দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : ২১ বছর আগের কথা। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ফিরতি পর্বে শেষমুহূর্তের গোলে বাংলাদেশকে রুখে দিয়েছিল মঙ্গোলিয়া। সেই স্মৃতি এখনও তাদের মনে আছে। মনে থাকবে নাই বা কেন? বাংলাদেশের বিপক্ষেই যে নিজেদের বাছাইয়ের ইতিহাসে প্রথম পয়েন্ট অর্জন করেছিল মঙ্গোলিয়া। সিলেটে আজকের ফিফা প্রীতি ম্যাচকে সামনে রেখে সেই দলটি চাইছে ইতিবাচক খেলে নতুন করে স্মরণীয় কিছু করে দেখাতে। তবে বাংলাদেশ জয়ের খোঁজে নামলেও মঙ্গোলিয়া ড্র হলেই যেন খুশি! অন্তত দুই দলের সংবাদ সম্মেলনে দুই কোচের ভিন্ন মন্তব্যে সেরকম চিত্রই ফুটে উঠেছে। হাভিয়ের কাবরেরার অধীনে বাংলাদেশ প্রথম প্রীতি ম্যাচে ভালো করতে পারেনি। স্বাগতিক মালদ্বীপের কাছে দুই গোলে হেরেছে। সেখান থেকে দল সিলেটে ফিরে মঙ্গোলিয়া-বধের লক্ষ্যে নিজেদের শাণিত করে যাচ্ছে। কোচের পরিকল্পনার সঙ্গে কীভাবে খাপ খাইয়ে নেওয়া যায়- চলছে সেই চেষ্টাও। তবে এই ম্যাচ যেভাবেই হোক জিততে চাইছে বাংলাদেশ। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে কাবরেরার কথাতে মিললো তেমন ইঙ্গিত, ‘জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবো। মঙ্গোলিয়া প্রাণ প্রাচুর্য্যে ভরপুর দল। মালদ্বীপের মতো কৌশলী নয়, সম্ভবত সোজাসাপ্টা খেলে। তবে নিজেদের গেম প্ল্যান নিয়েই আমাদের মনোযোগী হতে হবে। আমরা কৌশলগুলো কীভাবে রপ্ত করবো, মাঠে প্রয়োগ করবো; সেদিকেই বেশি মনোযোগ দিতে হবে।’ আগের ম্যাচের মতো ৪-৪-২ এর বদলে এবার নতুন ছকে জামাল ভূঁইয়ারা খেলতে পারেন। পুরনো কৌশলে মালদ্বীপে জয় আসেনি। সিলেটে তাই কিছু একটা উপহার দিতে চাইছেন ৩৭ বছর বয়সী কোচ। তবে সব কিছু নির্ভর করছে কৌশলের প্রয়োগের ওপর। কোচের কথা, ‘জয়টা সবসময় গুরুত্বপূর্ণ। মালদ্বীপেও আমরা একই লক্ষ্য নিয়ে গিয়েছিলাম। অবশ্যই দেশের জন্য সবটুকু নিংড়ে দিতে চাই। তবে সবচেয়ে বড় ব্যাপার নিজেদের পরিকল্পনা এবং কৌশল কতটুকু রপ্ত করতে পারি এবং মাঠে প্রয়োগ করতে পারি- তার ওপরই নির্ভর করে ম্যাচের ফলাফল।’
গত জানুয়ারি থেকে মঙ্গোলিয়ার কোচ হয়ে এসেছেন ওতসুকা ইচিরো। এখনও পুরো দলের খেলোয়াড়দের সেভাবে পরখ করার সুযোগ পাননি। তারপরেও বাংলাদেশের বিপক্ষে ভালো ফল করতে চাইছেন। যাতে জুনে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের আগে ভালো প্রস্তুতি হয়। মঙ্গোলিয়ার জাপানি কোচ চাইছেন, ‘আমার জন্য ফলটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে লাওসের বিপক্ষে আমরা হেরে গেছি, আর আমি হারতে পছন্দ করি না। সবাই তো জিততে চায়। এই ম্যাচে ভিন্ন কিছু কৌশল পরীক্ষা করে দেখতে পারি। একইসঙ্গে নতুন কয়েকজন খেলোয়াড়ও খেলবে। জুনের ম্যাচগুলোর জন্য আমাদের ভালো প্রস্তুতি দরকার।’ মঙ্গোলিয়া নিজ দেশে কৃত্রিম টার্ফে খেলে থাকে। ফলে সিলেটে তাদের ঘাসের মাঠে খেলতে কিছুটা বেগ পেতে হতে পারে ধারণা মঙ্গোলিয়া কোচের, ‘মঙ্গোলিয়ায় আর্টিফিসিয়াল মাঠে খেলা হয়, আমাদের খেলোয়াড়রা ঘাসের মাঠে খেলে অভ্যস্ত নয়। তাই এখানে খেলাটা কঠিনই হবে। তবে আন্তর্জাতিক ম্যাচে কিন্তু ঘাসের মাঠেই খেলা হয়, তাই আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করবো।’ দীর্ঘদিন পর হওয়ায় প্রতিপক্ষকে জানতে ভিডিও বিশ্লেষণই ভরসা। ইচিরোও বাংলাদেশের আগের খেলার ভিডিও দেখছেন। সেগুলো দেখে ইতিবাচক ধারণা জন্মেছে তার, ‘আমার বন্ধু আমাকে বলেছে বাংলাদেশে অনেক ভালো ফুটবলার আছে। অধিনায়ক অনেক ভালো ফুটবলার। অনেক কঠিন হবে ম্যাচ। এছাড়া বাংলাদেশ দল অনেক দ্রুত আক্রমণে যায়। অধিনায়ক অনেক দূর থেকে পাস দেয় শুনেছি। গোলরক্ষকের নাম শুনেছি জিকো, অনেকটা ব্রাজিলিয়ান জিকোর মতো।’ এরপরই নিজের লক্ষ্যের কথা জানান ৫৭ বছর বয়সী কোচ, ‘আমি জিততেই চাই তবে ড্র হলে মন্দ হবে না। মাত্র দুই মাস আগে মঙ্গোলিয়ায় এসেছি। সুতরাং সবাই আমার জন্য নতুন। চেষ্টা করবো অভিজ্ঞ ফুটবলারদেরকে খেলাতে।’
দেশকন্ঠ/অআ