দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : বছরের শুরুতে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউ জিল্যান্ডকে বধ করে সাদা পোশাকে রঙিন দিনের আভাস দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দেশ বদলাতেই যেন মুদ্রার উলটো পিঠ দেখেছে মুমিনুল হকের দল। নিউ জিল্যান্ড বধের পর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তাদেরও হারানোর স্বপ্ন দেখেছিল বাংলাদেশ। তবে হয়েছে দুঃস্বপ্নের মতো। এর কারণ জানতে টেস্ট ক্রিকেটারদের ডেকেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ডারবানে টেস্টের শেষ দিনে গিয়ে হারে বাংলাদেশ। চার দিন লড়াইয়ে থাকলেও শেষ দিন প্রথম সেশনের প্রথম ঘণ্টাতেই শেষ হয়ে যায় লাল সবুজের দল। ৫৩ রানে অলআউট হয়ে হারতে হয় ২২০ রানে। পোর্ট এলিজাবেথে ফেরার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন মুমিনুল। কিন্তু শেষ টেস্টে সেই লড়াইটুকুই করতে পারেনি দল। দক্ষিণ আফ্রিকা ফলোঅনে ফেললে বাংলাদেশ হারত ইনিংস ব্যবধানেই। দুই ইনিংস মিলিয়ে মুমিনুলরা করতে পারেননি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসের রান। ফল ৩৩২ রানের বিশাল হার।
প্রশ্নবিদ্ধ এই পারফরম্যান্সের কারণ জানতে ২৩ এপ্রিল ক্রিকেট বোর্ডের আয়োজনে ইফতারের আগে ক্রিকেটারদের ডেকেছিলেন নাজমুল। কিন্তু যানজটের কারণে যথাসময়ে ক্রিকেটাররা এসে পৌঁছাতে পারেননি। তবে বৈঠক এখানেই শেষ নয়। দুই একদিনের মাঝেই টেস্ট ক্রিকেটারদের সঙ্গে বসবেন বোর্ড সভাপতি। ইফতার শেষে নাজমুল হাসান বলেন, ‘আজ সাড়ে চারটার দিকে একটা মিটিং ডেকেছিলাম। সব খেলোয়াড়দের ডেকেছিলাম। আমার ইচ্ছে ছিল, টেস্ট দলের সঙ্গে একটু বসব আলাদা করে। অপ্রত্যাশিতভাবে যানজটের কারণে ওরা ছয়টায়ও এসে পৌঁছাতে পারেনি। সেজন্য আমরা এটা পিছিয়ে দিয়েছি, আশা করছি দুয়েক দিনের মধ্যেই ওদের সঙ্গে বসব। ওদের থেকেও একটু শোনা দরকার, ওরা কি মনে করছে। কি কারণে হঠাৎ করে এরকম একটা পারফরম্যান্স হলো।’ সামনেই আছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। মুমিনুল হকদের আলাদা করে ডাকার পেছনে এটিও একটি অন্যতম কারণ। ঘরের মাঠে বাংলাদেশকেই এগিয়ে রাখছেন বোর্ড সভাপতি। তবে তাকে ভাবাচ্ছে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে স্পিনে মুড়ি-মুড়কির মতো উইকেট বিলিয়ে দেওয়া নিয়ে। বিসিবি সভাপতি মনে করছেন এখন স্পিনে নজর দেওয়া উচিৎ ক্রিকেটারদের।
পাপন বলেন, ‘এবারই আসলে প্রথম আমার কাছে মনে হয়েছে যে, আমাদের পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে যে দুর্বলতা ছিল সেটা এখন আর ওভাবে চোখে পড়ে না, বরং এখন মনে হচ্ছে যে স্পিনের দিকেই একটু বেশি নজর দিতে হবে।’ ডারবানে স্পিনে ভরাডুবির পর পোর্ট এলিজাবেথেও পুনরাবৃত্তি। সিমন হার্মার-কেশব মহারাজের স্পিন বিষে নীল হয়েছে বাংলাদেশ। দুই টেস্টের ৪০ উইকেটের মধ্যে ২৯ বারই এই দুই স্পিনারের কাছে ধরা খেয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কোন পথে হাঁটবে বিসিবি? স্পিন উইকেট, পেস উইকেট নাকি স্পোর্টিং উইকেট? বিসিবি সভাপতি প্রত্যাশা করেন স্পোর্টিং উইকেটই হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কৌশল কি হবে, সেটা তো এখন বলা সম্ভব নয়। আমাদের পেসে দুর্বলতা ছিল, আমাদের শক্তির জায়গা ছিল স্পিন, এখন আমরা দুর্বলতাটাকে কাটিয়ে ওঠতে পেরেছি। আমাদের পেস বোলাররা এই মুহূর্তে ভালো বল করছে। আমাদের বেশ কিছু অপশন আছে। তাই আমি মনে করি, এখানে স্পোর্টিং উইকেটই হবে।’ শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশ সফরে আসবে ৮ মে। ১৫ মে থেকে চট্টগ্রামে শুরু হবে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট হবে ২৩ মে থেকে ঢাকায়।
দেশকন্ঠ/অআ