পথরেখা অনলাইন : জয়টা দিনের আলোর মতো ফুটে উঠছিল। কিন্তু প্রতিপক্ষের চতুর্থ উইকেট জুটি যখন জমে গেল; উবে গেল সব সম্ভাবনা। উল্টো জয়ে ফিরে সমতায় ফিরল সফরকারীরা। প্রথম ব্যাটিং করে ২৮৬ রানের পর; শুরুতেই ৪৩/৩ শ্রীলঙ্কার স্কোরলাইন বলছিল ম্যাচটি বাংলাদেশের পক্ষে। কিন্তু সবটাই গেল বৃথা। এই ম্যাচে প্রাপ্তি হয়ে থাকল; তাসকিনের উইকেটের সেঞ্চুরি। ৩ ম্যাচের সিরিজ এখন ১-১ সমতায়।
১৫ মার্চ টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কা ২৮৭ রানে লক্ষ্য জবাব দিতে নেমে তিন উইকেট এবং ১৭ বল হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় সফরকারীরা। ইনিংসে প্রথম বলেই শরিফুলের শিকার হন আভিষ্কা ফার্নান্দো। ১৬ বলে ১৩ রান করে তাকে সঙ্গ দেন কুশল মেন্ডিস। এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি সাদিরা সামারাবিক্রমা। ৪ বলে ১ রান করে আউট হন তিনি। তবে পিচের এক প্রান্ত আগলে রেখে রান তুলতে থাকেন আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। ১০০ বলে নিজের সেঞ্চুরি তুলে নেন এই লঙ্কান ওপেনার। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন চারিথ আসালাঙ্কা। ব্যাট চালিয়ে রান তুলতে থাকেন দুজনই।
১১৪ রানে নিশাঙ্কাকে সাজঘরে ফেরান মিরাজ। এরপর ৯৩ বলে ৯১ রান করে আসালাঙ্কা আউট হলেও ততক্ষণে লঙ্কানদের জন্য জয়ের পথটা সহজ হয়ে যায়। ৪২তম ওভারে জানিথ লিয়ানাগেকে লেগ বিফোরে ফাঁদে ফেলেন তানজিম সাকিব। ১৬ বলে ৯ রান করে আউট হন এই ডান হাতি ব্যাটার। এতে কিছুটা চাপে পড়ে লঙ্কানরা। শেষ পর্যন্ত ওয়েনিন্দু হাসানাঙ্কার ১৬ বলের ২৫ রান এবং দুনিথ ওয়েল্লালাগের ২৬ বলের অপরাজিত ১৫ রানে ভর করে তিন উইকেট এবং ১৭ বল হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় লঙ্কানরা। বাংলাদেশের হয়ে শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ দুটি করে উইকেট নেন। এ ছাড়াও তানজিম হাসান সাকিব, মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ বলে শূন্য রান করে সাজঘরে ফেরেন লিটন কুমার দাস। তবে নাজমুল হাসান শান্তকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার। তবে দুটি জীবন পেয়েও ফিফটি পূরণ করতে পারেননি শান্ত। ৩৯ বলে ৪০ রান করে আউট হন তিনি। ফিফটির আক্ষেপ নিয়ে শান্ত আউট হলেও ৫২ বলে ফিফটি তুলে নেন সৌম্য। ৬৬ বলে ৬৮ রান করে এই ওপেনার আউট হলে ২ বলে শূন্য রান করে তাকে সঙ্গ দেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিন বলের ব্যবধানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে টাইগাররা। এরপর মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন তাওহীদ হৃদয়। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি মুশফিকও। ২৮ বলে ২৫ রান করেন তিনি। ১৮ বলে ১২ রান করে আউট হন মিরাজ। অপর প্রান্তে ৭৪ বলে ফিফটি তুলে নেন হৃদয়। ৩৩ বলে ১৮ রান করে তাকে সঙ্গ দেন তানজিম সাকিব। শেষ দিকে ব্যাট চালাতে থাকেন তাসকিন আহমেদও। ১০ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। অপর প্রান্তে শেষ দুই বলে ছক্কা হাঁকান হৃদয়। ৪ রানের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। হৃদয়ের ১০২ বলে অপরাজিত ৯৬ রানে ভর করে ২৮৬ রানের বড় পুঁজি পায় বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট শিকার করেন ওয়েনিন্দু হাসানাঙ্গা। এ ছাড়াও দিলশান মাদুশানকা দুটি এবং এক উইকেট নেন প্রামোদ মাদুশান।
বাংলাদেশের অষ্টম বোলার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ১০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন তাসকিন আহমেদ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে চারিত আসালাঙ্কাকে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানিয়ে এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন তাসকিন। ওয়ানডেতে উইকেটের সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ২ উইকেট দূরে থেকে চট্টগ্রামে এই ম্যাচ খেলতে নামেন তাসকিন। কুশল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে ৯৯তম উইকেটটি নেন তিনি। এরপর আউট করেন আসালাঙ্কাকে। তাসকিনের আগে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে ১০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন আবদুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ রফিক, মাশরাফি বিন মুর্তজা, রুবেল হোসেন, সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
পথরেখা/আসো