পথরেখা অনলাইন : দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে অনলাইন জুয়ার দৌরাত্ম্য। ছাত্র-যুব সমাজ থেকে শুরু করে অনেক বয়স্ক, রিটায়ার্ড পারসনরাও অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। পাচার হয়ে যাচ্ছে হাজার কোটি টাকা। একইসঙ্গে তরুণ প্রজন্ম পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়েছে। যার ফলে বাড়ছে ইন্টারনেটের অপব্যবহার করে নানা আসক্তি। ফল হিসেবে বাড়ছে বিষণ্নতা, মানসিক চাপ। উঠে যাচ্ছে সামাজিক মূল্যবোধ। অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে।
এমন অবস্থায় দেশ জুয়া ও পর্নোগ্রাফির সব ধরনের লিংক এবং সাইট বন্ধ করে কঠোরভাবে নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
সোমবার (৪ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ এই দাবি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বিটিআরসি ১২ হাজার ৩টি অনলাইন ব্যাটিং সাইট বন্ধ করেছিল। এমনকি পর্নোগ্রাফির বহু সংখ্যক সাইট বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু সামগ্রিকভাবে এসব কার্যক্রম বন্ধ করা যায়নি। এমনকি কার্যক্রমও চলমান রাখতে পারেননি নিয়ন্ত্রক কমিশন ও টেলিকমিউনিকেশন নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত এনটিএমসি। যার ফলে সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে এসব সমস্যা।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে কিশোর-কিশোরীদের ৬৩ শতাংশই ইন্টারনেটে আসক্ত। এর ফলে বিষণ্নতায় ভুগছে ৭৬ দশমিক ৬ শতাংশ। গবেষণাটিতে সবচাইতে ভয়াবহ তথ্য হচ্ছে কিশোর কিশোরীদের মধ্যে ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত।
তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব পরিসংখ্যানে লক্ষ্য করেছি যে, দেশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ২ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী জুয়ায় আসক্ত। পাড়া মহল্লায় একটি ডিভাইস ব্যবহার করে দুই বা ততোধিক মানুষ মিলে জুয়া খেলছেন। এসব জুয়া খেলায় প্রথমে কিছু টাকা এলেও পরে ৯৯ শতাংশ মানুষই প্রতারিত হচ্ছেন। ফায়ারফক্স মজিলা, ওপেরা মিনি, ব্যাটা, এমনকি ক্রোম ব্রাওজারেও অবাধে সার্চ দিলেই মিলছে পর্নোগ্রাফির লিংক। এর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেজ খুলে যৌন ব্যবসা বিজ্ঞাপন। যে বিজ্ঞাপনে স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহকের হোয়াটসঅ্যাপে সংযুক্ত হয়ে যাচ্ছে।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, যারা ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়ছেন, বিশেষ করে যাদের জুয়া এবং পর্নোগ্রাফিতে আসক্তি বেশি তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই জুয়া ও পর্নোগ্রাফির সাইট ও লিংক বন্ধ করা না গেলে আগামী প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে। সরকারকে এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
একইসঙ্গে গণমাধ্যম, অপারেটর, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, সরকার এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইন নিরাপত্তায় জনসচেতনতা তৈরি করতে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
পথরেখা/এআর