পথরেখা অনলাইন : বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ১৩তম আসর শুরু হতে আর মাত্র একদিন বাকি। ৫ অক্টোবর ময়দানী লড়াই শুরু হওয়ার একদিন আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। যে ম্যাচ দিয়ে শেষ হয়েছিল ২০১৯ বিশ্বকাপ, সেই ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়েই শুরু হবে এবারের বিশ্বকাপ। তবে ম্যাচ শুরুর এক দিন আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে পর্দা উন্মোচিত হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপের। ৪ অক্টোবরকে আগেই ‘ক্যাপ্টেনস ডে’ ঘোষণা করেছে আইসিসি। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ওই দিন ১০ দলের ১০ অধিনায়কের উপস্থিতিতে পর্দা উঠবে টুর্নামেন্টের। ৩ অক্টোবরই সব অধিনায়কের আহমেদাবাদে পৌঁছে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে ওই দিন বেশ কিছু প্রস্তুতি ম্যাচ থাকায় কেউ কেউ আহমেদাবাদে পরদিন উপস্থিত হবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে জাঁকজমক করে তুলতে যেমন থাকবেন একঝাঁক বলিউড তারকা, তেমনি থাকবে আতশবাজি আর লেজার শো। অনুষ্ঠানে ফুটিয়ে তোলা হবে ভারতীয় কৃষ্টি-কালচারও। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। বলিউডের কোন কোন তারকা থাকবেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে?
যার মধ্যে রণবীর সিংয়ের থাকার কথা জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে। পারফর্ম করার কথা তামান্না ভাটিয়ারও। সংগীত তারকা শ্রেয়া ঘোষাল, অরিজিৎ সিং, আশা ভোঁসলেও থাকবেন বলে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সূত্রের তথ্য দিয়ে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়ে কর্মযজ্ঞ ততই বাড়ছে। পারফরমারদের জন্য মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মহড়াও চলছে জোরেশোরে। যাঁরা ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড উদ্বোধনী ম্যাচের টিকিট কেটেছেন, তাঁরা সুযোগ পাবেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখার। আয়োজনকে বর্ণাঢ্য করে তুলতে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এবারের বিশ্বকাপ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কী থাকছে, এ নিয়ে আয়োজক দেশের বোর্ড বিসিসিআই এখনো চুপ। দর্শকদের চমকে দিতে এমন গোপনীয়তার চেষ্টা অবশ্য প্রায় সব আয়োজকেরাই করে থাকেন। তবে ভারতীয় গণমাধ্যম পিটিসি পাঞ্জাবের সূত্রে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইনসাইডস্পোর্ট। রণবীর বিশ্বকাপের অফিশিয়াল থিম সংয়েও অংশ নিয়েছিলেন। নাচ-গানের পাশাপাশি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হবে ভারতের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও ক্রিকেট উন্মাদনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ১০ দলের অধিনায়ক।
এদিকে নতুন যে নিয়মে হবে ওয়ানডের সুপার ওভার সেটি নিয়েও চলছে আলোচনা। রোমাঞ্চে ভরা একটা ফাইনাল ছিল ২০১৯-এর ক্রিকেট বিশ্বকাপে। ম্যাচ টাই হলে খেলা গড়ায় সুপার ওভারে। সেখানেও ফের টাই হয়। বাউন্ডারি সংখ্যার হিসেবে এগিয়ে থাকায় শিরোপার দখল নেয় ইংল্যান্ড। টানা দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলেও বিশ্বকাপ জিততে না পারার আক্ষেপে পুড়তে হয় নিউজিল্যান্ডকে। সেই ফাইনালের পর কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলেছিলেন, ‘শুধু আশা করি, এরকম মুহূর্ত আর কখনো না আসুক।’ উইলিয়ামসনের সে কথাই রাখা হয়েছে এবার। ২০২৩ বিশ্বকাপে যদি সুপার ওভারে কোনো ম্যাচ গড়ায় তাহলে আর আগের নিয়ম থাকছে না। টাই হলে আবারও সুপার ওভার হবে। সেটা টাই হলে আবার। এভাবেই চলবে, যতক্ষণ না ‘আসল’ ফলাফল বের হয়। যদি না আবহাওয়া বা অন্য কোনো পরিস্থিতির কারণে কিছু ব্যাহত হচ্ছে। ভারতের আহমেদাবাদে ইংল্যান্ড বনাম নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়েই পর্দা উঠতে যাচ্ছে ক্রিকেট বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের।
এদিকে অংশ নিয়েই বাংলাদেশ পাবে কোটি টাকা! দেড় মাসের কর্মযজ্ঞে আগামী ১৯ নভেম্বর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল ম্যাচ। এরই মধ্যে ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, এবারের শিরোপাজয়ীরা প্রাইজমানি হিসেবে কত টাকা করে পাবে? রানার্সআপ দলের জন্যই বা কি থাকছে? আইসিসি জানিয়েছে, পুরো টুর্নামেন্টের জন্য বাজেট ধরা হয়েছে মোট ১ কোটি মার্কিন ডলার। টাকার অংকে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১০৯ কোটি ৭২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। এবারের আসরে শিরোপাজয়ী দল পাবে ৪০ লাখ ইউএস ডলার বা ৪৩ কোটি ৮৯ লাখ ১৪ হাজার টাকা। শিরোপার একেবারে কাছাকাছি গিয়েও ট্রফি ছুঁতে না পারা রানার্সআপ দলকে দেওয়া হবে ২০ লাখ ইউএস ডলার বা ২১ কোটি ৯৪ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়া দুই দলের প্রত্যেকে পাবে ৮ লাখ ইউএস ডলার বা ৮ কোটি ৭৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা করে।
এবারের আসরে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়া দলগুলোও আইসিসির বণ্টিত অর্থের ভাগ পাবে। গ্রুপপর্ব থেকে বাদ পড়া ৬ দলের প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ থাকছে ১ লাখ ইউএস ডলার বা ১ কোটি ৯ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এছাড়া গ্রুপ পর্বের প্রত্যেক বিজয়ী দলের হাতে তুলে দেয়া হবে ৪০ হাজার ইউএস ডলার বা ৪৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকার প্রাইজ মানি। যা অংশগ্রহনকারী দলগুলোর মধ্যে হয়েছে সর্বোচ্চ।
পথরেখা/আসো