১৪ ফেব্রুয়ারি পোষাকি নাম ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’। আমরা এ দিবসকে প্রেম দিবস প্রেম দিবস বলে মাতোয়ারা হলেও; ইতিহাস অন্যকথা বলে। তৃতীয় শতকের কথা। রোমে একজন ‘সন্ত’ ছিল নাম ছিল ভ্যালেন্টাইন। ওই সময় রোমের শাসক ছিলেন সম্রাট দ্বিতীয় ক্লদিয়াস। তিনি যুদ্ধবাজ ছিলেন, সাম্রাজ্য বিস্তারসহ লক্ষ্যে প্রায়শই যুদ্বে লিপ্ত হতেন। বিবাহিত সৈনিক মানেই পিছুটান থাকবে তাই বিবাহিত সৈন্য ছিল কার না পছন্দ। তিনি নির্দেশ দিয়ে ছিলেন সৈন্যরা বিবাহ করতে পারবে না। সন্ত ভ্যালেল্টাইন এ আদেশের ঘোরতর বিরোধী ছিলেন, তিনি সৈন্যদের গোপনে বিয়ে দিতেন। সম্রাট ক্লদিয়াস এ সব কাম কাইজে চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ হয়ে ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ড দিলেন। মৃত্যুর দিন ধার্য্য হল ১৪ ফেব্রুয়ারি। মৃত্যুর আগে প্রেয়সীকে লেখা শেষ চিঠির শেষ লাইন- ‘ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন।
রোমে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি লুপারক্যালিয়া নামে একটি উৎসব হয়, গোটা ইতালি এ দিনটি বসন্তের আগমন আর প্রেম জাগানিয়া হিসাবে পালন করে। প্রেম দিবস ছেড়ে বাস্তবস্থা ভাবুন। দেশের নব্বই শতাংশ বিয়ে হয় সম্বন্ধ করে। এই সম্বন্ধ করা বিয়ে পার্টির ৮০ ভাগের ই প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং এরা সম্বন্ধ করে বিয়ের জীবনেও সুখি। প্রেমের সম্পর্কের বিয়েতে বিচ্ছেদ বেশী এ কারণেই যে দুইজনের ইগো সমানে সমান; নত হবার মানসিকতা কম। চারিদিকে চোখ বুলান দেখবেন আমি বাদে প্রায় সবারই বিয়ের আগে অন্যের সাথে প্রেম ছিল। প্রেম মানেই হারাই হারাই ভয়। আর এই ভয়টাই ভ্যালেন্টাইন দিবসকে অমরত্ব দিয়েছে।
মোর প্রিয়া হবে এসো রানি
দিব খোপায় তারার ফুল
কন্ঠে তোমার পরাব বালিকা
হংস সারির দোলান মালিকা
রং ধনু হতে লাল রং ছানি
আলতা পারব পায়
অমার সুরের সাত সুর দিয়া
তোমার বাসর রচিব গো প্রিয়া
তোমারে ঘিরিয়া গাহিবে আমার
কবিতার বুলবুল
মের প্রিয়া হবে এসো রানি
দিব খোপায় তারার ফুল।
অথবা তাজমহলের পাথর দেখেছ
দেখেছ কি তার প্রাণ-
অন্তরে তার মমতাজ রানী
বাহিরেতে শাহজাহান।
ভালবাসার কি চমৎকার উপমা।
প্রেম কি কবির কলমের আচরেই বেঁচে আছে? অষ্টম এডওয়ার্ড বিয়ে করে ছিলেন স্বামি পরিত্যক্ত লেডি সিন্সনকে। ১৯৩৬ সনের ২০ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের সিংহাসনে আরোহনের পর তাকে লেডি সিম্পনকে ডিভোর্স দিতে বলা হয়, ওই সময় ইংল্যান্ডের কুলীন সমাজ চাইত রাজা হবে সব ধরনের সমালোচনার উর্দ্ধে। অষ্টম এডওয়ার্ড ওই বছরের ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডের সিংহাসন ত্যাগ করে লেডি সিম্পনকে নিয়ে দেশ ত্যাগ করেন।
প্রেম জীবনকে দেয় উচ্ছলতা, মৃত্যুকে দেয় মহিমা আর প্রবঞ্চিতকে দেয় জ্বালা। যত যাই হোক ভ্যালেন্টাইন ডে যাতে প্রতিবছর রাঙিয়ে দিতে আসে।
পথরেখা/আসো