• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৭ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১৭:৩৫

অর্থ পাচার ও দায়

অনিরুদ্ধ ব্রতচারী
অর্থ পাচার সময়ের সেরা বিষয়, কেননা একটা পরিবার থেকে সম্পদ বা অর্থ কারো অগোচরে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ায় পাচার। তেমনি দেশের সম্পদ বা অর্থ দেশের প্রচলিত আইন কানুন বিধি বিধান অনুসরণ না করেই অগোচরে ফাঁকি দিয়ে অন্য কোন দেশে স্থানান্তর করা অর্থ পাচার। অর্থ পাচার দণ্ডনীয় অপরাধ। কেননা অর্থ নিজে নিজে পাচার হয় না কেউ বা কারা মিলে পাচার করে। অর্থ পাচার সংঘবদ্ধ কাজ। এই কেউ বা কারা আইন আদালতের সীমার মধ্যেই থাকে কিন্তু তাদের বা তাকে স্পর্শ করা যায় না, বা জানা গেলেও ততদিনে অনেক আয়ত্বের বাইরে চলে যায়। 
 
অর্থ পাচার হয় আয়ের ঘোষণা না দেওয়া বা ঘোষণা ছাড়াই অন্য দেশে পাঠিয়ে দেওয়া। অর্থ প্রেরণের যে আইনের আওতায় নিয়ম আছে সেগুলো ফলো করা হয় না। সে ক্ষেত্রে কেউ কেউ বিদেশে যাবার সময় লাগেজে করে নিয়ে যায়, কেউ গন্তব্য দেশে ডলার বা সেদেশের মুদ্রা  নেয় এবং নিজ দেশে অর্থ অর্থাৎ টাকা দিয়ে থাকে।  আমদানি ও রপ্তানি (পণ্য, সেবা,  কনসালটেন্সি) করার সময় অতিরিক্ত মূল্য শোধ বা রয়ালটি প্রদান বাবদ অর্থ প্রেরণ করে অর্থ পাচার করা হয়। কোন পণ্য বা সেবার মূল্য বা রয়াল্টি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি প্রেরণ করা হয় এবং প্রাপককে বলা হয় আমার অমুক ব্যাংক একাউন্টে বা অমুক ব্যাক্তির কাছে অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দিতে। ইদানিং শিক্ষা ও চিকিৎসা  বাবদ অর্থ প্রেরণ করা হয় যা প্রয়োজনের থেকে বেশি এমনকি  রুগী না হয়েও রুগী সাজে এবং পড়ালেখা শেষ হয় না। এটি মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে বৈধ ভাবে অর্থ সরিয়ে নেওয়া। যারা খুব বেশি বিদেশ ভ্রমণ করে তারাও অনুমোদনের অতিরিক্ত অর্থ সাথে নিয়ে যায়। আর হুন্ডি তো আছেই। তাহলে অর্থ পাচার হচ্ছে কি না, কেউ করছে কি না এসব ধরলেই বা নজরদারি বৃদ্ধি করলেই অর্থ পাচার মোটামুটি বন্ধ করা সম্ভব। 
 
যাদের আয়ের উৎস প্রকাশ করে না কিন্তু প্রচুর আয় করছে তারাও একটা পর্যায়ে গিয়ে বিদেশে অর্থ পাচার করে। এ জাতীয় আয় কর  ট্যাক্স দিয়ে বৈধ করার সুযোগ আছে কিন্তু পরবর্তী প্রতিক্রিয়া খুবই বিরক্তিকর, হয়রানিমূলক এবং নিজেকে কালো টাকার মালিক হিসেবে ঘোষণা দেবার প্রেস্টিজ কাজ করে। ফলে এই অর্থ হুন্ডি বা অন্য কোন উপায়ে বিদেশে পাচার করে। কোন কোন দেশে আছে সেভাবেই হোক অর্থ আসলে সেগুলো দেশেই বিনিয়োগ করতে হয় এবং এজন্য সেই ব্যক্তিকে কোন ঝামেলা সহ্য করতে হয় না। এসব রাষ্ট্র বা সরকার গোপন রাখে। কিন্তু যেখানে অকাট্য প্রমাণ আছে  দুর্নীতির বা অনিয়মের সেখানে শাস্তি ঠিকই দিচ্ছে। 
 
অর্থ পাচার সম্পর্কে বাংলাদেশে বাস্তবতার চেয়ে হুজুগ প্রচলিত বেশি। কোন কোন শর্ত পূরণ হলে অর্থ পাচার হবে সেগুলো কেউই খেয়াল করে বিবেচনা করে কথা বলে না। যার যার মত  করে বলে। আসলে পাচার হয়ে অন্য দেশে গেলে সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অধীনে থাকে না। আর এমন না যে এর টাকা ওর কাছে আছে সেখানে থেকে নিয়ে আসবে। যেখানে অর্থ যায় সেখানে প্রেরণকারী ব্যক্তির থেকে অর্থকে বেশি গুরুত্ব ও সুরক্ষা দেওয়া হয়। সে পেতে প্রমাণ করতে হবে যে অমুক দেশ তুমি এই অর্থ আমার দেশকে ফেরত দিতে বাধ্য। এই বাধ্যতা তৈরি হয় উভয় দেশের মধ্যে অর্থ পাচার সংক্রান্ত অপরাধের তথ্য, বিচার ও অভিযুক্ত বিনিময় চুক্তির আওতায়। এখন বাংলাদেশ চাইলেই কি সুবিধাভোগী সেই দেশ এ ধরনের চুক্তিতে আবদ্ধ হবে? সে দেশের সরকার ও জনগণ কি মেনে নিবে? যদি জনগণ না মেনে নেয় তাহলে সে দেশ কিন্তু এ ধরনের সম্পর্কে আবদ্ধ হবে না। অনেক দেশেই অর্থের উৎস জিজ্ঞেস করে না তারা শুধু অর্থকে প্রাধান্য দেয় সে অর্থ বিনিয়োগের নানান সুযোগ রেখেছে। ফলে একজন বিদেশি বিনিয়োগকারীকে তারা মান মর্যাদা ও সুবিধা দেয়। যদিও সে অর্থ পাচারকারী হিসেবে আরেক দেশে সন্দেহযুক্ত বা অভিযুক্ত বা অপরাধী। এ বিষয়গুলো তখন জটিল ও ব্যয়বহুল হয়। দেখা গেছে পাচারের এককোটি  টাকা ফেরত আনতে দশ কোটি টাকা খরচ হয়ে যায়। তাই সুযোগ যেহেতু আছে সেহেতু নিজ দেশেই অর্থ পাচারের উপায়গুলো মনিটর ও বন্ধ করার বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে যে সুযোগ নেয় এবং সুযোগ নিবে তাই বলে কি সুযোগ দেব?
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।