দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে দেশের ২৪টি উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) আগামীকাল ২৮ জুলাই থেকে কার্যক্রম শুরু করছে। দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করে তাদের বিদেশে পাঠানোর উদ্দেশ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো উপজেলা পর্যায়ে এসব কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাস্তবায়ন করছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই ২৪টি টিটিসি উদ্বোধন করবেন বলে কথা রয়েছে। এর আগে, এসব উপজেলায় কোনও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিল না। যার কারণে বিদেশ গমনেচ্ছুদের আশেপাশের জেলায় যেতে হতো।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে চলমান দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের নির্দেশনা প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রথম পর্যায়ে গৃহীত ‘৪০টি উপজেলায় ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও চট্টগ্রামে ১টি ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর একনেকে অনুমোদন হয়। বর্তমানে প্রকল্পটি ১ হাজার ৬৬৭ কোটি ৭ লাখ ৯২ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ৪০টির মধ্যে ইতোমধ্যে নির্মিত ২৪টি উপজেলায় ২৪টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। অবশিষ্ট ১৬টির নির্মাণ কাজও শিগগিরই সম্পন্ন হবে।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির উপর গুত্বারোপ করা হয়েছে। দক্ষতা ভিত্তিক বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য ২০২৫ সালের মধ্যে প্রত্যেক উপজেলায় ১টি করে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের নির্দেশনা রয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অধীনে বর্তমানে চলমান ৭০টি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫৫টি ট্রেডের পাশাপাশি প্রাক-বহির্গমন ও গৃহকর্মী পেশাসহ প্রায় ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৮৬৫ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ে ৪০টি টিটিসি ও ১টি আইএমটি স্থাপিত হলে মোট ১০৪টি টিটিসি এবং ৭টি আইএমটিতে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে এবং মোট প্রশিক্ষণ প্রদানের সক্ষমতা বছরে ৯ লাখে উন্নীত হবে।
ফলশ্রুতিতে, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ১০ দশমিক ৭ এর আওতায় কম খরচে নিরাপদ অভিবাসন এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বৈদেশিক কর্মসংস্থানে দক্ষ কর্মী প্রেরণ ৪৩ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশে উন্নীত হবে। দক্ষ কর্মীরা বৈদেশিক কর্মসংস্থানে উচ্চ পদ মর্যাদায় অধিক বেতনে চাকুরির সুযোগ পাবেন; যা চলমান রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচনসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, বলেন এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, নতুন করে তৈরি এসব টিটিসিতে আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে। একসঙ্গে ৬৫ জন এখানে থেকে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। তবে দূর থেকে যারা আসবেন তারাই এখানে থাকার সুযোগ পাবেন।
২৪টি টিটিসি যেসব উপজেলায় হচ্ছে সেগুলো হলো- গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সেন্টেনিয়াল টিটিসি, রংপুরের পীরগঞ্জে ও গঙ্গাচড়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পাবনার সুজানগর, নরসিংদীর মনোহরদি, সিরাজগঞ্জ সদর ও কামারখন্দ, মুন্সিগঞ্জ সদর, দিনাজপুরের খানসামা, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা ও নগরকান্দায়, খুলনার দিঘলিয়া, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে, যশোরের কেশবপুরে, চট্টগ্রামের রাউজান ও সন্দ্বীপে, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট ও চৌদ্দগ্রামে, গাজীপুরের কাপাসিয়ায়, শেরপুর সদরে, টাঙ্গাইলের কালিহাতী ও নাগরপুর, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা এবং কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায়।
দেশকন্ঠ/রাসু