পথরেখা অনলাইন : প্রথম ম্যাচে সহজ জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়েকে ৮ উইকেটে জিতে দারুণ সুচনা করেছে। রবিবার দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল। সবচেয়ে বড় কথা অভিষেকেই ফিফটি করে বাংলাদেশকে জিতিয়েছেন তানজিদ তামিম, দীর্ঘদিন পর ফিরে দারুণ বোলিং করেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। জয়ের অর্ধেক কাজটা সেরেই রেখেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। চট্টগ্রামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে ১২৪ রানে অলআউট করে। পরে ১২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে পরে বড় জয়ই পেল বাংলাদেশ। জয়ের আগে বল হাতে ছিল ২৮টি। ম্যাচ জয়ের শুরুটা অবশ্য ভালো ছিল না বাংলাদেশের। দলীয় ৫ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ১ রানে সাজঘরে ফেরেন লিটন দাস। ওপেনিং সঙ্গী ফিরলেও দ্বিতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামলে নেন তানজিদ তামিম। দুজনে মিলে ৫২ রানের জুটি গড়েন। ২১ রানে অধিনায়ক শান্ত ফিরলে জয়ের বাকি কাজটুকু তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে সারেন তিনি। ৩৬ বলে অপরাজিত ৬৯ রানের ঝোড়ো জুটি গড়ে বাংলাদেশকে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন তানজিদ তামিম এবং হৃদয়।
অভিষেক ম্যাচ খেলতে নেমেই দুর্দান্ত এক ফিফটি পেয়েছেন তানজিদ তামিম। ৪৭ বলে ৬৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন বাঁহাতি ওপেনার। ইনিংসটি সাজিয়েছেন ২ ছক্কা এবং ৮ চারে। ইনিংসটি খেলার পথে অবশ্য তিনবার জীবন পেয়েছেন তিনি। ব্লেসিং মুজরাবানির এক ওভারেই দুইবার জীবন পান। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের পর অপর জীবন পান ১১তম ওভার করা রিচার্ড এনগারাভার বলে। আর ১৮৩.৩৩ স্ট্রাইকরেটে ৩৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন হৃদয়। তাঁর ১৮ বলের ইনিংসে ১ ছক্কার বিপরীতে ৫ চার রয়েছে। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শেখ মেহেদী হাসান, তাসকিন আহমেদ এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১২৪ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। একটা সময় তো ১০০ হবে কিনা সেই শঙ্কাও জেগেছিল।
কেননা ৪১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে তারা ধুঁকছিল। পরে অবশ্য সেই শঙ্কা উড়িয়ে দেন জিম্বাবুয়ের দুই ব্যাটার ক্লাইভ মাদান্দে (৪৩) ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা (৩৪)। দুজনে মিলে অষ্টম উইকেটে ৭৫ রানের জুটি গড়ে দলকে ১২৪ রান এনে দিয়েছেন। তাসকিনের মতো ৩টি উইকেট নিয়েছেন ১৮ মাস পর খেলতে নামা সাইফউদ্দিন। আর ২ উইকেট নিয়েছেন শেখ মেহেদী। এদিকে বিশ্বকাপে সুযোগ পেতে এমন পারফরম্যান্সই করতে চান সাইফউদ্দিন। এই পেস অলরাউন্ডার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছিলেন না দীর্ঘ ১৮ মাস। তাই উইকেট নেওয়ার পর তাঁর ট্রেডমার্ক উদ্যাপনটাও করা হয়নি এত দিন। শুক্রবার যখন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ফিরলেন তখন গুণে গুণে চারবার নিজের ট্রেডমার্ক উদ্যাপনটাই করলেন। একবার অবশ্য এমন উদ্যাপন করে লাভ হয়নি সাইফউদ্দিনের। ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে আউট করার সময় নো বল করায়। ম্যাচে তাঁর মতো এমন দুর্দান্ত বোলিং করেছেন তাসকিন আহমেদও।
৮ উইকেটের বড় জয়ের ম্যাচে তো তাসকিন ১৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরাও হয়েছেন। আর ১২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে নিজের অভিষেক ম্যাচে ৬৭ রানের ইনিংস খেলেছেন তানজিদ হাসান তামিম। চট্টগ্রামে ১৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তাই দারুণ এক প্রত্যাবর্তনই করেছেন সাইফউদ্দিন। এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পেছনে চালিকা শক্তি হিসেবে কী কাজ করেছে সেটাই পরে ম্যাচ শেষে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়ার জন্যই উন্মুখ আছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশি অলরাউন্ডার। আফ্রিকার দেশটির বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জয় পাওয়ার পর সাইফউদ্দিন বলেছেন, ‘প্রথমত আলহামদুলিল্লাহ। যেহেতু প্রায় ১৮ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরলাম। আমার জন্য বিষয়টা কঠিন ছিল। যদি আমি বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পেতে চাই আমার জন্য এই পারফরম্যান্সটার বিকল্প নেই। এর আগে ২০২১-২২ (আসলে ২০২২) বিশ্বকাপে আমি শেষ মুহূর্তে বাদ পড়ি পারফরম্যান্সের কারণে। এজন্য অনেক সিরিয়াস ছিলাম। তাই চাচ্ছিলাম পারফর্ম করতে।’
চট্টগ্রামের কন্ডিশন তাঁর চেনা হলেও বোলিং করার সময় নার্ভাস ছিলেন বলে জানিয়েছেন সাইফউদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘হ্যাঁ অবশ্যই কিছুটা নার্ভাস ছিলাম। আসলে সত্যি কথা বলতে গেলে আজকে অনেক নার্ভাস ছিলাম (হাসি)। এর আগে অনেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছি নার্ভাস ছিলাম না। আমার জন্য ভালো করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’ আগামী ম্যাচগুলোয় একাদশ কি হবে তা নিয়ে চিন্তা করছেন না সাইফউদ্দিন। সুযোগ পেলে ভালো করতে চান তিনি, ‘যেহেতু ২ ম্যাচ পরে ফিজ আসবে। একাদশে কী হবে না হবে ম্যানেজমেন্ট জানে। আমার জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। আলহামদুলিল্লাহ চেষ্টা করেছি ভালোটা দেওয়ার। আরও ভালো করতে পারলে ভালো লাগত। আরও ৪টা ম্যাচ বাকি আছে। চেষ্টা করব নিজেকে আরও ছাড়িয়ে যাওয়ার।’
পথরেখা/আসো