দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : সমুদ্রে বায়ুশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাব্যতা মূল্যায়নে ইন্টারন্যাশনাল রিনিউয়েবল অ্যানার্জি অ্যাজেন্সির (আইআরইএনএ) সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। ২৫ মার্চ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আইআরইএনএ’র মহাপরিচালক ফ্রান্সেস্কো লা ক্যামেরার সঙ্গে বৈঠকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ সহযোগিতা চান। বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে আধুনিক ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তি সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা অপরিহার্য। সীমিত সম্পদ নিয়েই বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। প্রতি ইউনিট প্রায় ২২ সেন্ট খরচ করে বর্জ্য হতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সৌরশক্তির প্রাপ্যতা কম থাকায় তুলনামূলকভাবে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন খরচও বেশি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ৬ মিলিয়নেরও বেশি সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে গ্রিড নেটওয়ার্কের বাইরে ২০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা হয়েছে। অধিকন্তু ২৬টি মিনিগ্রিডের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রিডমানের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। ২০০০-এরও বেশি সৌর সেচ ব্যবস্থা এখন কাজ করছে, যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ডিজেল খরচ কমিয়েছে। এখন পর্যন্ত, ২৩১ মেগাওয়াট ক্ষমতার আটটি সোলার পার্ক থেকে গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। মন্ত্রী আরও বলেন, কৃষি বা অন্যান্য ব্যবহারের জন্য জমির প্রতিযোগিতামূলক চাহিদার কারণে বড় আকারে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা বাংলাদেশের জন্য বেশ দুষ্কর। ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ প্রযুক্তির সম্ভাবনা এবং ছাদে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো বিকল্প ব্যবস্থা অন্বেষণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার ছাদে সোলারকে উৎসাহিত করার জন্য নেট মিটারিং নির্দেশিকা চালু করেছে।
নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য সৌরশক্তির পাশাপাশি বায়ুশক্তি, বর্জ্য হতে বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির সম্ভাবনা অন্বেষণ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৪৫ মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৃহৎ আকারে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সমুদ্রের দিকে নজর দেওয়ার সময় এসেছে। আইআরইএনএ সমুদ্রে বায়ুশক্তির সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করতে সহযোগিতা করলে দৃশ্যমান ফল পাওয়া যাবে। তাছাড়া আইআরইএনএ প্রযুক্তি সহায়তা বাড়াতেও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে পারে।ইন্টারন্যাশনাল রিনিউয়েবল অ্যানার্জি অ্যাজেন্সির মহাপরিচালক ফ্রান্সেস্কো লা ক্যামেরা বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংক্রান্ত সহযোগিতা বাড়ানোর আশ্বাস দিয়ে বলেন, প্রকল্পভিত্তিক সহযোগিতা বাড়ানো হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির সিস্টেম অপ্টিমাইজেশন করতে এবং স্থানীয় জ্বালানির রূপান্তরে সহায়তা করা যেতে পারে। আলোচনাকালে অন্যান্যের মাঝে বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান, স্রেডার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, পিডিবির চেয়ারম্যান মো. মাহাবুবুর রহমান ও পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
দেশকন্ঠ/অআ