• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১৫:৩১

চিনি বনাম লবণঃ কোনটা বেশী ক্ষতিকর?

• সালাহউদ্দীন আহমেদ আজাদ

আমরা সব সময়ই শুনে আসছি যে অতিরিক্ত চিনি এবং লবন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তাই যখন আমরা শুনি যে চিনি লবনের চেয়ে বেশী ক্ষতিকর তখন আমাদের কোনটা বিশ্বাস করা উচিৎ?
 
মার্কিন গবেষকদের দ্বারা অনলাইন জার্নাল ওপেন হার্টে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে আমাদের ব্লাড প্রেশার এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে চিনি লবণের চেয়েও খারাপ। আমাদের লবণের তুলনায় চিনি খাওয়ার পরিমাণ কমাতে বেশি মনোনিবেশ করার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি গবেষকরা দাবি করেছেন যে লবণের মাত্রা হ্রাস করা, কিছু পরিস্থিতিতে প্রকৃতপক্ষে ভাল হওয়ার চেয়ে বেশি ক্ষতিকর হতে পারে। তাদের গবেষণা অন্য বিজ্ঞানীদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে যারা মনে করেন যে হার্টের স্বাস্থ্য বাড়ানোর জন্য, লবণ এবং চিনি উভয়ের মাত্রাই নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। 
 
চিনি এবং লবণ কেন হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ?
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ আপনার হৃদরোগ থেকে মারা যাওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে (এমনকি আপনার ওজন অতিরিক্ত না হলেও) যেমন জ্যা্মার ইন্টারনাল মেডিসিন - এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন। এখানে দেখা গেছে অতিরিক্ত চিনি ধমনীর দেয়ালে প্রদাহ সৃষ্টি করে। রক্তনালীগুলির এই ধারাবাহিক দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। এদিকে, সঠিক মাত্রায় লবণ গ্রহণ আপনার শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য তবে খুব বেশি পরিমাণে লবণ আপনার শরীরে পানির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলস্বরূপ এটি আপনার রক্তচাপ বাড়িয়ে তোলে যা স্ট্রোক বা হৃদরোগের মত গুরুতর সমস্যার কারণ হতে পারে।
 
লবণ খাওয়া কিভাবে কমাবেন?
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এন এইচ এস)-এর গাইডলাইন অনুযায়ী প্রতিদি ৬ গ্রাম (এক চা চামচ) এর বেশী লবণ খাওয়া উচিৎ নয়। এখানে দেয়া হল লবণ খাওয়া কমানোর কিছু সহজ উপায়-
বাসায় রান্না করা খাবারে অতিরিক্ত লবণ না মিশিয়ে হার্টের জন্য ভাল কিছু ভেষজ বা মশলা ব্যবহার করে খাবারের ফ্লেভার বৃদ্ধি করুন। মাংস কেনার সময় ফ্রেশ মাংস কিনুন। প্রক্রিয়াজাত মাংসে লবণ বেশী থাকে এবং এটা ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ায়।
 
চিনি খাওয়া কিভাবে কমাবেন?
সাম্প্রতিক গাইডলাইন অনুযায়ী প্রতিদিন নারীদের ৫০ গ্রামের বেশী এবং পুরুষদের ৭০ গ্রামের বেশী চিনি খাওয়া উচিৎ নয়। এক গ্লাস ফলের জুসে ৭ চা চামচ পর্যন্ত চিনি থাকতে পারে। জুসের পরিবর্তে পানি পান করুন কিংবা লাইকোপিনে ভরপুর টমেটোর জুস পান করুন। চা বা কফি পানের সময় সাধারণতঃ যে পরিমাণ চিনি ব্যবহার করতেন তার অর্ধেক ব্যবহার করুন এবং পারলে লো ক্যালরি চিনি ব্যবহার করুন। সবচেয়ে ভাল হয় যদি চিনি ছাড়া পান করতে পারেন। মিষ্টি কিছু খাওয়ার ক্রেভিং হলে কেক, চকোলেট ইত্যাদির পরিবর্তে একটি মিষ্টি ফল খান। ফলে চিনি থাকলেও এর সাথে আছে অনেক ফাইবার, ফলে এই চিনি খুব ধীরে হজম হবে। এছাড়া ফলমূলে আছে অনেক ভিটামিন এবং মিনারেল, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।
 
হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য চিনি লবণের তুলনায় বেশী ক্ষতিকর হোক বা না হোক, আসল কথা হচ্ছে, এই দু’টোই বেশী পরিমাণে খেলে হার্টের জন্য খারাপ। আমরা সবাই চেষ্টা করলেই এসব খাওয়া কমাতে পারি এবং অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারি।
লেখক : খাদ্য, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক গবেষক 
 দেশকন্ঠ/রাসু

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।