পথরেখা অনলাইন : আরও তিনটি নতুন ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা। গবেষকরা জানান, জিংক, প্রোটিন, মিনারেল এবং ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ নতুন জাতের এই ধানে পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে। নতুন জাত উদ্ভাবনের পাশাপাশি লবণ ও বন্যাসহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবনেও গবেষণা চালাচ্ছেন বিরির বিজ্ঞানীরা।
ধানের জাত উন্নয়নে নিয়মিত গবেষণা করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট। ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১০৫টি উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান পেয়েছে বাংলাদেশ।
এখানকার উদ্ভাবিত ধানের জাত থেকেই কৃষক বছরে ৩৮ দশমিক ০৭ মিলিয়ন টন চাল উৎপাদন করছে। ২০১৩ সালেই চাহিদা মিটিয়ে ৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন টন চাল উদ্বৃত্ত থাকে। আবহাওয়া, পরিবেশ ও অঞ্চলের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ধানের জাতগুলো উদ্ভাবন করা হয়। আগে নতুন জাত উদ্ভাবনে ১৪-১৬ বছর সময় লাগলেও এখন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে ৫ থেকে ৭ বছর কমে এসেছে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান ড. খন্দকার মোঃ ইফতেখারউদদৌলা বলেন, মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে আমরা তিনটি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছি। সেগুলো হলো বিরি-৯৭, বিরি-৯৮ এবং বিরি ধান-৯৯। এর মধ্যে দুটি বোরো মওসুমে লবণাক্ততা সহনশীল ধানের জাত এবং একটি হচ্ছে রোপা মওসুমের জাত।
হাইব্রিডে উৎপাদন বেশি তাই কৃষকের আগ্রহ বেশি। এ পর্যন্ত ৭টি হাইব্রিড জাতের ধান উৎপাদন করা হয়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির হাইব্রিড রাইস বিভাগের এই বিজ্ঞানী।
বিরির হাইব্রিড রাইস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোঃ জামিল হাসান বলেন, ৭টি হাইব্রিড ধানের জাত দিতে সক্ষম হয়েছে বিরি। সেই ৭টি ধানের মধ্যে ৪টি বোরো মওসুমের, ২টি আমন মওসুমের এবং ১টি আউস মওসুমের।
প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক জানান, শুধু নতুন জাত উদ্ভাবনই নয়, ধানের গুণগত মান, লবণাক্ত ও জলাবদ্ধতায় সহনশীল জাত ও পুষ্টিগুণের দিকেও নজর দেয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মোঃ শাহজাহান কবীর বলেন, এখন জীনসমৃদ্ধ জাত উদ্ভাবন করছি, আমরা আয়রনসমৃদ্ধ এবং ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ জাতও উদ্ভাবন করছি। খাদ্যের পাশাপাশি আমাদের পুষ্টির চাহিদাও নিশ্চিত করতে হবে। ২০৫০ সালে আমাদের যে জনসংখ্যা হবে তার খাদ্য চাহিদা আমরা কিভাবে পূরণ করতো তার একটা রূপরেখা ইতিমধ্যেই আমরা প্রণয়ন করেছি। সুস্থ্য জাতি গঠনে আরও পুষ্টিসমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবনে কাজ করছে ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট।
পথরেখা/এআর