দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : গত আগস্টে বার্সেলোনার সঙ্গে ২২ বছরের সম্পর্কের পাঠ চুকিয়ে দুই বছরের চুক্তিতে পিএসজিতে যোগ দেন মেসি। ক্লাব ফুটবলে কাতালান দলটি ছাড়া ক্যারিয়ারে আগে অন্য কোথাও না খেললেও খেলোয়াড় হিসেবে মেসি যে মানের, তাতে ধারণা করা হচ্ছিল নতুন ক্লাবেও অনায়াসে ডানা মেলবেন রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি অ’র জয়ী তারকা। লিওনেল মেসিকে পেয়ে আকাশছোঁয়া প্রত্যাশায় শুরুতেই পাহাড় ডিঙানোর স্বপ্ন দেখেছিল পিএসজি সমর্থকরা। আশার সেই প্রদীপ নিভতে সময় লাগেনি। প্যারিসের ক্লাবটিতে প্রথম মৌসুমে নিজের সেরার ধারেকাছেও ছিলেন না মেসি। তার ক্লাব সতীর্থ নেইমারের চোখে অবশ্য সমস্যাটা অন্য জায়গায়; আর্জেন্টাইন তারকার খেলার ধরন দলের কিছু খেলোয়াড় বুঝতে না পারার কারণেও তার জন্য কাজটা কঠিন হয়ে গেছে।
মৌসুমের বিভিন্ন সময়ে বিচ্ছিন্নভাবে মেসির ঝলক দেখা গেলেও তার খেলায় আগের সেই ধার দেখা যায়নি। আগের মৌসুমেই লা লিগায় সর্বোচ্চ গোলস্কোরার হওয়া ৩৪ বছর বয়সী ফুটবলার ২০২১-২২ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে জালের দেখা পান মাত্র ১১ বার। তারকাসমৃদ্ধ পিএসজির স্কোয়াডে মেসি যোগ দেওয়ার পরও দলটিকে মৌসুম শেষ করতে হয়েছে কেবল লিগ ওয়ানের শিরোপা নিয়েই। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ ষোলো থেকে দলটিকে বিদায় করে দেয় পরে চ্যাম্পিয়ন হওয়া রিয়াল মাদ্রিদ। আরও একবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে আগেভাগে ছিটকে যাওয়ায় এবং মৌসুমে দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্সে বিরক্ত হয়ে ওঠে পিএসজির সমর্থকরা। রিয়ালের বিপক্ষে ম্যাচের পর ক্লাবটির সমর্থকগোষ্ঠী ক্লাব সভাপতি ও ক্রীড়া পরিচালকের পদত্যাগের দাবি জানায়। পরের লিগ ওয়ানের ম্যাচে মেসি-নেইমারকে উদ্দেশ্য করে দুয়োও দেয় তারা।
সব মিলিয়ে পিএসজিতে প্রথম মৌসুমটা বেশ কঠিন গেছে মেসির জন্য। সম্প্রতি ক্যানাল প্লাসের সঙ্গে আলাপচারিতায় নেইমার বলেন, পিএসজিতে যোগ দেওয়ার পর অনেক কিছুই মেসির বিপক্ষে গেছে, সেগুলো প্রভাব ফেলেছে তার খেলায়। লিও অনেক বছর বার্সেলোনায় কাটিয়েছে এবং ক্লাব ও শহর পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন। তাছাড়া, ভাষাও আলাদা। বিভ্রান্ত হওয়ার মত অনেক বিষয় রয়েছে। এছাড়া আছে দলের খেলার ধরনের বিষয়টিও, এমন কিছু খেলোয়াড় আছে যারা মেসির খেলার ধরন বোঝে না। এগুলো সবই তার বিপক্ষে গেছে। লিও, কিলিয়ান (এমবাপে) ও আমি এমন খেলোয়াড়, যাদেরকে সবসময় পারফরম্যান্স, (গোল) সংখ্যা, শিরোপা এবং সবকিছুর ভিত্তিতে বিচার করা হয়। মেসি, নেইমারের সঙ্গে পিএসজির আক্রমণ ত্রয়ীর আরেক সদস্য কিলিয়ান এমবাপের লম্বা সময় ধরে গুঞ্জন ছিল ক্লাব ছাড়ার। আসছে গ্রীষ্মের দলবদলে রিয়ালে যোগ দেওয়ার অনেক কাছাকাছিও চলে গিয়েছিলেন তিনি। অনেক নাটকীয়তার পর শেষ পর্যন্ত অবশ্য প্যারিসেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বিশ্বকাপ জয়ী তারকা। নেইমার মনে করেন, এমবাপের পিএসজিতে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্তই সঠিক। কিলিয়ানের থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্তে আমি খুব খুশি হয়েছিলাম। আমি মনে করি, পিএসজি তার ক্যারিয়ারের জন্য সঠিক। আমি আশা করি, সে নিজের দেশে, নিজের শহরের দলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতবে।
দেশকন্ঠ/অআ