• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০০:৩২

শচীনকে ছাড়িয়ে আরও উচুঁতে বিরাট কোহলি

পথরেখা অনলাইন : জীবন্তু কিংবদন্তী হিসেবে ক্রিকেটে অনেক রেকর্ডের মালিক শচীন টেন্ডুলকার। তবে অনেক রেকর্ডই ভাঙ্গার মতো নয় আবার কোনটি ভেঙ্গে দিচ্ছেন বর্তমান প্রজন্মের খেলোয়াড়রা। তেমনি একজন বিরাট কোহলি। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাকিয়ে এক রেকর্ড গড়েছেন সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক। এদিন ৫০ তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেছেন ছাড়িয়ে যাওয়া শচীনকে নিয়ে। শচীন টেন্ডুলকার মাঠে না থাকলেও কোনো সমস্যা ছিল না বিরাট কোহলির। কুর্নিশ করার জন্য মাত্র কিছুদিন আগেই ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে উন্মোচিত শচীনের মূর্তি তো ছিলই। বাইশ গজের আড়াআড়ি নিশ্চল মূর্তির কাছে কোহলির ছুটে যাওয়ার প্রয়োজনই পড়ল না শেষ পর্যন্ত। বরং ছুটলেন উইকেটের সোজাসুজি, ওই বরাবর গ্যালারিতে যে ততক্ষণে হাততালিতে মুখর হয়ে গেছেন সচল শচীন। গ্লাভস-হেলমেট খুলে তাঁকে সম্মান জানাতে যে ভঙ্গিমা করলেন কোহলি, এর অনুবাদ এ রকমই হয়, ‘টেক আ বাউ’। মাত্রই ওয়ানডে সেঞ্চুরি সংখ্যায় শচীনকে ছাড়িয়ে গিয়েও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের অনন্য এক নিদর্শনই হয়ে থাকল কোহলির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। সেঞ্চুরির ফিফটি করে লাফালেন প্রথমে, এরপর হাঁটু গেড়ে বসেও পড়লেন। উঠে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়েও থাকলেন।
 
এরপর দূর থেকেই শচীনের পদতল খুঁজে নিতে চাওয়ার চেষ্টা দুই প্রজন্মের মধ্যে সুসম্পর্কের সংযোগ সেতু হয়েই যেন উপস্থাপিত হলো কালকের ওয়াংখেড়ে। আরব সাগরের ওপর দিয়ে মুম্বাইয়ের দুই প্রান্তকে সংযুক্ত করে যাতায়াতের ধকল অনেকটা কমিয়ে আনা ‘সিলিংক’ ব্রিজের মতোই যেন। না আছে কোনো বিচ্ছিন্নতা, না আছে কোনো বাধা। বর্তমান প্রজন্মের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে অবশ্য বিচ্ছিন্নতার নানা খবরও বেরোয়। বিশেষ করে দলের কিংবা নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়ের খারাপ সময়েই সেসব শোনা যায় বেশি। খ্যাতির ঝলমলে দুনিয়ায় জনপ্রিয়তা, বিত্ত-বৈভব ও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে কিংবা পিছিয়ে থাকা নিয়ে কোহলি আর রোহিত শর্মার মধ্যে চোরা এক লড়াই হয়তো আছেও। কিন্তু বাইরে এর প্রকাশ কখনোই ছিল না। না কোহলি নিজে অধিনায়ক থাকার সময়, না রোহিত নেতৃত্বে আসার পর। দুঃসময়ে বরং একে অন্যের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। একে অন্যের সামর্থ্যে পরম আস্থার কথাও সগৌরবে ঘোষণা করে গেছেন।
 
উদাহরণ খুঁজতে ঠিক দুই বছর পেছনে ফিরে গেলেই হয়। দুবাইতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই শাহীন শাহ আফ্রিদির শিকার হয়ে দলের বিপদ বাড়িয়ে যান রোহিত। সেই ম্যাচ হারার পর সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক কোহলিকে অদ্ভুত এক প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়, ‘প্রস্তুতি ম্যাচগুলোতে ঈশান কিষান খুব ভালো খেলেছেন। একাদশে রোহিতের চেয়ে তিনিই কি ভালো পছন্দ হতে পারতেন না?’ কোহলির জবাব তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে সব জল্পনা-কল্পনার অবসানই ঘটিয়েছিল, ‘আপনি রোহিত শর্মাকে বাদ দিতে বলছেন? তা-ও আবার টি-টোয়েন্টিতে? যে কিনা সর্বশেষ ম্যাচটিও আমাদের জিতিয়েছে। অবিশ্বাস্য! যদি বিতর্ক তৈরি করতে চান, আগেই বলবেন। তাহলে সেভাবেই উত্তর দেব!’ এ রকম পাল্টা ছক্কা হাঁকাতে হয়েছে অধিনায়ক রোহিতকেও। গত বছর জুলাইতে ইংল্যান্ডে ভারত টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলেও ব্যাট হাতে সময় খুব ভালো যাচ্ছিল না কোহলির। কোনো সংস্করণেই রানে না থাকা এই মহাতারকাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই ফুঁসে ওঠা রোহিত বলেছিলেন, ‘ফর্ম সবারই ভালো-খারাপ যায়। কিন্তু খেলোয়াড়ের কোয়ালিটি কখনো নষ্ট হয় না। এ রকম মন্তব্য করার সময় মাথায় রাখা দরকার যে খেলোয়াড়ের কোয়ালিটি কখনো খারাপ হয় না এবং সেই কোয়ালিটিকে সুযোগটি দিতে হয়।’ কোহলি নিজের উপর অর্পিত দায়িত্বটা ভালভাবেই পালন করছেন।
 
এত দিনে পুরোপুরি রোহিতের শহর মুম্বাইয়ের বাসিন্দা হয়ে যাওয়া কোহলি নিজের ‘কোয়ালিটি’র পুরোটা মেলে ধরে ব্যাটিংয়ে একের পর এক চূড়া ডিঙিয়ে চলেছেন। সেঞ্চুরি করে শচীনকে পেরিয়ে যাওয়ার আগেও তো হয়ে গেছে আরেকটি রেকর্ড। ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় শচীনের ৬৭৩ রান ছিল বিশ্বকাপের ইতিহাসে এক আসরে কোনো ব্যাটারের সর্বোচ্চ। ৮০ রানে পা রেখেই শচীনকে পেছনে ফেলা কোহলি প্রথম ব্যাটার হিসেবে পেরিয়ে গেছেন বিশ্বকাপে ৭০০ রানের সীমাও। ১০ ম্যাচেই তিন সেঞ্চুরিতে তাঁর নামের পাশে ৭১১ রান। খুব পিছিয়ে নেই রোহিতও। নয় নয় করেও ৫৫০ রান করা হয়ে গেছে তাঁর। এক যুগ পর ভারতকে আবার বিশ্বকাপ জেতানোর স্বপ্নে একাট্টাই মনে হচ্ছে এই প্রজন্মের দুই মহাতারকাকে। সম্ভাব্য সেই চূড়ান্ত সাফল্যে ‘মুম্বাই এক্সপ্রেস’ই যেন ছুটতে দেখছেন অনেকে। ভারতের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সুনন্দন লেলে এঁদের অন্যতম, ‘বিরাটকেও এখন দিব্যি মুম্বাইয়ের লোকাল বয় বলা যায়। ওর প্রায় সব কিছুই এখন এখানে।’ মুম্বাইয়ে এসে রোহিতের জনপ্রিয়তায়ও যেন ভাগ বসিয়েছেন কিংবা এগিয়ে গেছেন নতুন মুম্বাইকর। খেলা দেখতে আসা শ্বেতা এবং শ্রুতির কথাই ধরা যাক। মুম্বাইয়ের বাসিন্দা এই দুই বোনের একজনের জার্সির পেছনে লেখা ‘বিরাট’ তো আরেকজনের ‘রোহিত’। কিন্তু দুই তারকাকে নিয়ে কেউ লড়াইয়ে না গিয়ে বরং একমত হয়ে গেলেন যে।
পথরেখা/আসো 

  মন্তব্য করুন
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।