• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১২:২৩

ক্ষতিকারক খনিজ পদার্থ অ্যাসবেসটস আমদানি ব্যবহার ও বিপণন নিষিদ্ধ

পথরেখা অনলাইন : মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর খনিজ পদার্থ অ্যাসবেসটস এর আমদানি, ব্যবহার ও বিপণন নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ অকুপেশনাল সেফটি, হেলফ ও এনভায়রমেন্ট (ওশি) ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ ব্যান এসবেসবেটস নেটওয়ার্ক-(বি-ব্যান)। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে অ্যাসবেসটসযুক্ত পণ্য ব্যবহারের গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কেও দেশবাসীকে সতর্ক করা প্রয়োজন।
 
ওশি ফাউন্ডেশন ও দক্ষিণ কোরিয়ার এশিয়া সিটিজেন সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হেলথ (ইকো হেলথ) এর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে আজ ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটি’র সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওশি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও বি-ব্যান এর সদস্য সচিব আমিনুর রশীদ চোধুরী রিপন এ দাবি জানান।

তিনি সাংবাদিকদের জানান, গবেষণায় বাংলাদেশে তৈরি সিমেন্ট শিট, একটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের বেবি টেলকম পাউডার, গাড়ির ব্রেকশু ও সীতাকুন্ডে জাহাজ ভাঙা শিল্প এলাকা থেকে সংগৃহীত মাটির নমুনা বিশ্লেষণ করে সিমেন্ট শিটে ৫০ ভাগ ও ব্রেকশু’তে ১৫ ভাগ ক্রিসোটাইল অ্যাসবেসটসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বেবি টেলকম পাউডার ও সীতাকুন্ড এলাকার মাটির যে নমুনা পরীক্ষার জন্য নেয়া হয়েছিল তাতে অ্যাসবেসটস পাওয়া যায়নি। তবে আরও নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন আছে বলে জানান আমিনুর রশীদ চৌধুরী রিপন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অ্যাসবেসটস একটি ধূসর রঙের খনিজ যা সহজেই দীর্ঘ নমনীয় ফাইবারে বিভক্ত হয়ে যায়। এটি অগ্নিরোধী, বিদ্যুৎ অপরিবাহী এবং রাসায়নিকভাবে প্রতিরোধী। ধূলিকণা হিসাবে শ্বাস নেওয়া হলে এটি গুরুতর ফুসফুসের রোগ সৃষ্টি করতে পারে। অ্যাসবেসটসের কারণে ক্যান্সার হয়; যার পরিণাম অকাল মৃত্যু।

লিখিত বক্তব্যে আমিনুর রশীদ অ্যাসবেসটস এর অবাধ ব্যবহারে জনস্বাস্থ্যের উপর যে হুমকি তৈরি হচ্ছে তা প্রতিরোধে ছয়টি সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো- জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর হুমকি বিবেচনায় নিয়ে অবিলম্বে অ্যাসবেসটস এর আমদানী, ব্যবহার ও বিপনন নিষিদ্ধ করা, গত ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশে সকল প্রকার অ্যাসবেসটস এর ব্যবহার বন্ধকরণ বিষয়ক সভায় ক্রিসোটাইল অ্যাসবেসটস এর ক্ষতিকারক প্রভাব বিষয়ে গবেষণাসহ অন্যান্য যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছিল তা বাস্তবায়ন করা।

অ্যাসবেসটস এর ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ এবং এর বিকল্প উপকরণ নির্ধারণে সুপারিশ প্রেরণের জন্য ওশি ফাউন্ডেশনসহ এই বিষয়ে কর্মরত সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, বুয়েট ও বিএসএমএমইউ এবং সরকারের শিল্প, শ্রম, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের কারিগরি কমিটি গঠন করা।

জাহাজ ভাঙা শিল্পে ইতোমধ্যে যেসব শ্রমিক অ্যাসবেসটসিস এ আক্রান্ত হয়েছে তাদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ এবং সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা, দেশের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সূরক্ষায় অবিলম্বে ক্রিসোটাইল অ্যাসবেসটস যুক্ত সিমেন্ট রুফ শিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন, বিক্রয় ও ভোক্তা পর্যায়ে ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা এবং গণমাধ্যমের সহায়তায় এ বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা এবং ব্যবসা ক্ষেত্রে মানবাধিকার চর্চার দৃষ্টিকোণ থেকে অ্যাসবেসটস আমদারিকারক ও শিল্প খাতে ব্যবহারকারীদের অ্যাসবেসটস এর ক্ষতিকারক দিক বিবেচনায় নেয়া এবং শ্রমিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওশি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক বলেন, অ্যাসবেস্টস মিশ্রিত পণ্য সস্তা হলেও এর স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও ভবিষ্যতের চিকিৎসা খরচ অনেক বেশি। সিমেন্ট শিটের পরিবর্তে টিনের ঢেউটিন ব্যবহারের তাগিদ দেন তিনি।
 
ওশি ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারপারসন ড. এস এম মোর্শেদ বলেন, অ্যাসবেসটস এর ক্ষতিকারক দিক বিবেচনায় বিশ্বের ৬২টি দেশে এর উৎপাদন, আমদানি ও বিপনন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জনগণের ক্যান্সার আক্রান্তের ঝুঁকি বিবেচনায় অ্যাসবেসটস এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে। প্রতিবেশি দেশ নেপাল এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। বাংলাদেশেও অবিলম্বে অ্যাসবেস্টস নিষিদ্ধের দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি হেলথ সায়েন্স এর ডিপার্টমেন্ট অব অকুপেশনাল অ্যান্ড এনভায়রমেন্টাল হেলথ এর অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন ফারুকী, সাংবাদিক ও গবেষক আতাউর রহমান অ্যাসবেসটসের ক্ষতিকারক দিক তুলে ধরে এটি নিষিদ্ধ করতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
পথরেখা/এআর

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।