দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : মুমিনুল হক সাফল্যের খোঁজে। যে করেই হোক ঘরের মাঠে একটি টেস্ট তার জেতা চাই। জেতেননি সেটা নয়। দুর্বল ‘জিম্বাবুয়ের’ সঙ্গে এখন নিয়মিতই জিতছে বাংলাদেশ। সেটা দেশের মাটিতেও, বাইরেও। তাদের বাইরে অন্য দলগুলোর বিপক্ষে দেশের মাটিতে সাফল্য নেই বললেই চলে। দেশের মাটিতে সবশেষ পাঁচ টেস্টের চারটিই তো হার! ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ হারের পর পাকিস্তানকে আতিথেয়তা দিয়েও ফল পাল্টাতে পারেননি মুমিনুল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট ড্র করে পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসে দল। এবার ঢাকায় অতিথিদের হারিয়ে শূন্য হাত ভরিয়ে তুলতে চায় বাংলাদেশ। সোমবার থেকে মিরপুর শের-ই-বাংলায় শুরু হচ্ছে দুই দলের দ্বিতীয় টেস্ট। ম্যাচে ফল পেতে দলগত পারফরম্যান্সে জোর দিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক, ‘মিরপুরে খেলুন বা দেশের বাইরে, সুযোগ তো সবসময়ই থাকে। সুযোগটা কীভাবে দেখছেন এটা হলো সবচেয়ে বড় জিনিস। কন্ডিশন বা সব কিছুর কথা চিন্তা করলে এটা একটা ভালো সুযোগ। সর্বোচ্চ সুযোগ না, তবে এটাও একটা সুযোগ। সুযোগ সবসময় থাকে, এটাও আমাদের জন্য আরেকটা সুযোগ সিরিজ জেতার। ঢাকা টেস্টেও যেন দলগতভাবে খেলতে পারি, তাহলে ফলাফল আমাদের পক্ষে আসবে।’
শের-ই-বাংলায় খুব কম টেস্টই অমীমাংসিত থেকেছে। টেস্টের ফল দুদিনে বের হওয়ারও রেকর্ড আছে। মিরপুরে শেষ টেস্ট ড্র হয়েছিল ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। যে টেস্টে প্রথম দিন ৮৮ ওভার খেলা হওয়ার পর পরের চারদিন বৃষ্টির কারণে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। এরপর ৮ টেস্টে বাংলাদেশ জিতেছে ৫টি। ৩টি হেরেছে শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। এসব পরিসংখ্যান অজানা নয় মুমিনুলেরও, ‘মিরপুরে ফলাফল ছাড়া ম্যাচ খুব কমই হয়। শেষ কবে ফলাফল আসেনি বলা কঠিন। সবসময় ফলাফল আসে।’ নিজেদের ছককাটা পরিকল্পনা মাঠে বাস্তবায়ন করলে ফল নিজেদের পক্ষে আসবে বলে বিশ্বাস মুমিনুলের, ‘টেস্ট জিততে বোলিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। ২০ উইকেট পেতে হবে। এজন্য বোলিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাথে ব্যাটিংও। অবশ্যই আমরা জয়ের পরিকল্পনা করছি, কোন জিনিস নিয়ে কাজ করলে জেতার সম্ভাবনা বেশি থাকবে সেসব নিয়েই কাজ করছি।’ চট্টগ্রামের পাটা উইকেট ছিল ব্যাটিংবান্ধব। ব্যাটসম্যানরা রান পেয়েছেন। তবে বোলাররাও খারাপ করেননি। নাঈম, সাকিব, তাইজুলরা বল হাতে ছিলেন দুর্দান্ত। ইনজুরিতে থাকায় চট্টগ্রামে ৬ উইকেট পাওয়া নাঈমকে ঢাকায় পাচ্ছে না বাংলাদেশ। তার জায়গায় খেলানো হতে পারে অফস্পিনার মোসাদ্দেককে। তার বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংটাও কাজে লাগাতে উদগ্রিব অনেকেই।
বুদ্ধিমত্তায় তাকে কাজে লাগানোর কথা বললেন অধিনায়ক, ‘ওর খেলার সম্ভাবনাই বেশি। স্পিন বিভাগ দেখুন- তাইজুল গত এক-দুই বছর ধরে খুব ভালো বল করছে। সাকিব ভাই তো গত ম্যাচে খুব ভালো করেছেন। মোসাদ্দেক খেললে ওর ভূমিকা হয়তো একটু ভিন্ন হবে। ওকে ভালোভাবে, বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যবহার করাটাও গুরুত্বপূর্ণ। সাকিব ভাই, তাইজুল যেহেতু আছে, ওদের নিয়ে আমি অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী।’ নাঈম হাসান বাদেও ঢাকায় আরেকটি পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। ইনজুরিতে পড়েছেন পেসার শরিফুল ইসলামও। তার জায়গায় ইবাদতকে খেলানোর ভাবনা টিম ম্যানেজমেন্টের। সেক্ষেত্রে সাকিব ও মোসাদ্দেকসহ তাইজুল, ইবাদত ও খালেদকে নিয়ে মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সফরের শেষ ম্যাচটি জিততে উদগ্রিব শ্রীলঙ্কাও। দুপুরে অনুশীলন শুরুর আগে দলের কোচ ক্রিস সিলভারউর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেছেন, ‘আমি মনে করিনা ম্যাচটা খুব সহজ হতে যাচ্ছে। দুই দলই জিততে মুখিয়ে। শেষ ম্যাচটি রোমাঞ্চকর ছিল। দুই দলের কাছে ম্যাচের ছন্দ ছিল। বাংলাদেশ এক সময় এগিয়ে গিয়েছিল। আমরা লড়াই করে ফিরে এসেছি। আবার বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এমন হয়েছে। এখন পর্যন্ত দুই দল সমান অবস্থানে আছে। এই ম্যাচে যারা জিতবে তারা এগিয়ে যাবে।’ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রীলঙ্কার চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার ৫ ম্যাচে দুটি করে জয়-পরাজয় ও এক ড্রয়ে পয়েন্ট ২৮। বাংলাদেশের ৭ ম্যাচে একটি করে জয়-ড্র, পাঁচ হারে পয়েন্ট ১৬। এই ম্যাচ জিতলে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ছুঁয়ে ফেলার সুযোগ আছে বাংলাদেশের। আর শ্রীলঙ্কা ১২ পয়েন্ট নিয়ে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার সুযোগ পাবে।
দেশকন্ঠ/অআ