশারায় কাফি। বাইরে গেলেই সব খবর পেতে থাকবেন।
[চলবে]
পথরেখা/আসো