• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১১:২৬

গরমা গরম সময়

বান্দারবনে ফার্স্ট বেঙ্গল বা সিনিয়র টাইগার্স শহর এলাকাতেই ছিল। পরে সাংগু নদী পার করে ব্যাটালিয়ন স্থাপিত হয়। অফিসার্স মেস বান্দারবনে থাকলেও নদীর ওপারে যত দিন মেস প্রস্তুত হয় নাই, তাবুতে থাকতাম। তাঁবুর সাথেই প্যারেড গ্রাউন্ড। আমি তখন জাতীয় হকি দলে, স্টেমিনা বিল্ড আপ করতে সকালে দৌড়াই, কর্নেল মুহিত স্যারের দুটা এলসেশিয়ান কুকুর ছিল। আমি ওর্য়াম আপের দৌড় শুরু করলে স্যার কুকুর দুইটারে পিছনে লেলিয়ে দিতেন। হাপহুপ করে ও রকম দুই কুকুর পিছনে আসলে জান বাঁচাতে লম্বা কদমে মাঠ চক্কর দিতাম। জিরানের সময় পা ছড়িয়ে মাটিতে বসলে কুকুর দুইটা ঘাড় গাল চাটতে শুরু করত। বলতাম দৌড়ের সময় এই আদর কৈ থাকে। কর্নেল মুহিতের জন্যই জাতীয় হকি দলে আমার স্টেমিনা সব থেকে বেশী ছিল। সকালে পিটি শেষ হবার পরও কুকুর আর আমার দৌড় দেখতে সৈনিকরা অপেক্ষা করত।
 
মেজর খালেদ বীর বিক্রম ছিলেন বিএম (ব্রিগেড মেজর)। তিনি সিও কর্নেল মুহিতরে বললেন, রোয়াংছড়ি যাবেন আপনার পেট্রল পার্টিতে চাকলাদার থাকবে। স্যার জিজ্ঞেস করলেন কেন যেতে হবে, বললেন পুকুর কাটাতে গমের হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। সেই জন্য যাবেন। সেই বার্মা বর্ডারের কাছে যেতে হবে। ফার্স্ট লাইটের আগেই, অন্ধকার থাকতে রওনা হলাম। সন্ধ্যাতে পৌঁছলাম। সিও স্যার হঠাৎ বললেন, চাকলাদার আমি ব্যাটেলিয়ন কমান্ডার। আমার কেন পেট্রলে যেতে হবে। তাও ব্যাটেলিয়ন হেড কোয়ার্টার থেকে এত দূরে। না, চাকলাদার কেমন কেমন লাগছে। চল নাইট পেট্রল করে বান্দারবনের কাছাকাছি যাই। রাত আটটার দিকে লিরাগাও আসলাম। স্যার বয়স্ক মানুষ। বললাম স্যার ডিনার মেসটিন এ নিয়ে বাগমারা যাই। স্যার বললেন, তোমার মনেও কি কোন ডাউট লাগছে। বললাম, স্যার রওনা বয়ে যাই।রাত ১১ টায় পৌঁছলাম বাগমারা। স্যার বললেন এখন বান্দারবনের ঘাড়ের উপর। এক ঘণ্টা পেট্রল করলেই পৌছান যাবে।সবাই কে রেস্ট দাও। 
 
ছনের ছাদ। দুই রুমের মধ্যে বাসের বেড়া। ফজরের আগেই শুনছি কর্নেল মুহিত কাঁদছেন। তাড়াহুড়া করে স্যারের রুমে গেলাম। স্যার তার ট্রানজিস্টার এগিয়ে দিয়ে শুনতে বললেন। বলা হচ্ছে জেনারেল জিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। স্যার বললেন চিটাগং সেনানিবাসের  খবর জানি না। অমার পরিবার ওখানে। 
 
দ্রুত হেটে চল্লিশ মিনিটে বান্দারবন। আমার ইউনিটের আশি জন নিয়ে ক্যাপ্টেন মতি আর টিআইসি মেজর ফজলু কিলিং পার্টিতে যোগ দিতে গেলেও সব সৈনিকদের কালুর ঘাট ব্রিজের এপারে রেখে শুধু মতি আর মেজর ফজলু কিলিং অপারেশনে যোগ দেয় এবং ভোর রাতেই  ইউনিটে চলে আসে। 
 
এর মধ্যেই মেজর খালেদ তার স্টেনগান আমাদের কোতে জমা করে দুটো পিস্তল নিয়ে যায়। আমাকে পাঠান হল মেজর ফজলুকে অ্যারেস্ট করতে। স্যারের বউ ক্যারিং তাই পালানোর সুযোগ থাকাতেও যায় নাই। স্যারের সাত বছর জেল হয়। মাস্টার মাইন্ড মেজর খালেদ দেশের বাইরে চলে শায়। সেই বড় যুদ্ধবাজ যিনি পালানোর পথ  হিসাবে রাখে। ইউনিফিকেশন অব জার্মানির পথিকৃত বিসমার্ক এ তত্বের উপরই নির্ভর করতেন।
 
লেখক : সাবেক হকি অধিনায়ক জাতীয় এবং সেনাবাহিনী দল, জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার জয়ী এবং কলামিস্ট
পথরেখা/আসো
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।