• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১৩:৪৭
মেজর শাহাবউদ্দিন চাকলাদার [অব.]

আমার দেখা হকির ১৮ বছর : দ্বিতীয় পর্ব

খেলা মানেই অনিশ্চিত ফলা ফল। আমাদের এই অনিশ্চয়তা খুব সীমাবদ্ধতার গণ্ডির মাঝে আবদ্ধ। দেশের শ্রেষ্ঠ তিনটি খেলা আমার সময় ছিল ফুটবল, হকি এবং তারপর ক্রিকেট। আমার সময় বলতে ১৯৬৮ সন থেকে ১৯৯০। পাশা উল্টেছে আজ ক্রিকেট, ফুটবল এবং তার বহুপরে হকির অবস্থান। এই ধূসর হয়ে যাওয়া হকির এক সময়ের অন্যতম একজন ছিলাম আমি। আমার হকি আত্মজীবনী ধারাবাহিকভাবে ছাপানোর এই দুঃসাহস দেখানোর জন্য অনলাইল পোটাল দেশকণ্ঠকে স্যালুট। 

 

মেজর শাহাবউদ্দিন চাকলাদারের [অব.] ধারাবাহিক লেখা : দ্বিতীয় পর্ব 

যে কোন নিস্তব্দ্ধ পরিবেশ মনের উপর ছাপ ফিলবেই। বাবা সাব রেজিস্টার, তার পান্খাপুলার ছিল আফসার, আফসারের পুরো পরিবার আমাদের বাসাতেই কাজ করত। বহু লোকজন আফসার কে সম্মান করত বাবার খাস আদমি বলে। রাতে বাসার নীচ তালাতে আফসার ঘুমাত। আমরা হরিন পালতাম , বাচ্চা হওয়াতে তখন তিনটা হরিন।ভেড়া, ছাগলও পালতাম। সাহেব গন্জের ঐ অন্চল থেকে সুন্দর বন বেশ কাছেই। কিছু জেলে নৌকার লোক জাল পেতে হরিন ধরে তারপর সেই হরিন নৌকার পাটাতনের নীচে লুকিয়ে লোকালয়ে বিক্রী করে। আব্বা এমন এক নৌকা থেকে দুটো হরিণ ক্রয় করে। তবে এরা মাটিতে নেমেও হাঁটার মতন শক্তি না থাকাতে পরে জবাই করে খেয়ে ফেলতে হলো। হরিণের ঘর মানে নীচের তালার সাইড দেয়ালে বাঘের নখের আচর দেখতাম। গর্জন তো শুনতামই এই বাঘগুলো ছোট, নদী সাতরিয়ে, বিশেষকরে শীতকালে যখন পানি কম তখন গ্রামের বাড়িতে হানা দিয়ে ছাগল ধরে নিয়ে যেত।

 
বহুবার স্কুল থেকে আসার পথে দলবল নিয়ে খাচায় বন্দী বাঘ দেখতে দিয়েছি। এরা খাচাটা দুভাগে বানায়। পিছনের অংশে ছাগলটা থাকে।সামনের অংশটা ফাঁকা, খাঁচার দরজা উঁচু করে মুখটাও খোলা। একটা দড়ি ঝুলানো। বাঘ খাজার চারিদিকে ঘুরে তারপর যেইনা মুখ দিয়ে ঢুকবে  তখনই দরজাতে লাগানো দড়িতে লেগে দরজা উপর থেকে ঝপ করে পরে  বাঘ-বন্দী।বাঘ আসলে প্রথমেই মুচি বাড়ির কুকুর গুলিকে মারত, খেতেও । এরা ডাক চিৎকার দিয়ে বাঘের যাতায়াতে ঝামেলা করত।
 
আমাদের পুকুর পারের চারিদিকেই বহু গাছ ছিল। একটা আমরা গাছ ছিল। গাছে পাতা নাই বল্লেই চলে আর দুটো ডালে তিনটা আমরা ঝুলছিল। বাবা আফসারকে গাছটির অবস্থা দেখিয়ে গোরা থেকেই কেটে ফেলতে বলল। আফসার এই কাটে তো অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পরে তবে কাটেনা। বাবা একদিন তার অফিসের এক ডিড রাইটার বাগচি ঘোষাল আর হেডক্লার্ক ঠাকুর সাহেবকে নিয়ে বাসার চার দিকেই হাটতে হাটতে গল্প করছিলেন, আমড়া গাছটা কাটা হয় নাই দেখে আফসারের উপর খুব রাগ করলেন। তখন সন্ধ্যা পার হয়ে গেছে। আফসার মাকে বল্ল আগামি কাল কেটে ফেলবে, তারপর বল্ল, ‘বুজি, না কাটলে হয়না’। মা এ বাসার অনেক রহস্য দেখেছে, একবার ছাদের এক কড়িকাঠ অল্পের জন্য আছরে আমার উপর পরে নাই, তবে বাবা এ সমস্ত নিয়ে একদম ই লাপাত্তা। বললেন পুরুরপারে এ মরা গাছ আমি যেন না দেখি। আফসার, গাছ কাটার পরদিন মার কাছে ছুটি নিয়ে চলে যায়, ওর যায়গায় মুক্তার ,ওর বড় ভাই এসে কাজ করে। মুক্তার বলে আফসার গাছ কেটে নীচে ওর ঘরে কেমন জানি লাগছিল ,ওরমনে হচ্ছিল নীচে অনেক লোক। এমনিতেই ভয় ভয় তার মধ্যে গাছ কাটা কুসংস্কার, আফসার তাই ছুটির নিল।
 
আমাদের পাঁচ ভাইর সাথে আফসারের ভাব বেশী। হাল্কা পাতলা তবে এলাকার শ্রেষ্ঠ হাডুডু খেলোয়াড় দের একজন। বিকালে আমাদের নিয়ে হাটতে বের হয়ে সাহেব গন্জ থেকে চলে আসতাম স্কুলের কাছে। সেখানে প্রতিদিন খেলা হতো হাডুডু আর আমরা দেখতাম আফসারের চমৎকার খেলা।ঐ সময় আমাদের কাছে আফসার ছিল হিরো। একটাই দালান, তার আঁশে পাশে অসংখ্য নারিকেল, সুপারি গাছ ভরা, জাম্বুরা, পেয়ারা গাছ আছে আবার একটা বিরাট গন্ধ রাজ গাছ। বড় ভাই হলো জাহাংগীর ভাই, তিনি এসব গাছের ফলফলাদি নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। যখন পারা হতো তখন আফসারই সব নাড়িকেল আর সুপারি গাছ বেয়ে উঠে পারত।
 
আশেপাশের যারা বাবার অফিসের সাথে যুক্ত তাদের সবাই পেত।আর অসংখ্য জাম্বুরা হওয়াতে দোতালা বারান্দাতে চলত জাম্বুরা দিয়ে ফুটবল খেলা। বাবা ফুটবল কিনে দিয়েছিল, শিপু ফুপুর কড়া শাসনে চারটার পর নীচে নেমে চলত ফুটবল খেলা। দোতালাতে আমরা জাম্বুরা দিয়ে ফুটবল খেলতাম। ছোট ভাই জলি আর মেজ ভাই সফি একদল আর আমি আর স্বপন ভাই একদলে। চারটা বাজলে শিপু ফুপু বলতেন যাও খেলতে, তবে ব্যথা লাগলে দুই দিন খেলা বন্ধ। (চলবে)
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।