আরিফ সোহেল : অনুষ্ঠানের বাকি তখনও আধা প্রায় ঘণ্টা। নৈসর্গ ছুঁয়ে যাওয়া সজিব প্রকৃতি তখন দিনের শেষ আলোয় উচ্ছ্বলিত। সভা পান্থশাখার অডিটোরিয়ামে। ভিতরে-বাইরে করে প্রায় সবাই চেয়ার নিয়ে সবুজ ঘাসের আঙিনায় আড্ডায় জমে উঠলেন। সেখানে সূর্যের স্নিগ্ধরশ্মির আভায় অনেকের মুখই ছিল স্বপ্রতিভ। সেই আড্ডা প্রাণবন্ত কথায় জমে উঠল। তাতে অনুষ্ঠানের ধরনটাই একটু ব্যতিক্রমী হয়ে গেল।
ছিল কেন্দ্রের কমিটি সভা ইফতার সমেত। আয়োজনের সভাপ্রধান যখন অগ্রসর ক্রিমপুর ফাউন্ডেশনের স্বপ্নদ্রষ্টা নূহ-উল-আলম লেলিন; সেখানে ব্যতিক্রমটাই স্বাভাবিক। আলোচনায় সূত্রপাত- বিষয় বিক্রমপুরে কীতিসন্তান। প্রসঙ্গটা টেনে এনেছিলেন বিক্রমপুরের বিস্ময় ব্যক্তিত্ব; যিনি মাটি খুঁড়ে তুলে এনেছেন প্রায় ২ হাজার বছরের পুরানো সভ্যতা- সেই গবেষক দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্ব নূহ-উল-আলম লেনিন। কথার যোগসূত্রের কেন্দ্রমূলে ছিল মুজিব রহমানের একটি বই। যেখানে বিক্রমপুরের সেরা সন্তানদের নিয়ে খেলা। তার লেখা ওই বই নিয়েই শেষতক কতো আলাপন। কত তর্ক-যুক্তি; পাল্টা যুক্তিখনন। তাতে চেয়ারে আসীন ১৫/১৬ জনের একটুও মনোযোগের ব্যত্যয় ঘটেনি। সবাই শুনেছেন মুগ্ধ হয়ে। কেউ কেউ যুক্তও হয়েছেন এই দুইয়ের আলোচনায়। কিন্তু ঋদ্ধ নূহ-উল-আলম লেনিন আবারো প্রমাণ করেছেন অনেকের চাইতে কেনো তিনি ব্যতিক্রম। কথামালা ছুটে যাচ্ছিল ভিন্নমুখে। এসে পড়েছিল রাজনৈতিক চর্চা, গণতন্ত্র, উন্নয়নও। কিন্তু তাতে পানি ঢেলে দিয়ে সামগ্রিক আলোচনাকে একসূতোয় বেধেছেন। তাতে সবাই তৃপ্ত হয়েছেন প্রথমপর্বের অনানুষ্ঠানিক গল্প-ইতিহাস স্মৃতিকথার মেলবন্ধনে।
১৫ মার্চ ছিল অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন শ্রীনগর কেন্দ্রের নির্বাহী কমিটির পরিকল্পনা; বছরব্যাপী করণীয় এই নিয়ে সভা। সঙ্গে সৌজন্যের ইফতার। এই আয়োজনে ঢাকা থেকে আমরা অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের সভাপতির সঙ্গী হিসেবে ছিলাম আমরা পাঁচ।
সভার প্রধান অতিথি নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, সংগঠনকে কার্যকর রাখতে হলে নিয়মিত বৈঠক করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য দুই মাসে একবার করে সভা করতে। এ ক্ষেত্রে আপনারাই বেছে নেবেন শনিবার নাকি শুক্রবার মিটিং করবেন। আর আগামীতে সভা করে আপনারা এই শাখার ক্যালেন্ডার তৈরি করবেন। যেখানে প্রয়োজন হলে আমাদের কেন্দ্র থেকে সাংগঠনিক সম্পাদকসহ অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। ওই থেকেই আপনার আইডিয়া পাবেন কি কি করতে হবে।
শ্রীনগর কেন্দ্রের সভাপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চিকিৎসক ডা. আব্দুল মালেক ভূঁইয়ার সভাপত্বিতে অনুষ্ঠিত এই সভায় অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হাসান গঠনমূলক বক্তব্য রাখেন। তিনি বিভিন্ন কর্মসূচি কিভাবে পালন করতে হবে তা সবিস্তারে বলেন। বৈঠকী ঢংয়ের এই আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় পর্ষদের যুগ্ম সম্পাদক নাসির উদ্দিন জুয়েল ও মো. আবু হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক আরিফ সোহেল, লৌহজং কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, প্রয়াত হুমায়ুন আজাদ কন্যা লেখক মৌলি আজাদ এবং শ্রীনগর শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ বেপারী প্রমুখ। আলোচনা সভায় শাখার ৮ সদস্য নানা করণীয় সম্পর্কে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। সভা সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন এই শাখার সাধারণ সম্পাদক লেখক মুজিব রহমান।
পথরেখা/আসো