পথরেখা অনলাইন : হেলথ প্রমোশন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে হার্টআ্যাটাক,স্ট্রোক,ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামকরোগজনিত মৃত্যু কমানো সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।তারা বলেন, বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ৭০ শতাংশই ঘটে হার্টআ্যাটাক, স্ট্রোক, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগে। তামাকপণ্যের ব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, কায়িক পরিশ্রমের অভাব, বায়ু দূষণ প্রভৃতিকে এর প্রধান কারণ।তবে হেলথ প্রমোশন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে এসব স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ এবং অসংক্রামকরোগজনিত মৃত্যু কমানো সম্ভব।
বৃহষ্পতিবার রাজধানীর বিএমএ ভবনে প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘টেকসই স্বাস্থ্য উন্নয়নেহেলথ প্রমোশন: বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক কর্মশালায় তারা এসব তথ্য ও সুপারিশ করেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্ব্য সংস্থার মতে হেলথ প্রমোশন একটি প্রক্রিয়া যার দ্বারা মানুষ নিজের স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যের নির্ধারকসমূহের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে এবং নিজ স্বাস্থ্যের উন্নতি লাভের সক্ষমতা অর্জন করতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম, খাবারে অতিরিক্ত চর্বি, লবণ ও চিনি পরিহার এবং তামাক ও অ্যালকোহল বর্জন প্রভৃতি কাজে উদ্বুদ্ধ করার পরিবেশ সৃষ্টি করা ‘হেলথ প্রমোশন’ কার্যক্রমের অংশ।
তবে এই কাজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণে একটি সমন্বিত পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে সংস্থাটি।
থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ১১টি দেশ ইতোমধ্যে হেলথ প্রমোশন কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি হ্রাসে সাফল্য দেখিয়েছি বলেও কর্মশালায় জানানো হয়।
কর্মশালার প্রধান অতিথি বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ থেকে বছরে প্রায় ৩’শ কোটি আদায় হয়, যা স্বাস্থ্য উন্নয়নে খরচ করার কথা থাকলেও আমরা পারছি না। একটি স্বাধীন হেলথ প্রমোশন প্রতিষ্ঠান গঠন করে এই অর্থ স্বাস্থ্য উন্নয়নে ব্যয় করা গেলে জনগণ এবং সরকার উভয়ই লাভবান হবে।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট এর মহাপরিচালক ড. মোঃ এনামুল হক বলেন, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা নানাবিধ হেলথ প্রমোশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। তবে টেকসই স্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য একটি সমন্বিত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে বাংলাদেশে চিকিৎসায় ব্যক্তির ব্যয় প্রায় ৭৪ শতাংশ, যার দুই-তৃতীয়াংশই খরচ হয় ওষুধে।হেলথ প্রমোশনের মাধ্যমেরোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হলে ব্যয় হ্রাসের পাশাপাশি জনগণের অসুস্থতা, মৃত্যু এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর চাপ কমে আসবে।
কর্মশালায় আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী, অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স- আত্মা’র আহ্বায়ক মতুর্জা হায়দার লিটন, প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের প্রমুখ। কর্মশালায় মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞা’র হেড অব প্রোগ্রামস হাসান শাহরিয়ার।
পথরেখা/এআর