• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ২০:৩৬

পাওয়া না পাওয়া বেদনামুখর ইমরুল কায়েস

পথরেখা অনলাইন : অনেকটা হঠাৎ করেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন ইমরুল কায়েস। দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই ব্যাটার পর্যাপ্ত সুযোগ পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে রাসেল ডোমিঙ্গো ও চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, দুজনের চক্ষুশুল ছিলেন। দীর্ঘদিন জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতারও মূল্যায়ন পাননি। খেলার মতো অবস্থায় থাকলেও আর লাল বলে ক্রিকেট খেলবেন না খুলনার এ ক্রিকেটার। বাংলাদেশ থেকে হাথুরুসিংহের অধ্যায় শেষ এক মাস আগেই। ‘বিতর্কিত’ এই কোচের দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বরখাস্ত করেছিল হাথুরুকে। তাঁর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ছুটি কাটানো, নাসুম আহমেদকে চড় মারসহ আরও কিছু অভিযোগ তুলেছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। এক মাস পর কেন আবার সেই হাথুরুর প্রসঙ্গ? আলোচনাটা হাথুরুর কারণে এসেছে লাল বলের ক্রিকেটে ইমরুলের বিদায়ী ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে। ২০২৩ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে হাথুরু প্রধান কোচ হিসেবে এলেও তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ মেলেনি।
 
কারণ, ইমরুল তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেই ২০১৯ সাল থেকে। কিন্তু ২০১৪ সালে প্রথম মেয়াদে হাথুরু আসার পর ইমরুল যতটুকু সময় পেয়েছিলেন, গুরুর থেকে অর্জিত সেই শিক্ষা এখনো মনে রেখেছেন ইমরুল। মিরপুর শেরেবাংলায় ঢাকা-খুলনা ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ইমরুল বলেন, ‘চন্ডিকা হাথুরুসিংহে অবশ্যই অনেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ কোচ ছিলেন। টেকনিক্যাল কোচ হিসেবে আমার কাছে তিনি অনেক ভালো কোচ ছিলেন। কিন্তু আবারও বলছি তাঁর আচরণে অনেক সমস্যা ছিল। অনেকের সঙ্গে মতের মিল হতো না। আমি তাঁর কাছে অনেক কিছু শিখেছি ব্যাটার হিসেবে।’ কোন কোচ ইমরুলকে বুঝতে পারেননি ঠিকমতো? এই প্রশ্নের উত্তরে কারও নাম উল্লেখ করেননি ইমরুল। বাংলাদেশের এই বাঁহাতি ব্যাটার বলেন, ‘বোঝে না এরকম না আসলে, এটা বলা ভুল হবে। আমি কোচদের থেকে একটু দূরেই থাকতাম। এজন্যই থাকতাম যে বেশি কথা বলতাম না কোচদের সঙ্গে। কোচনির্ভর বেশি হতে চাইতাম না। সব সময় ভালো খেলার পরিকল্পনাই আমার ছিল। যদি কোচের থেকে ইতিবাচক কিছু নেওয়ার থাকে, তাহলে নেব। এটুকুই। এর বাইরে আর কিছু চিন্তা করতাম না।’
 
হাথুরু প্রথম মেয়াদে আসার পরই ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। যা এখন পর্যন্ত ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা পারফরম্যান্স। তবে সেই বিশ্বকাপে অফফর্মে থাকায় ইমরুলকে নিয়ে অনেক সমালোচনা হচ্ছিল। ৯ বছর আগের পুরোনো স্মৃতি মনে করতে গিয়ে হাথুরুর কথা সোমবার উল্লেখ করে ইমরুল বলেন, ’আমার মনে আছে ২০১৫ বিশ্বকাপে যখন খেলে এলাম, ভালো খেলিনি তখন। আসার পর আমাকে নিয়ে অনেক কথা হচ্ছিল, আমি দলে কেন থাকব। খুব চাপে ছিলাম আমি। চন্ডিকা হাথুরুসিংহে খেলার আগের (পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৫ খুলনা টেস্ট) দিনই কিছু কথা বলেছিলেন। প্রথম ইনিংসে ফিফটি করেছিলাম।’ লাল বলের ক্রিকেটে রবিবারই ইমরুল শেষ ইনিংস খেলে ফেলেছেন। খুলনার হয়ে দুই ইনিংসে ১৬ ও ১ রান করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে শেষই হয়ে গেল প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ক্যারিয়ার।
 
তিন দিনে শেষ হওয়া জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) ম্যাচে ঢাকা ৯ উইকেটে হারায় খুলনাকে। ম্যাচ শেষে ইমরুলকে কাঁধে তুলে ‘ল্যাপ অব অনার’ দিয়েছেন সতীর্থরা। বিসিবি বোর্ড পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম ফুলের তোড়া তুলে দেন ইমরুলের হাতে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা ইমরুল কায়েস দিয়েছিলেন কদিন আগেই। মিরপুরে শেষ হলো তাঁর ১৭ বছরের লাল বলের ক্রিকেট অধ্যায়। বাংলাদেশের বাঁহাতি ক্রিকেটারের মতে, সময় থাকতে অবসর নেওয়া উচিত। ২০২৪-২৫ মৌসুমের জাতীয় লিগে ইমরুল খেলেছেন খুলনার হয়ে। ঢাকার কাছে ৯ উইকেট হেরে যায় তাঁর দল খুলনা। লাল বলের ক্রিকেটে শেষ ম্যাচ খেলার পরে সংবাদ সম্মেলনে এলেও ইমরুল ছিলেন ভাবলেশহীন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন সাবলীলভাবে। বিদায় বেলায় বিসিবিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাংলাদেশের বাঁহাতি ব্যাটার বলেন, ‘এমন সুযোগের জন্য বিসিবিকে প্রথমে ধন্যবাদ দিচ্ছি। যখন আমি বিসিবিকে অবসরের সিদ্ধান্তের কথা জানাই, ব্যাপারটি তারা ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। অনেকেই বলেছেন, ভাই, আরও ২ বছর খেলতে পারতেন ইমরুল’।
 
ইমরুল বিদায় নিয়েছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে। তবে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল), বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এখনো খেলে যেতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের বাঁহাতি ব্যাটার বলেন, ‘আমার ফিটনেস বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, তাতে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টির জন্য নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারব এবং খেলতে পারব আরও কয়েক বছর। চার দিনের ম্যাচ খেলতে যে পরিমাণ শক্তি ও মনোবল থাকতে হয়, এখন আর নেই। আমার মনে হয়েছে, যদি নিজেকে তরুণদের সঙ্গে তুলনা করি এবং তাদের মতো ছন্দে না থাকতে পারি, তাহলে লজ্জা লাগে। কিন্তু সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে খেলা শেষ একদিনেই। এখানে পূর্ণ শক্তি দেওয়া সম্ভব।’ ২০০৮ থেকে শুরু করে ২০১৯ পর্যন্ত ৩৯ টেস্ট, ৭৮ ওয়ানডে ও ১৪ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। বাংলাদেশের জার্সিতে ১৩১ ম্যাচে মাশরাফি বিন মর্তুজা, ইমরুল কায়েস, সাকিব আল হাসানের অধীনে খেলতে হয়েছে ইমরুলকে। অবসরে কোচিং নিয়ে চিন্তা করছেন তিনি।
পথরেখা/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।