দেশকণ্ঠ প্রতিবেদন : প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দুই ম্যাচের সিরিজ খেলেছে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে। ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে দারুণ একটা ইতিহাসও গড়ে ফেলেছে সাবিনা খাতুনের দল। মালয়েশিয়ার বিপক্ষে দুটি ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে প্রত্যাশার চাইতেও অনেক ভালো ফুটবল উপহার দিয়েছেন ড়োলাম রব্বানী ছোটনের শীষ্যরা। প্রথম ম্যাচে ৬-০ গোলের জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচের স্কোর গোলশূন্য ড্র হলেও, ৬১ ধাপ এগিয়ে থাকা মালয়েশিয়ার বিপক্ষে উপভোগ্য ফুটবল উপহার দিয়েছেন নারী ফুটবলাররা। দেশের মাটিতে প্রথম আর্ন্তজাতিক সিরিজ জয়ে নারী ফুটবল দলকে উপহারের আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান এবং ফিফা কাউন্সিল মেম্বার মাহফুজা আক্তার কিরণ। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মেয়েদের এই ঐতিহাসিক জয়ের পর কোনও বাড়তি পুরস্কার দেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কিরণ বলেন, ‘সত্যি বলতে এই বিষয়ে খেলা চলাকালীণ সময়ে আমরা আলোচনা করছিলাম। আমি মাননীয় ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গেও এই বিষয়ে কথা বলেছি। এছাড়া বাফুফের সভাপতি কাজি সালাউদ্দিনের সঙ্গেও আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করবো। আমাদের অবশ্যই ইচ্ছা আছে মেয়েদের পুরস্কৃতত করার।’
একই কথা জানিয়েছেন দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলি এমপি বলেন, ’আপনারা জানেন প্রধানমন্ত্রী কিছু দিন আগেই মেয়েদের ফুটবল দলকে সংর্বধনা দিয়েছেন। গনভবনে এখন সকলের যাতায়াতই করোনার কারণে সিমীত করা। তবে খেলাধুলার প্রতি তার ভালোবাসা থেকেই মেয়েদের সংর্বধনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা আলোচনা করবো। আশা করবো নারীদলকে পুরস্কৃত করা হবে।’ এদিকে ১০ জনের দেয়াল তুলে বাংলাদেশকে ঠেকাল মালয়েশিয়া। অনেকটা খেলার ধরন পাল্টাবে মালয়েশিয়া, ধারণাটা ভালোভাবেই মাথায় রেখে মাঠে নেমেছিলেন বাংলাদেশ নারী দলের ফুটবলাররা। তবে কৌশলটা কী আক্রমণাত্মক নাকি রক্ষণাত্মক তা নিয়েই ছিল প্রশ্ন। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে আরেকটি জয় দেখার আশায় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের খেলা দেখতে এসেছিলেন সাত হাজারের মতো দর্শক।
ম্যাচের শুরুর বাঁশি বাজতেই মালয়েশিয়ান মেয়েদের অতি রক্ষণাত্মক ফুটবল হতাশ করল দর্শকদের। হতাশ হতে হয়েছে ফুটবলারদেরও। সাবিনা খাতুনদের একের পর এক আক্রমণ আটকে গেল মালয়েশিয়ানদের মানব রক্ষণে। প্রথম ম্যাচে দেড় হালি গোলে বড় জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের ফল হলো হতাশার গোলশূন্য ড্র। চোট থাকার পরও সিরাত জাহান স্বপ্নাকে দলে রেখেই আগের ম্যাচের অপরিবর্তিত একাদশকেই ম্যাচে খেলিয়েছেন বাংলাদেশ কোচ। অপরদিকে আগের ম্যাচের চার ফুটবলারকে সাইডবেঞ্চে বসিয়ে দল সাজান মালয়েশিয়ান কোচ জ্যাকব জোসেফ। আগের ম্যাচে বড় হারের পর শুরু থেকেই সতর্ক হয়ে খেলেছে মালয়েশিয়া। ম্যাচের শুরু থেকে প্রায় পুরোটা সময় নিজেদের অর্ধে ১০ ফুটবলারকে নিজেদের অর্ধে রেখেছে দলটি। প্রতিপক্ষের খোলসবন্দী ফুটবলের সঙ্গে নিজেদের সুযোগ কাজে না লাগাতে পারাটাও হতাশ করবে সাবিনাদের। এছাড়া ১৭টি কর্নার পেয়েও জিততে না পারার আফসোস তো রয়েছেই। একের পর এক আক্রমণ হেনেও গোলের তালা খুলতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। ৯০ মিনিট এক তাল-লয়ে খেলে মালয়েশিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করতে করেছে লাল-সবুজ দল। আগের ম্যাচ ৬ গোলে জিতলেও রবিবার স্বাগতিকদের আটকে দিয়েছে অতিথিরা। তাই ১-০তে সিরিজ জিতলেও আফসোস রয়ে গেছে বাংলাদেশ শিবিরে। যা ভবিষ্যতের জন্য কাজে দেবে।
দেশকণ্ঠ/আসো