• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১১:৩৫

বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধি কি রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে দাঁড়াচ্ছে

কাদির কল্লোল : বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের লাগামহীন মূলবৃদ্ধির পরিস্থিতি এখন দেশটির রাজনীতিতে বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। বিরোধীদল বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই পরিস্থিতির জন্য সরকারকে দায়ী করছে। বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, ভোজ্য তেল, চাল-ডালসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির অস্বাভাবিক পরিস্থিতিকে সরকার স্বীকার করছে না এবং সে কারণে সংকট বাড়ছে।
 
কমিউনিস্ট পার্টিসহ বামপন্থী কয়েকটি দলের একটি জোট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে 'পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার' অভিযোগ তুলে ২৮শে মার্চ সারাদেশে অর্ধদিবস হরতাল ডেকেছে।
তবে সরকার ব্যর্থতার এ অভিযোগ মানতে রাজি নয়।
 
'সরকার সংকট স্বীকার করছে না'
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভোজ্যতেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেলেও রাজনৈতিক চিন্তা থেকে সরকার পরিস্থিতিটাকে স্বীকার করছে না। একই সাথে মি: আলমগীর অভিযোগ করেন, ব্যবসায়ীদের যারা বাজারে কৃত্রিম সংকট র্সষ্টি করছে, তাদের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। "বাজারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট তৎপরতা চালাচ্ছে। এই সিন্ডিকেটগুলোর সাথে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন জড়িত রয়েছে" বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি মনে করেন, জবাবদিহিতা না থাকায় পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। বিএনপির পাশাপাশি অন্যান্য রাজনৈতিক দলও এখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ইস্যুতে সোচ্চার হয়েছে। বামপন্থী দলগুলো বিক্ষোভ বা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। কমিউনিস্ট পার্টি সহ কয়েকটি বামপন্থী দলের একটি জোট হরতালের কর্মসূচিও নিয়েছে।
 
'মন্ত্রীদের উপহাস'
কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স অভিযোগ করেন, পরিস্থিতিটাকে গুরুত্ব না দিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের অনেকে এনিয়ে উপহাস করছেন। "মন্ত্রীদের কেউ বলছেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়লে কী হবে-মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। আবার কেউ বলছেন, মানুষ না খেয়ে নাই। এ ধরনের উপহাস মন্ত্রীরা করছেন" - বলেন রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি উল্লেখ করেন, তাদের বামপন্থী জোট দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কিছু কারণ চিহ্নিত করেছেন।
 
ব্যর্থতার অভিযোগ
প্রথমত: নিত্যপণ্যের চালসহ যে অংশ দেশে উৎপাদিত হয়, এগুলো চাতাল ব্যবসায়ী বা চালকল মালিক বা সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ে যায়। এরসাথে পরিবহনে চাঁদাবাজিসহ নানা অব্যবস্থাপনার কারণে পণ্য এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার সময় দাম বৃদ্ধি পায়। সরকার এটি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন কমিউনিস্ট পার্টির নেতা। দ্বিতীয় কারণ হিসাবে তিনি উল্লেখ করেন কিছু পণ্যের বাজারে এক শ্রেণির আমদানিকারকের নিয়ন্ত্রণকে। "আমদানি নির্ভর তেল চিনির রাজত্বের মধ্যে আমরা আছি। এক্ষেত্রে কয়েকজন খাদ্য বিধাতা আছেন। তারা যেভাবে বলেন, সেভাবেই দাম নিয়ন্ত্রণ হয়" বলেন রুহিন হোসেন প্রিন্স। বাজার পরিস্থিতির কারণে দরিদ্র, নিম্ন আয়ের এবং এমনকি মধ্যবিত্তরা যখন অসহায় অবস্থায় রয়েছেন, তখন ন্যায্যমূল্যে পণ্য সরবরাহের সরকারি পদক্ষেপ নিয়েও নানা অভিযোগ রয়েছে। সরকার টিসিবির মাধ্যমে ট্রাকে করে ভোজ্যতেলসহ যে সব পণ্য বিক্রি করছে, সেই ট্রাকগুলোকে ঘিরে অসহায় মানুষের লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, এসব ট্রাক থেকে পর্যাপ্ত পণ্য পাওয়া যাচ্ছে না।
 
বিশ্লেষকরা মনে করেন, পরিস্থিতি যে অবস্থায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, তাতে এই বাজার সংকট দেশের রাজনীতিতে একটি বড় ইস্যু হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবায়দা নাসরিন বলেন, "যেহেতু সাধারণ মানুষ ভূক্তভোগী এবং সমাজে দাপটে মধ্যবিত্তকেও আঘাত করছে। সেকারণে এটি বড় আকারে রাজনৈতিক ইস্যু হতে পারে। যদি সরকার এখনই নজর না দেয়" বলেন মিজ নাসরিন। এদিকে, সরকারের মন্ত্রীদেরও অনেকেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন। তাদের কেউ এমন অভিযোগও তুলেছেন যে, বিএনপি সমর্থক ব্যবসায়ীদের একটা চক্র নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। তবে সরকার এবং আওয়ামী লীগের অনেকে মনে করেন, সাধারণ মানুষের মদ্যে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, সে বিষয়টিও বিবেচনা করা উচিত।
 
যা বলা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে
সিনিয়র মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, তারা সমস্যাটিকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তিনি উল্লেখ করেন, "আন্তর্জাতিক বাজারের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায়, এবার কৃষিপণ্য সার এর জন্য ২৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তূকি সরকারকে দিতে হচ্ছে। এই ভর্তূকির পরিমাণ এতদিন সাত থেকে আট হাজার কোটি টাকা ছিল। সারে ভর্তূকির কারণে অনেক নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আছে।" তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সরকারের ব্যর্থতা বা সিন্ডিকেটের তৎপরতার যে সব অভিযোগ করেছে. মন্ত্রী ড: রাজ্জাক এসব অভিযোগ নাকচ করে দেন। 
তিনি বলেন, "কোন সিন্ডিকেট নেই।" তিনি মনে করেন, সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে অল্প সময়ের মধ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে। কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তাতে সন্দেহ প্রকাশ করছে।
দেশকণ্ঠ/রাসু
 

  মন্তব্য করুন
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।