পথরেখা অনলাইন : বিশ্বকাপ বাছাইপর্বকে সামনে রেখে সৌদি আরবে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করেছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। সেখানে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে দল। যেখানে একটি ম্যাচ ড্র হওয়ার পাশাপাশি বাকিটিতে হারতে হয়েছে। মরুর দেশ থেকে পাওয়া আত্ববিশ্বাস ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ম্যাচে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করছেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। এছাড়া দ্বিতীয়বারের মতো মেয়েদের দলকে প্রীতি ম্যাচের জন্য ফিলিস্তিনকে প্রতিপক্ষ হিসেবে চিন্তা করলেও আপাতত না করে দিয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি। সৌদির তায়েফ শহরের কিং ফাহাদ স্পোর্টস সিটি মাঠে ১৪ মার্চ দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশ ৩-০ গোলে হেরেছে সুদানের কাছে। এর আগে ১১ মার্চ প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে সুদানের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে বাংলাদেশ। সুদান বাংলাদেশের তুলনায় যথেষ্ট শক্তিশালী। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১২৭তম স্থান সুদানের। বাংলাদেশের চেয়ে দলটি এগিয়ে ৫৬ ধাপ। যেখানে বাংলাদেশের বর্তমান র্যাঙ্কিং ১৮৩। ফিফা স্বীকৃত ম্যাচ না বলে দুই দলের মধ্যস্থতায় দুটি ম্যাচই হয়েছে রূদ্ধদ্বার। নিছক প্রস্তুতি ম্যাচ বলেই বাংলাদেশ কোচ কাবরেরা এই ম্যাচেও স্কোয়াডে থাকা প্রায় সব খেলোয়াড়কেই মাঠে নামিয়ে পরখ করেছেন। ২১ মার্চ কুয়েতে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।
এরপর ২৬ মার্চ বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় খেলবে ফিরতি ম্যাচ। দল হারলেও এখান থেকে ইতিবাচক অনেক কিছু দেখছেন বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা, ‘বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রস্তুতির জন্য সুদানের মতো একটি শক্তিশালী দলের বিপক্ষে আরেকটি প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ ম্যাচ খেললাম। শারীরিক শক্তিতে ওরা আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। তারপরও দলের সবাই জোর লড়াই করে গেছে। দুটি ম্যাচ থেকেই ইতিবাচক অনেক কিছু মিলেছে আমাদের। শারীরিক শক্তির তুলনায় সুদান আর ফিলিস্তিন প্রায় কাছাকাছি। তাই এই দুইটা ম্যাচ ২১ মার্চ ফিলিস্তিনের বিপক্ষে প্রস্তুতিতে বড় ভূমিকা রাখবে। তবে বলতে পারি, আগে যেমন খেলেছে সেই তুলনায় আমরা এখন অনেক ভালো অবস্থানে আছি। ২১ মার্চের জন্য আমরা এখন অনেকটাই প্রস্তুত।’ এর আগের দুই ম্যাচের প্রথমটিতে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার কাছে বড় ব্যবধানে হারলেও ঢাকায় লেবাননকে রুখে দেয় বাংলাদেশ। এদিকে আবারও ফিফা উইন্ডোতে ম্যাচ খেলতে ফের না করে দিয়েছে ফিলিস্তিন।
গত ফেব্রুয়ারির ফিফা উইন্ডোতে একবার ঢাকায় আসার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে ফিলিস্তিন। তখন কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচই খেলা হয়নি সাবিনা খাতুনদের। আগামী ১ থেকে ৯ এপ্রিলের উইন্ডোতেও ফিলিস্তিনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। মৌখিকভাবে তারা সম্মতিও জানিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ফের ‘না’ করে দিয়েছে ফিলিস্তিন। তবে এপ্রিলের উইন্ডোতে সাবিনাদের জন্য ম্যাচ আয়োজনের জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাফুফে। জানা গেছে, বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে বাফুফে। কোনো দেশই চূড়ান্ত কথা দেয়নি। তবে বাফুফে বিকল্প হিসেবে হংকং, মিয়ানমার ও উজবেকিস্তানের যে কোনো একটি দেশের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলার চেষ্টা করছে। তিন দেশের মধ্যে হংকংয়ের সঙ্গে ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ফিলিস্তিনের মুখোমুখি হওয়ার আগে সুদানের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। সুদানিরা শারীরিকভাবে বেশ শক্তিশালী। ফিলিস্তিনিরাও তাদের কাছাকাছি।
তাই সুদানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খুব বড় ভুমিকা রাখবে মনে করেন কোচ। দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৫৬ ধাপ এগিয়ে থাকা সুদান প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে যায়। বিরতির পর নেমে আরও দুই গোল করে বাংলাদেশ দলকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। এই ম্যাচেও কোচ হাভিয়ের কাবরেরা দলের সবাইকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলিয়েছেন। এদিকে আর্জেন্টিনার ছাড়পত্র নিয়ে এবার ঢাকা আবাহনী লিমিটেডে যোগ দিয়েছেন জামাল ভুইয়া। নানা ঘটনার জন্ম দিয়ে গত মৌসুমে আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগের ক্লাব সোল দে মায়োতে যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে তার আর্জেন্টিনার অধ্যায়টি সুখকর হয়নি। মানহীন এই লীগের মাঝপথে যোগ দিয়ে মাত্র চারটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন জামাল। সেখানে এক গোল করার পাশাপাশি একটি অ্যাসিস্টও ছিল তার। কিন্তু জামাল-সোল দে মায়োর সম্পর্ক বেশিদূর এগোতে পারেনি। চুক্তি শেষ হওয়ার আগেই বেতন সংক্রান্ত ঝামেলায় জড়িয়ে ক্লাবটির সাথে নিজেই সর্ম্পক ছিন্ন করেছেন জামাল। সোল দে মায়োর সাথে চুক্তি বাতিলের পাশাপাশি নতুন ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন জামাল। জামালের নতুন গন্তব্য বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ঢাকা আবাহনী। এরইমধ্যে আর্জেন্টিনার ক্লাব সোল দা মায়োর ছাড়পত্র পেয়েছেন তিনি। ডেনমার্কে বেড়ে ওঠা জামাল ভূঁইয়া ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলছেন। দেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৮০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হয়ে গেছে তার। জাতীয় দলের জার্সি পরার পর থেকে তিনি দেশের ঘরোয়া ফুটবলে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব, সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রে খেলেছেন।
পথরেখা/আসো