• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৯:৩৯

নতুনদের পথ দেখাচ্ছে আম্পায়ারিং এ সাফল্য

মোয়াজ্জেম রাসেল : প্রথমবারের মতো আইসিসির এলিট প্যানেলের জন্য মনোনীত হয়েছে  শরফোদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। তার ঠিক সপ্তাহ খানেক আগে মেয়েদের আম্পায়ারিং এও সুখবর এসেছিল। আইসিসি ডেভেলপমেন্ট আম্পায়ার্স প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে চারজন নারী আম্পায়ার সাথীরা জাকির জেসি, রোকেয়া সুলতানা, ডলি রানী সরকার ও চম্পা চাকমাকে। তাছাড়া ম্যাচ রেফারি বিভাগেও আইসিসি আন্তর্জাতিক প্যানেলের জন্য মনোনীত করেছেন আরেক বাংলাদেশি সুপ্রিয়া রানী দাসকে। একসাথে পাঁচজনের সুযোগ পাওয়াকে নারী আম্পায়ারিংয়ে বিপ্লব বলছেন ক্রিকেটের সাথে সংশ্লিষ্টরা। সুযোগ পাওয়া চার নারী আম্পায়ারের মধ্যে কেবল জেসির আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছে। গত বছর মালয়েশিয়ায় ছয়টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ পরিচালনা করেছেন তিনি। বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজেও অনফিল্ডে ছিলেন জেসি। আন্তর্জাতিক ম্যাচ রেফারি হিসেবে বাংলাদেশ থেকে দায়িত্ব পালন করছেন আখতার আহমেদ ও নিয়ামুর রশিদ রাহুল। এবার তাদের দেখে নতুনদের সুযোগ পেলে নিজেকে প্রমাণের পালা।
 
যদিও সৈকত নিজেকে আগেই প্রমাণ করেছেন। গত দুই যুগ ধরে টেস্ট ক্রিকেটের আঙিনায় বিচরণ করছে বাংলাদেশ। একটা জায়গায় অপূর্ণতা ছিল। এবার সেই অপূর্ণতা ঘুচালেন শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। তাঁর এই অর্জন দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। দেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় থেকে শুরু করে সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহিমরা প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সৈকতকে। তাঁর এই অর্জন দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। সৈকতকে অভিনন্দন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাবেক অধিনায়খ ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা লিখেন, ‘সৈকত ভাই খেলোয়াড় হিসেবে লাল-সবুজের পতাকার প্রতিনিধিত্ব করেছেন এক সময়। কতো ম্যাচ খেলেছি, আপনি অনফিল্ড আম্পায়ার থেকেছেন। কিন্তু আজ যেটা করলেন সত্যিই অসাধারণ। কল্পনায়ও কোনোদিন ভাবিনি আমাদের দেশের কেউ এলিট প্যানেলে জায়গা পাবে। অভিনন্দন সাথে শুভকামনা সৈকত ভাই!’
 
সাবেক এই বাঁহাতি স্পিনার অনেক দিন ধরেই দেশের সেরা আম্পায়ার। আইসিসি আম্পায়ারদের ‘এমার্জিং’ প্যানেলেরও ওপরের দিকে ছিলেন অনেক দিন ধরেই। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার মারাইস এরাসমাস অবসরে যাওয়ায় এলিট প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় সৈকতের। এক বিবৃতি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে আম্পায়ারদের এলিট প্যানেলে নেওয়ার খবর জানায় আইসিসি। সে বিবৃতিতে সৈকতকে শুভেচ্ছা জানান আইসিসির প্রধান নির্বাহী জিওফ অ্যালারডাইস। ভারতে অনুষ্ঠিত গত বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যে পারফরম্যান্স করেছিলেন, যে ভাবমূর্তি তৈরি করেছিলেন, এলিট প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হওয়াকে সেটির পুরস্কার বলেই মনে করছেন সৈকত, ‘বিশ্বকাপে ৫টি ম্যাচ পরিচালনা করি, যার প্রতিটি ছিল ঘটনাবহুল। বিশ্বকাপে আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন ছিল আফগানিস্তান-নেদারল্যান্ডস ম্যাচ। বিশ্বকাপে আমি একটা ভালো ভাবমূর্তি তৈরি করেছিলাম, প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে বিশ্বকাপে গিয়ে নার্ভাস ছিলাম না’।
 
ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে সৈকতের বিচরণ সেই ১৯৮৯ সালে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায়। ১৯৯৪ সালে আইসিসি ট্রফির দলেও ছিলেন বাঁহাতি এ স্পিনার। কিন্তু সেবার বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়। ১৯৯৭ সালে পিঠের চোটের কারণে স্কোয়াডে জায়গা পাননি তিনি। সেবার আইসিসি ট্রফি জিতে বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। সেই আনন্দের ক্ষণে তাঁর মাঝে একটা দুঃখবোধও কাজ করে। ফিট থাকলে এ জয়ের অংশীদার হতে পারতেন তিনি, বিশ্বকাপও খেলতেন। তখন নাকি তাঁর মনে হয়, আম্পায়ারিং করলে বিশ্বকাপে ম্যাচ পরিচালনা করতে পারবেন, বাংলাদেশ টেস্ট খেললে সেটা পরিচালনা করতে পারবেন। সে চিন্তা থেকেই আম্পায়ারিংয়ে আসা। ২০১০ সালে ঢাকার মাঠে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজের আইডল সাইমন টোফেলের সঙ্গী হিসেবে আন্তর্জাতিক পথচলা শুরু করেছিলেন তিনি। এলিট প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার দিনে প্রথম আম্পায়ারিংয়ের স্মৃতিচারণও করেছেন সৈকত, ‘ধানমন্ডি ৮ নম্বর মাঠে তৃতীয় বিভাগ বাছাইপর্বের একটি ম্যাচে প্রথম আম্পায়ারিং করেছিলাম। তখন তো অতো নিয়মকানুন জানতাম না। একটা বলে ওয়াইড-বাই উভয় সংকেতই দিয়েছিলাম সেদিন। সেখান থেকে শুরু। এরপর তো অনেক অভিজ্ঞতা হলো।’
 
এলিট প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পেছনে সৈকতের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও বড় ভূমিকা রেখেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে স্নাতক ও মাস্টার্স করার পর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ভবিষ্যতে যারা আম্পায়ারিংয়ে আসতে চান, তাদের প্রতি বার্তাও দিয়েছেন সৈকত, ‘আপনি জনপ্রিয় হতে পারবেন না। আপনাকে এমন একজন হতে হবে, যাকে অন্যরা সম্মান করে। আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে লক্ষ্যটা স্থির রাখতে পারলে সাফল্য আসবেই।’ এখন দেশের পতাকাকে আরও উচুঁতে তুলে ধরতে দৃঢ়প্রতয়ী খেলোয়াড়ী জীবনের অনেক আক্ষেপ নেওয়া সৈকতের।
পথরেখা/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।