• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১০:২৯
মৃণাল বন্দ্য

সময় এখন থামানোর

নাট্যজন মামুনুর রশীদ খুব বিপাকেই পড়ে গিয়েছিলেন রুচির দুর্ভিক্ষ চলছে এমন মন্তব্য করে। প্রচুর ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে উনাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ক’দিন চলেছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। এখানে কোন বাধ্যবাধকতা না থাকায় যে যার মতো করে মন্তব্য করে গেছেন। হিরো আলমের সাথে মামুনুর রশীদের মতো গুণী ব্যক্তিত্বের অভিনয় নিয়ে যেখানে আলোচনা হয়, আপাতত সেখান থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়!  আসলে এই দূরে থাকাই এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে!
 
মানুষ এখন কাকে সাপোর্ট করছে আর কার সমালোচনা করছে সেটাই এক ধাধা! আপনার লাখ টাকার গাড়িতে ব্যাটারি চালিত রিক্সা লাগিয়ে বড় ক্ষতি করে ফেললেও আশে পাশের লোক এসে ব লবে- গরীব মানুষ, ছেড়ে দেন! উপরে ওভার ব্রিজ থাকলেও হেটে/দৌড়ে রাস্তা পার হওয়া চোখের সামনেই অহরহ। অথচ একটা দুর্ঘটনা ঘটলে গাড়ি পুড়িয়ে ফেলবে, চালক থাকবে জেলে। আন্দোলনে রাস্তা থাকবে বন্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আধুনিক যুগের ছেলে মেয়েরাও হেঁটে মহাসড়কে চলছে  আনমনে, কানে হেডফোন দিয়ে। গাড়ি নিজ দায়িত্বে থেমে যেতে যেন বাধ্য। আপনি সিগনাল কিংবা লেইন মানবেন? ওভার স্পিড এড়িয়ে চলবেন? আপনি হবেন আন-স্মার্টচালক।
 
কে কখন কি চায় সেটাই এখন বোঝা দায়। সবাই এখন সমালোচক হতে চায়। কোথায় কথা বলতে হবে,  কোথায় থামতে হবে- এটাই বোঝে না বেশির ভাগ। সেলিব্রেটিদের ফেসবুক পেইজে ঘুরে আসুন, মন্তব্যের ঘরে দেখবেন কতো শত বাজে কমেন্টস, উপদেশ এমনকি আদেশও। খুব কম মানুষই আইনের দ্বারস্থ হয়, ঝামেলা এড়াতে। এই সুযোগই নিচ্ছে অতি উৎসাহী কিছু মানুষ। এরা অন্যকে বিব্রত করে মজা পায়।
 
গতকাল মাঠে বসে দেখছিলাম বিপিএল এর ম্যাচ। সাকিবকে ক্রমাগত ভাবে ভূয়া, ভূয়া বলে দুয়োধ্বনি দিয়ে যাচ্ছিলেন কিছু দর্শক। এমনকি নাম ধরেও বাজে মন্তব্য করছিলেন। অনেকে এটা পছন্দ না করলেও, একটা মানুষও পেলাম না, যিনি প্রতিবাদ করছেন। আমি না জানার ভঙ্গিতে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করলাম- ভাই, সাকিবকে কেনো ভূয়া বলছেন? অনেকে বিব্রত হয়েছেন, অনেকে তোতলাতে থেকে বলেছেন- অনেকে বলছে, আমিও বলছি। ভালোই লাগে একসাথে সাবি বলতে। অথচ তিনিও জানেন না কেনো ভূয়া ভূয়া বলে চিল্লাচ্ছেন! সাকিব একবার পিছন ফিরে যখন ইশারায় জানালেন- তিনি শুনেছেন, তখন সবাই একদম চুপ। কিছুটা লজ্জাও পেয়েছেন বলে মনে হলো। বাউন্ডারি লাইন থেকে সরে যেতেই আবারো! রাজনীতি কিংবা তামিম ইস্যুতে সমালোচিত সাকিব কিন্তু  রক্তমাংসের মানুষও। ক্রিকেটের মোড়লদের ভিড়ে সাকিব কিন্তু বিশ্বের এক নাম্বার অলরাউন্ডার বছরের পর বছর ধরে। সাকিবরা বারবার আসে না! আজ সাকিব ক্রিকেট থেকে সরে গেলে তার কিছুই হবে না। ক্ষতিগ্রস্থ হবে বাংলাদেশের ক্রিকেট। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে। আপনি না মানলেও বিশ্বে সাকিব একটা ব্র্যান্ড।বিপিলে বিদেশী ক্রিকেটারদের সামনে আমাদের ক্রিকেটারকে অপমানিত না করলেই কি নয়! শুধু সাকিব নয়, শান্ত, বিজয়, লিটন, সৌম্য, হাসান, নূরুল হাসানকেও শুনতে হয়েছে এই দুয়োধ্বনি।
 
বইমেলায় এবার যা হচ্ছে তা তো রীতিমতো রেকর্ড! কোন লেখক কিংবা ব্যক্তিকে বইমেলা থেকে ভূয়া ভূয়া বলে বের করে দেয়ার রীতি মনে হচ্ছে এবারই শুরু হলো। সেই সব বোদ্ধাদের, যারা এই দুয়োধ্বনির সামনের লাইনে আছেন, তাদের কাছে আমার এক্টাই প্রশ্ন- কে আপনাকে এই অধিকার দিয়েছে লোক সম্মুখে কাউকে অপমানিত করে বের করে দেয়ার? আপনার কোন অভিযোগ থাকলে বাংলা একাডেমির কাছে অভিযোগ দেন। পুলিশ প্রশাসনকে জানান। সেসব না করে আপনি কাউকে অপমান করতে পারেন না। এই অধিকার আপনার নেই! 
 
অসম বিয়ের পাত্র পাত্রি কিন্তু প্রাপ্ত বয়স্ক। আইনগতভাবে আপনি উনাদের হেনস্থা করতে পারেন না। উনার লিখা বই আপনি পড়েছেন? আপনার দৃষ্টিতে সেটা পড়ার উপযুক্ত না হলে বাংলা একাডেমিতে অভিযোগ জানানো যেতে পারে, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশনা কমিটির কাছে অভিযোগ জানানো যেতে পারে। নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হিরো আলমকেও ব্যক্তিগত ভাবে আক্রমণ আপনি করতে পারেন না। সেই অধিকার আপনার নেই। ভালো না লাগলে উনার কন্টেন্ট আপনি নাই দেখতে পারেন। কেউ আপনাকে জোর করে দেখাচ্ছে না!
 
বইমেলায় এসব করে কিছু ইউটিউবার আর কনটেন্ট ক্রিয়েটর সুযোগ নিয়েছেন ভিউ বাড়াতে। আর এই ফাদে পা দিয়েছে কিছু অতি উতসাহী তরুণ! 
 
স্টেডিয়ামে বিসিবির উচিত এখনই থামানো এসব। বিশ্ব ক্রিকেটে আমাদের দেশের দর্শক বরাবরই প্রশংসা পেয়েছে। গুটি কয়েক মানুষের কারণে এটা নষ্ট হতে দেয়া যায় না। একইভাবে বইমেলার ঐতিহ্য নষ্ট হতে দিতে পারি না। পুলিশ প্রশাসনেরও এখানে শক্ত ভূমিকা রাখা উচিত। 
mrinalbanday@gmail.com

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।